কর্মস্থলে ফাঁকি দিয়ে স্ত্রীর বদলে রোগী দেখেন স্বামী!

নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডেন্টাল সার্জন প্রসেনজিৎ দাস কর্মস্থল ফাঁকি দিয়ে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্ত্রীর বদলে রোগী দেখেন। গতকাল সোমবার সকাল ১১টায় মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে এই দৃশ্য দেখা গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডেন্টাল সার্জন প্রসেনজিৎ দাস বহির্বিভাগে রোগী দেখছেন। তাঁর চিকিৎসাপত্র দিয়ে রোগীদের সরকারি ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। এ সময় মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডেন্টাল সার্জন মালিকা ভরদ্ধাজ কেয়াকে হাসপাতালে পাওয়া যায়নি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রসেনজিৎ দাস ২০১৯ সালের এপ্রিলে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগ দেন। তাঁর স্ত্রী মালিকা ভরদ্ধাজ কেয়া খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ছিলেন। স্বামী-স্ত্রীর সুবিধার্থে ২০২১ সালের আগস্টে প্রসেনজিৎ প্রেষণে খালিয়াজুরীতে যোগ দেন। এদিকে তাঁর স্ত্রীকে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করান। এর পর থেকেই প্রসেনজিৎ কর্মস্থলে না গিয়ে স্ত্রীর বদলে মদনে নিয়মিত রোগী দেখেন।

এ বিষয়ে প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘আমার মাদার পোস্টিং মদনে। ডাক্তার কম থাকায় কর্তৃপক্ষ আমাকে বলেছেন রোগী দেখার জন্য।’

মদন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. হাসানুল হোসেন বলেন, ‘প্রসেনজিতের মূল নিয়োগ মদনে। প্রেষণে খালিয়াজুরীতে আছেন। চিকিৎসক সংকট থাকায় তিনি রোগী দেখছেন।’

মালিকা ভরদ্ধাজ কেয়া বলেন, ‘আজ আমাকে বহির্বিভাগে ডিউটি দেওয়া হয়েছে। তাই আমার স্বামী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ডিউটি করছে। আমি বাসায় আছি।’ খালিয়াজুরীতে কে দায়িত্ব পালন করছেন? এ প্রশ্ন তিনি এড়িয়ে যান।

নেত্রকোনার সিভিল সার্জন সেলিম মিয়া বলেন, ‘প্রসেনজিৎ মদনে কর্মরত ও তাঁর স্ত্রী মালিকা খালিয়াজুরীতে কর্মরত। তাঁদের দুজনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রেষণে আগস্টে প্রসেনজিৎকে খালিয়াজুরী ও মালিকাকে মদনে বদলি করা হয়। প্রসেনজিৎ যদি মদনে রোগী দেখেন এবং তাঁর চিকিৎসাপত্রে সরকারি ওষুধ দেওয়া হয়, এটা অনিয়ম। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’