বাঘা প্রতিনিধি
রাজশাহীর বাঘায় পদ্মার পানি কমলেও এখন পর্যন্ত চরের ঘর-বাড়ি মেরামতের জন্য সরকারি কোন বরাদ্দ পায়নি চরের লোকজন। এতে করে খুব কষ্টে জীবন-যাপন করতে হচ্ছে তাদের। এ বছর ভয়াবহ বন্যায় চরবাসীদের যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছেন তারা। চরবাসীদের অভিযোগ, এবারের বন্যায় তারা যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন সরকারিভাবে কোন সহযোগিতা না পেলে কোনভাবেই এ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়।
ক্ষতিগ্রস্ত চৌমাদিয়া চরের খৈয়বর হোসেন বলেন, ‘বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়া ঘরবাড়ি নতুন করে মেরামত করছি। মেরামত করার পয়সা নেই। পরে ছয় ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি। বন্যায় বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে গেছে। কি করে ঘর মেরামত করব ? ’ এভাবে বলতে বলতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।
স্ত্রী সুফি বেগম বলেন, ‘স্বামীর অনেক বয়স হয়েছে। তারপর আবার অসুস্থ। দিন চালানোই মুসকিল হয়ে পড়েছে। ছয় সন্তান নিয়ে খুব কষ্টে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছি। সরকারের কাছ থেকে কোন সহযোগিতা পেলে আমাদের কষ্ট কিছুটা লাঘব হতো।
পলাশী ফতেপুর চরের বখতিয়ার খাঁ বলেন, ‘চকরাজাপুর ইউনিয়ন চরের মানুষের প্রধান পেশা কৃষি কাজ করা ও পাশাপাশি পদ্মায় মাছ ধরা। তাদের যা আয় হয় এই দিয়ে সংসার চরে। তারপর প্রতি বছর বন্যায় ঘড়-বাড়ি ভেঙ্গে যায়। প্রতি বছর ঘর-বাড়ি মেরামত করতে হয়। ভাঙ্গনের ফলে এক স্থান থেকে অন্য জায়গায় ঘর-বাড়ি তুলতে হয় অনেক সময়। এভাবেই চলে আমাদের জীবন। শুকনো মৌশুমে কৃষি কাজ, বর্ষায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়।’
ঘর-বাড়ি মেরামতের জন্য সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোন সহযোগিতা পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে চৌমাদিয়া চরের আঞ্জু মোল¬া বলেন, ‘এক মাস যাবত পানি বন্দী ছিলাম। এই সময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে কয়েকবার ত্রাণ দিয়েছেন। এ ছাড়া কোন সহযোগিতা পাইনি।’ এ সময় ঘর-বাড়ি মেরামতের জন্য তিনি সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, ‘ঘর-বাড়ি ভেঙ্গে যাওয়া পরিবারের তালিকা তৈরী করা হয়েছে। তালিকা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলে তাৎক্ষণিকভাবে বিতরণ করা হবে।’
স/বি