গণপিটুনি না দেওয়ায় ক্রসফায়ারের হুমকি!

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

লালমনিরহাটে পুলিশের এক সহকারী উপপরিদর্শকের (এএসআই) বিরুদ্ধে কয়েকজন যুবককে ‘ক্রসফায়ারে’ দেওয়ার হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী যুবকদের অভিযোগ, এক যুবককে গণপিটুনি দিতে অস্বীকার করায় তাঁদের এই হুমকি দেন লালমনিরহাট আদালতে কর্মরত এএসআই গোলাম মোস্তফা। গতকাল বৃহস্পতিবার আদিতমারী প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তাঁরা।

এর আগে গত বছর লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ থানায় কর্মরত থাকা অবস্থা এই দারোগাকে স্থানীয় লোকজন মদ্যপ অবস্থায় হাতেনাতে ধরে পিটুনিও দিয়েছিল। কয়েক মাস আগে তাঁকে আদিতমারী থানা থেকে লালমনিরহাট আদালতে বদলি করা হয়। কিছুদিন আগে তাঁকে লালমনিরহাটের গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) বদলি করা হয়। আগামীকাল শনিবার তাঁর ডিবিতে যোগদান করার কথা।

 

সংবাদ সম্মেলনে আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের আব্দুল হকসহ কয়েক যুবকের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আশরাফুজ্জামান রাজু। এতে অভিযোগ করা হয়, আদিতমারী সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন মাদকের বড় বড় চালান আসত ভারত থেকে। আদিতমারী থানায় থাকা অবস্থায় এই মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন এএসআই গোলাম মোস্তফা। এর মধ্য দিয়ে আদিতমারী উপজেলায় তিনি অনেক প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হন। সেই প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে পূর্বশত্রুতার জের ধরে গোলাম মোস্তফা একই উপজেলার মহিষাশহর এলাকার নিরন চন্দ্রের ছেলে শ্যামল চন্দ্রকে বাড়ি থেকে তুলে এনে কয়েক বোতল ফেনসিডিলসহ মাদকদ্রব্যের মামলায় চালান দিয়েছিলেন।

 

পরে শ্যামল জামিনে বের হয়ে এসে ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে সরকারের বিভিন্ন মহলে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এর প্রতিশোধ নিতে আব্দুল হকসহ কয়েকজন যুবককে এএসআই মোস্তফা সম্প্রতি নির্দেশ দেন, শ্যামলকে ধরে পিটুনি দিতে হবে। কিন্তু তাঁরা এতে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ওই এএসআই। আর এ জন্যই ওই যুবকদের ‘ক্রসফায়ারে’ দেওয়া হবে—ওই দারোগা এমন হুমকি দেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। অভিযোগকারী যুবক আব্দুল হক ও আশরাফুজ্জামান রাজু সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের ডিবি পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচয় দেন।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এএসআই গোলাম মোস্তফা অভিযোগ অস্বীকার করে মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আব্দুল হক মাদক ব্যবসায়ীদের হয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনেছেন।’ আগামীকাল শনিবার তিনি লালমনিরহাট ডিবিতে যোগদান করবেন বলেও জানিয়েছেন।

 

যোগাযোগ করা হলে লালমনিরহাট ডিবি পুলিশের ওসি কাওসার আলী খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মোস্তফা নামের কেউ এখন পর্যন্ত ডিবি পুলিশে যোগদান করেনি। তাই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।’

 

প্রসঙ্গত, কালীগঞ্জ থানায় কর্মরত থাকাকালে গত বছরের ১৬ জুলাই উপজেলার কাকিনা বাজারের একটি দোকানে মদ পান করে মাতলামি করার সময় স্থানীয়রা এএসআই মোস্তফাকে হাতেনাতে আটক করে গণধোলাই দিয়েছিল। পরে গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ শতাধিক মানুষের সামনে হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে ছাড়া পান তিনি।

 

সূত্র: কালের কন্ঠ