অর্থ ও মানবপাচারের অভিযোগে মামলায় লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) শহীদ ইসলাম পাপুলের ৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন কুয়েতের একটি আদালত। সেই সঙ্গে আদালত তাকে জরিমানাও করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) এ রায় দেন আদালত।
মানবপাচার ও অর্থ পাচারের অভিযোগের মামলায় পাপুলকে কুয়েতের ফৌজদারি আদালতের বিচারক আব্দুল্লাহ আল ওসমান এ রায় দেন। বৃহস্পতিবার কুয়েতি গণমাধ্যম আল কাবাস এ তথ্য জানিয়েছে। কুয়েতের ফৌজদারি আদালতের বিচারক আব্দুল্লাহ আল ওসমান বাংলাদেশের সাংসদের পাশাপাশি দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তা মেজর জেনারেল মাজেন আল জারাহকেও চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১৯ লাখ কুয়েতি রিয়াল জরিমানা করেন। প্রভাবশালী ওই জেনারেল বাংলাদেশের সাংসদকে অনৈতিকভাবে ব্যবসা পরিচালনায় মদদ দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
পাপুলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকা এবং তাকে সহযোগিতা করার অভিযোগে কুয়েতের পার্লামেন্টের দুই সদস্য সাদাউন হামাদ ও সালাহ খুরশিদ, জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল শেখ মাজন আল-জারাহসহ মোট ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এরই মধ্যে মুচলেকা দিয়ে আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন কুয়েতের দুই সংসদ সদস্য।
আওয়ামী লীগের কুয়েত শাখার সাধারণ সম্পাদক আতাউল গণি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে এই বিষয়টি নিয়ে কোনো কিছুই জানেন না তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম। তিনি বলেন, আমি বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি।
মামলার তদন্তের সময় অভিযুক্ত হিসেবে ১৩ জনের নাম উঠে আসে। এর মধ্য থেকে চারজনকে তদন্তকালে বাদ দেয়া হয়।
সাধারণ শ্রমিক হিসেবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়া পাপুল ২০১৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার মালিকানাধীন মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানি পরিচ্ছন্নতাকর্মী নেয়ার কাজ করলেও কুয়েতে অন্যান্য ব্যবসার কাজও বাগিয়েছিলেন পাপুল।
এর আগে গালফ নিউজের খবরে বলা হয়েছিল, ‘জেনারেল ট্রেডিং অ্যান্ড কনট্রাক্টিং’ নামক লাইসেন্স ছিল পাপুলের। যার মাধ্যমে শিশুদের খেলনা থেকে শুরু করে অ্যানটিক কার্পেটের ব্যবসাও তিনি করতে পারেন। পাপুল ও তার কোম্পানির ব্যাংক হিসাব ইতোমধ্যে জব্দ করেছে কুয়েত কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশেও তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।
রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেকটাই অপরিচিত শহিদ ইসলাম পাপুল ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে তাক লাগিয়েছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সমর্থন আদায় করে।
মহাজোটের প্রার্থী সরে দাঁড়িয়েছিলেন পাপুলকে কেন্দ্রীয়ভাবে তার জোট সমর্থন দেয়ায়। নির্বাচনের পর আরেক চমক ছিল পাপুলের স্ত্রীর সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া।
এর পর দেশের রাজনীতির চমক এই সংসদ সদস্য আবারও আলোচনায় আসেন গত ফেব্রুয়ারিতে কুয়েতের একটি সংবাদপত্রে বাংলাদেশি মানবপাচারকারীদের নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশের পর।
সুত্রঃ কালের কণ্ঠ , যুগান্তর