গ্রিন-টি পানে যত উপকার

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: 

চা বাংলাদেশে একটি জনপ্রিয় পানীয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম (Camellia sinensis)।চা আমরা প্রায় সবাই পান করে থাকি। মূলত ব্ল্যাক-টি এবং গ্রিন-টি এই দুই ধরনের চা আমরা বেশি পান

করে থাকি। আমরা অনেকেই গ্রিন-টি পান করি কিন্তু এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমাদের ধারণা খুবই কম।

গ্রিন-টির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সম্যক ধারণা দিতেই আমার এই লেখা। গ্রিন-টির প্রচলন সর্বপ্রথম শুরু হয় জাপানে। বর্তমানে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের পানীয়র তালিকায় গ্রিন-টি প্রথম।গ্রিন-টি মূলত তৈরি করা হয় ফার্মেনটেশন ছাড়া যাতে এর সবুজ রং অক্ষুণ্ণ থাকে। প্রথমে চা পাতাকে আংশিক শুকানো হয়,তারপর বাষ্পায়িত করা হয়,এরপর শুকিয়ে নেওয়া হয় এবং সবশেষে তাপ দিয়ে গ্রিন-টি তৈরি করা হয়।

গ্রিন-টির যদি ও কোনো খাদ্যমান নেই তবুও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গ্রিন-টির ভূমিকা অপরিসীম।গ্রিন-টি তে মূলত রয়েছে

ফ্লাভোনোয়েড জাতীয় উপাদান যেমন-ক্যাফেইন,থিয়োফাইলিন,থিয়ানিন,ক্যাটেকিন,থিয়ারুবিজিন,ইসেনসিয়াল

অয়েল এবং ফেনল জাতীয় যৌগ।

এছাড়াও এতে রয়েছে দ্রবণীয় উপাদান যেমন-অ্যামাইনো অ্যাসিড, ফ্লুরাইড, ভিটামিন বি১,বি২, ন্যাচারাল সুগার, পেকটিন, স্যাপোনিন এবং ভিটামিন সি।

অন্যদিকে অদ্রবণীয় উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে-ক্লোরোফিল, ক্যারোটিন, সেলুলোজ এবং ভিটামিন-ই।এই উপাদানগুলো মূলত পাতায় থাকে।এছাড়াও এতে পানির পরিমাণ শতকরা ৭৫-৮০ শতাংশ।

গ্রিন-টির উপকারী দিকসমূহ

ক্যানসার প্রতিরোধ

গ্রিন-টি ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে।এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ত্বক মসৃণ রাখতে এবং বয়োবৃদ্ধি প্রতিরোধে সহায়তা করে।

দুর্বলতা ও অবসন্নতা

গ্রিন-টিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফেইন রয়েছে যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে ও শরীরকে সতেজ রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া শরীরের দুর্বলতা বা অবসন্নতা দূর করে

অ্যাজমা,স্ট্রোক ও হৃদরোগ

অ্যাজমা,স্ট্রোক এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। গ্রিন-টিতে উপস্থিত ফ্লুরাইড ও পলিফেনল দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। দাঁতের ক্যাভিটি সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।পরিপাক ক্রিয়া ত্বরান্বিত করে।

দাঁতের এনামেল

অ্যান্টিভাইরাল এজেন্ট হিসেবে কাজ করে।দাঁতের এনামেলকে শক্তিশালী করে।মুখের প্লাক ও ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সহায়তা করে।

মুখের দুর্গন্ধ

স্মৃতিশক্তিবর্ধক হিসেবে কাজ করে।ফুড পয়জনিং প্রতিরোধ করে। মুখের দুর্গন্ধ দূর করে।অ্যালঝেইমার ও পারকিনসন রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

ইসোফ্যাগাল ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।এটি আর্থ্রাইটিস রোগের ঝুঁকি কমায়।অ্যালার্জির বিরুদ্ধে কাজ করে। মুখের ব্রন দূর করতে সহায়তা করে।দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

সতর্কতা

খালি পেটে কখনো চা পান করবেন না। গভীর রাত্রে চা পান করবেন না।টি-ব্যাগ পুনর্ব্যবহার করবেন না। এছাড়া একদম খাওয়ার পরপরই চা-পান করবেন না।প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। আসুন আমরা স্বাস্থ্য সচেতন হই।সুস্থ সবল জাতি গঠনে সহায়তা করি।সুখীসমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ি।

লেখক:মো.বিল্লাল হোসেন,বিএসসি (সম্মান),৪র্থ বর্ষ, ফলিত পুষ্টি ও খাদ্যপ্রযুক্তি বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়,বাংলাদেশ।