কে কাকে ত্রাণ দিল তা চোখেই দেখলাম না

করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের দিনমজুররা। নিয়মিত তাদের কাজ জুটছে না। এতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ঠাকুরগাঁও শহরের চৌরাস্তা, কালিবাড়ি, বাসস্ট্যান্ড চত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন ভোরে যারা শ্রম বিক্রির জন্য ডাকের প্রতীক্ষায় থাকেন, কাজ না পেয়ে তাদের প্রায় সবাইকে ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। অথচ দিনমজুরদের অধিকাংশেরই ঘাড়ে রয়েছে ক্ষুদ্র ঋণের বোঝা।

করোনাভাইরাসের কারণে সারাদেশ যখন সাধারণ ছুটির আওতায় ছিল তখন ত্রাণ বিতরণ করা হলেও কাজের সন্ধানে আসা শ্রমিকরা কিছুই পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। কেউ কেউ বলেন, আমাদের নাম-পরিচয় লিখে নিয়ে গেল, ভোটার আইডি কার্ডও নিয়ে গেল। অথচ চেয়ারম্যান-মেম্বাররা কিছুই দিল না।

thakurgaon-04.jpg

ঠাকুরগাঁওয়ে করোনাভাইরাসের কারণে কেউ কাজ করানোর কথা ভাবছেন না। নির্মাণ কাজও শূন্যের কোঠায়। রাজমিস্ত্রি ও মিস্ত্রির জোগালিদের অধিকাংশেরই দিন কাটছে কাজ ছাড়া। আর যারা দিনমজুরি করে পরিবারের সদস্যদের জন্য দুবেলা দুমুঠো ভাতের ব্যবস্থা করেন তাদের দুর্দশার অন্ত নেই।

গত দুদিন সকালে ঠাকুরগাঁও শহরের চৌরাস্তায় কাজের অপেক্ষায় বসে থাকা বেশ কিছু দিনমজুরের সঙ্গে কথা হয়। এদের মধ্যে খোচাবাড়ি এলাকার সিরাজুল ও আলী হোসেন বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে কাজ জুটছে না। দিনমজুরি করে পাওয়া টাকায় সংসার চলে। আগে দুই-একদিন কাজ না হলেও পাড়ার দোকানদার চাল-আটা বাকি দিত। এখন তাও দিচ্ছে না।

thakurgaon-04.jpg

সিরাজুল বলেন, একটি এনজিও থেকে ৬০ হাজার টাকার ঋণ নিয়ে গরু কিনেছিলাম। ঋণের কিস্তি দিতে পারছি না।

সাদেকুল ইসলাম নামে আরে দিনমজুর বলেন, দিনমজুরি করে সংসার চলে না, ভিন্ন কিছু করবো বলে এক লাখ টাকা ঋণ নিলাম। এরই মধ্যে দেশে এলো করোনা। কপাল খারাপ। করোনোকালে সংসার চালাতে গিয়ে দেখি ঋণের টাকা শেষ।

thakurgaon-04.jpg

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়য়োর এলাকার সাইদুর রহমান, আউলিয়াপুরে হামিদ ও শিবগঞ্জের আজিজুল হক অভিযোগ করে বলেন, শুনলাম সরকার গরিবদের মোবাইল ফোনে বিকাশ করে আড়াই হাজার টাকা দিচ্ছে। আমরা দিনমজুরি করি। দিন আনি দিন খাই। এরপরও কি মেম্বার-চেয়ারম্যানদের চোখে আমরা গরিব হলাম না? কে কাকে ত্রাণ দিল তা তো চোখেই দেখলাম না।

অভিযোগকারীদের মধ্যে কয়েকজন বলেন, ঈদের আগে অনেক কিছু দেবে বলে ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে গেল। নাম লিখে নিয়ে গেল। আশায় বুক বেঁধে বসে ছিলাম। কিছুই পেলাম না। এ সব কষ্টের কথা বলব কার কাছে।

 

সুত্রঃ জাগো নিউজ