বুধবার , ৬ জুলাই ২০১৬ | ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খোলা না প্যাকেট দ্বিধায় সেমাই ক্রেতারা

Paris
জুলাই ৬, ২০১৬ ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ

শফিক আজম:

ঈদের আর মাত্র ২দিন।জামা,জুতা,জুয়েলারীর কেনাকাটা প্রায় শেষ। এখন অপেক্ষা ঈদের দিনের কেনাকাটার। আর তাই ঈদের দিনের কেনাকাটা করতে শেমাইয়ের দোকানে পাড়ি জমাচ্ছেন ক্রেতারা।এ নিয়ে দোকানীরা যেমন ব্যস্ত সময় পার করছেন বিক্রেতারা, তেমনি ভালো মানের সেমাই খুজতে বাজারমুখী হচ্ছেন ক্রেতারা। বিক্রেতাদের মতে এবারে বাজারের সেরা সেমাই সরবরাহ করা হয়েছে। আর ক্রেতারা বলছেন মান অনুযায়ী সেমাইয়ের দাম তুলনামূলক বেশি। মঙ্গলবার রাজশাহীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায় এসব তথ্য।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই নগরীর বিভিন্ন বাজারের বিপনী দোকান এবং মুদিখানার দোকানগুলোতে ছিল সেমাই কিনতে আসা ক্রেতাদের ভীড়।বিভিন্ন মুদিখানার খুচরা বিক্রেতাদের পাশাপাশি বিপনী ও কনফেকশনারীর দোকানগুলোতেও বিক্রি হচ্ছে সেমাই।রাজশাহীর বিভিন্ন বাজারে প্রতিকেজি লাচ্চাসেমাই বিক্রি হচ্ছে সর্বনিন্ম ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।আর খিল সেমাই বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৩৫ থেকে ১৫০টাকা। এছাড়াও বিভিন্ন কোম্পানীর প্যাকেটজাত সেমাই বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৮০ টাকা দরে। বিক্রি হচ্ছে আলাউদ্দিন স্পেশাল, বোম্বে স্পেশাল, নারকেলী লাচ্চা, বারোমসলী খিল সেমাইসহ নামধারীর বিভিন্ন সেমাই।

নগরীর সাহেব বাজার সংলগ্ন মিষ্টি বিপনী বেলিফুল এর প্রোপাইটর প্রদীপ কুমার ঘোষ বলেন, এই সেমাইগুলো আমাদের নিজস্ব কারখানায় তৈরী করা হয়েছে। তিন দিন হলো সেমাইয়ের আইটেম দোকানে সাজানো হয়েছে। গতকাল থেকে বেশ ভালো ক্রেতা সমাগম হচ্ছে।

বিশাল কন্ফেকশনারীর ম্যানেজার আবু বকর সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, বরাবরের মতো আমরা ক্রেতাদের ভালো মানের খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করি।ক্রেতাদের রুচি ও চাহিদানুযায়ী এবারে মান ও দাম দুটোই ঠিক রাখার চেষ্টা করেছি।

তবে ক্রেতাদের অভিযোগ মানের তুলনায় দাম বেশি চাচ্ছেন বিক্রেতারা।আবার নিন্মমানের সেমাই তৈরীর প্রতিক্রিয়া জানান অনেকে। তাদের মতে খোলা বাজারে নিজস্ব কারখানায় তৈরী বলে নিন্মমানের পন্য উচ্চ দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

রাজশাহীর সাহেব বাজারে সেমাই কিনতে এসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিষ্টার সাইফুল হোসেন সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, সেমাইয়ের মান যা তার থেকে দাম অনেকত বেশি। নিন্মমানের সেমাইগুলো ১৫০ টাকা ২৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এই দাম স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাড়াবে।

আরেক ক্রেতা আবুল হাসনাত বলেন, লোকাল কারখানা থেকে কোন পন্য নিতে গেলে আগে দোকানে লাইন ধরে দাড়াতে হতো কিন্তু এখন আর লাইন দেখা যায় না। কারন একটাই মান ভালো না। আগে ঘিয়ে ভাজা টাটকা লাচ্চা সেমাই পাওয়া যেত আর এখন ঘিয়ে ভাজা কোনটা কোনটা ডালডায় ভাজা বোঝা যায়না।

নিউ মার্কেটের আরেক ক্রেতা ওমর খৈয়াম বলেন, পত্র পত্রিকায়, টেলিভিশনে যে হারে রাজশাহীর সেমাই কারখানাগুলোর অবস্থা দেখাচ্ছে তাতে খোলা সেমাইগুলোর প্রতি চাহিদা হারিয়ে যাচ্ছে।তাই প্যাকেটজাত সেমাই কিনতে হচ্ছে।

শুধু সেমাই নয় ঈদের দিনে রকমারী খাবার রান্নার আয়োজনে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা।আর তাই কনফেকশনারীগুলোতে নারী ক্রেতাদের ভীড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

সাহেব বাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা মেরী ইয়াসমিন বলেন, ঈদের দুই-তিন দিন অনেক আত্মীয় স্বজন আর ছোটরা বেড়াতে আসবে। সবার জন্য স্পেশাল কিছু রান্না তো করতেই হয়।এই যেমন,বিভিন্ন ফল দিয়ে ফালুদা, কাষ্টার্ড, জর্দা পোলাও, বোরহানী ইত্যাদির উপকরণগুলো সাথে রাখতেই হয়। সে কারণে কেনা কাটা করছি।

ঈদে সেমাই আপ্যায়নে কাজে বিশেষভাবে ব্যবহৃত।গ্রামাঞ্চলে এই সেমাই মেয়ে জামাইয়ের বাড়িতে ঈদের উপহার সরুপ পাঠান শ্বাশুরীরা। কয়েকদিন বাদে ঈদের প্রস্তুতি নিতে বাজারে সেমাই কিনতে ভীড় জমাচ্ছেন নগরবাসি সহ দূর দুরান্তের মানুষ।আর তাই সেমাইয়ের দাম ও মান নিয়ে দ্বিধা থাকলেও ঈদকে সামনে রেখে সেমাই কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে উঠেছে নগরবাসি।

স/আর

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর