সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
ঢাকার কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় নিহতদের মধ্যে সেজাদ রউফ অর্ক নামে একজন রয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টধারী বাংলাদেশি।
সেজাদের বাবা ঢাকার বসুন্ধরা এলাকার বাসিন্দা তৌহিদ রউফ বুধবার মর্গে লাশ শনাক্তের জন্য যাওয়ার সময় তার সঙ্গে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের এক কর্মকর্তাও ছিলেন।
বাংলাদেশে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের একজনের যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব থাকার বিষয়টি প্রকাশের পর তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহতদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি আমেরিকান ছিলেন। এখন বিপরীত দিকেও একই ধরনের একজনকে পাওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
তৌহিদ রউফ বলেন, তার ছেলে সেজাদের যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব রয়েছে।
সেজাদ কবে ওই দেশটির নাগরিকত্ব পেয়েছেন, কত দিন সেখানে ছিলেন কিংবা কবে ফিরেছেন- সেসব বিষয়ে কিছুই বলতে চাননি তার বাবা।
সেজাদের বিষয়ে জানতে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে জানতে চাইলে কোনো নাগরিকের ব্যক্তিগত কোনো তথ্য জানাতে অপারগতা জানানো হয়।
সেজাদ গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর আর ফেরেননি জানিয়ে তার বাবা তৌহিদ রাজধানীর ভাটারা থানায় জিডি করেছিলেন।
ডিএমপির উপকমিশনার মাসুদুর রহমান বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, “তৌহিদ রউফ আমাদের কাছে এসে বলেছে-‘সেজাদ আমার ছেলে, আমরা ছবি দেখে ধারণা করছি’।”
ময়নাতদন্তের পর নয়টি লাশই ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে। সন্তানের লাশ শনাক্তে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয় তৌহিদকে।
ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, “উনি এসেছেন, ডেডবডি দেখেছেন। নাকে তিল এবং কানটা একটু বাঁকা তার ছেলের, এই লাশেরও তা রয়েছে। তবে সন্দেহ করেছেন যে (ছেলেকে) শুকনা মনে হচ্ছে।”
তৌহিদ সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা লাশ দেখেছি। চেহারায় পুরোপুরি মিল নেই। ডিএনএ টেস্টের প্রয়োজন রয়েছে।”
“তাকে (তৌহিদ) বলে দেওয়া হয়েছে, প্রয়োজনে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করতে হবে,” বলেন ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোহেল।
সেজাদ গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালানোর পর কমান্ডো অভিযানে নিহত নিবরাজ ইসলামের বন্ধু। ঢাকার নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার আগে তারা দুজনই মালয়েশিয়ার মোনাশ ইউনিভার্সিটিতে পড়তেন। শাহবাগ থানার একটি মামলায়ও দুজনই আসামি ছিলেন।
নিবরাজও ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিলেন বলে তার পরিবারের ভাষ্য। এরপর ১ জুলাই গুলশানের ক্যাফেতে নিহত হওয়ার পর জানা যায়, তিনি ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ঝিনাইদহের একটি মেসে ছিলেন।
ওই মেসে নিবরাজের আরেক সঙ্গী আবীর রহমানও ছিলেন, যিনি ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন শোলাকিয়ায় পুলিশের উপর হামলা চালানোর পর গুলিতে নিহত হন।
নিবরাজের মতো আবীরও নিখোঁজ ছিলেন কয়েক মাস ধরে। তাদের সঙ্গে ওই মেসে যে আটজন ছিলেন, তাদের মধ্যে সেজাদও ছিলেন বলে ধারণা গোয়েন্দাদের।
গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলায় ঘরছাড়া তরুণদের জড়িত থাকার তথ্য প্রকাশের পর র্যাব নিখোঁজ তরুণ-যুবকদের যে তালিকা দিয়েছে, তাতে ২৪ বছর বয়সী সেজাদের নাম রয়েছে।
সূত্র: বিডি নিউজ