কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি

কারা আলুর দাম বাড়াচ্ছে সরকার চাইলে তথ্য দেবো

বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেছেন, মুনাফালোভী একটি চক্র আলু মজুত করে দাম বৃদ্ধি করছে। এখানে কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের কোনো দায় নেই। তবে কারা সিন্ডিকেট করে আলুর দাম বাড়াচ্ছে সরকার চাইলে সেসব তথ্য আমরা দেবো।

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন সম্মেলন কক্ষে আলুর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

তিনি বলেন, কোল্ড স্টোরেজ শেড থেকে আলু বের হয় ১৮ টাকা কেজি দরে। পরে পরিবহন, আড়ত ও খুচরা বিক্রেতাদের খরচসহ সব মিলিয়ে এ আলু ভোক্তাপর্যায়ে সর্বোচ্চ ৩৬ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়।

বাবু বলেন, আমরা মনে করি মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে যারা আলু সংরক্ষণ করেছে তারা মনে করছে আলুর মজুত কম রয়েছে। সে জন্য তারা আলুর দাম বৃদ্ধি করে। ৯ সেপ্টেম্বর সদস্যদের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আলু গত বছরের তুলনায় কম সংরক্ষিত রয়েছে। তবে সদস্যদের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী যে আলু সংরক্ষিত আছে তা দ্বারা ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে পর্যাপ্ত আলু থাকবে।

কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, কারা আলুর দাম বৃদ্ধি করছে, কারা সিন্ডিকেট করে আলু মজুত করছে তাদের তথ্য আমরা বিভিন্ন সংস্থাকে দিয়েছি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। এখন আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি বলেন, হিমাগার মালিকদের যে একতরফা দোষারোপ করা হচ্ছে এটা সঠিক নয়, কাঙ্ক্ষিত নয় এবং তথ্যবহুল নয়। সরকার আলু মজুতের যে তথ্য দিচ্ছে তা সঠিক নয়। কারণ প্র্যাকটিক্যালি আমরা দেখছি কোল্ড স্টোরেজের ২০ শতাংশ খালি রয়েছে।

তিনি বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা আলু স্লো ছাড়ছে। এটা ওপেন মার্কেট মার্কেট দাম বাড়ছে। কেন দাম বাড়ছে সেটা সরকারের সংস্থাগুলোকে আমরা বলেছি। এ দাম কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে সেটা সরকারকে ভেবে চিনতে করতে হবে। মোবাইল কোর্ট বা হয়রানিমূলকভাবে দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বছর ৮৫ লাখ মেট্রিক টনের বেশি আলু উৎপন্ন হয়নি। কিন্তু কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে এক কোটি ১২ লাখ মেট্রিক টন উৎপন্ন হয়েছে। দেশে আলুর চাহিদা ৯০ লাখ মেট্রিক টন। তাহলে তো ২২ লাখ মেট্রিক টন আলু উদ্বৃত্ত থাকার কথা। অথচ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা জানিয়েছেন কোল্ড স্টোরেজের ২০ শতাংশ জায়গা ফাঁকা।

তিনি আরও বলেন, ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নতুন আলু আসবে। তখন আলু সরবরাহের কোনো ঘাটতি থাকবে না। আলুর উৎপাদন কম হওয়ায় কৃষকরা আলুর দাম বাড়িয়ে চলেছেন। গত বছর কৃষকের ঘরে আলু জুলাই মাসের প্রথম দিকেও ছিল। এবার আমাদের কোল্ড স্টোরেজের জায়গা ২০ শতাংশ খালি কেন? কৃষকের আলু কেন মে মাসে শেষ হয়ে গেলো?

মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, গত বছর কোল্ড স্টোরেজ থেকে খালাস হয়েছে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে, এ বছর মে মাসের ১৫ তারিখ থেকেই খালাস হওয়া শুরু হয়েছে। গত বছর ১৫-২০ লাখ মেট্রিক টন আলু সারপ্লাস ছিল। সাপ্লাই বেশি ছিল, যার জন্য আলুর দাম বাড়েনি। যদি এবার আলু বেশি উৎপাদিত হয় তাহলে আমাদের কোল্ড স্টোরেজ ফাঁকা কেন।