করোনা প্রকোপ: এমপি আছে কিনা ভুলেই গেছে নাচোলবাসী

নাচোল প্রতিনিধি:
দেশে চলছে করোনার মহামারি। বৈশ্বিক এই মহামারিটি শুরু হয় গত বছর ডিসেম্বরের শেষ দিকে, চীনের উহান শহরে। দেশে গত ৮ মার্চ করোনা ভাইরাস শনাক্তের কথা প্রথম সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়। এরপর দেশের জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে। করোনা ভাইরাসের প্রকোপ মোকাবেলায় সরকার নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করে। উপজেলা পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা করোনা মোকাবেলায় প্রায় তিন মাস ধরে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন। তারা এই অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলায় ইউনিয়ন মেম্বার থেকে শুরু করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা করোনা মোকাবেলায় কাজ করে গেলেও এই সংসদীয় আসনের (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২) সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আমিনুল ইসলামকে দেখা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষহসহ দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ৩টি সংসদীয় আসনের মধ্যে দুটি আসন পায় বিএনপি। এর মধ্যে নাচোল-গোমস্তাপুর-ভোলাহাট উপজেলা নিয়ে গঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে নির্বাচিত হন বিএনপি প্রার্থী আলহাজ আমিনুল ইসলাম।

দেশে করোনার প্রকোপ ৮ মার্চ শুরু হয়ে তিন মাস হতে চলল। কিন্তু এই সময়ে নাচোলবাসী এমপি আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম এলাকায় আসেননি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি অন্য দুটি অর্থাৎ গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট উপজেলাতেও যাননি। এই সময়ে বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীরা তার নামে কয়েক দফা ত্রাণ বিতরণ করলেও স্বশরীরে এমপি আমিনুলকে এলাকায় দেখা যায়নি। আর ত্রাণ বিতরনে রয়েছে ব্যাপক অনিয়ম।ওজনে কম দেয়া ও প্রকৃত কর্মহীন, হতদরিদ্রদের না দিয়ে দেয়া হয়েছে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম এই করোনার সময়ে এলাকায় না আসায় সাধারণ মানুষ বেশ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। কেননা এই দুর্দিনে এমপি হিসেবে তিনি পাশে থাকলে মানুষ খুশিই হতেন। এতে করে তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়ত। তারা আরো জানান, বিএনপি অনেক দিন ধরেই ক্ষমতার বাইরে। এরকম সময়ে এমপি আমিনুলের এলাকায় থাকাটা জরুরি ছিল। শিবগঞ্জে এমপি শিমুল ডাক্তার ও সদরে সংরক্ষিত আসনের এমপি জেসিকে ঠিকই দেখা গেছে মাঠে এবং সরকারী ও ব্যাক্তিগত উদ্যোগে তরা ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন বলে তারা উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. মাইনুল ইসলাম এর সাথে আজ শনিবার বিকেল ৪.৫০ মিনিটে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমিনুল ইসলাম যেহেতু এমপি, তিনি এলাকায় থাকলে লোকসমাগম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই তিনি এলাকায় আসেননি।

এমপির দেয়া ত্রান বিতরনে অনিয়মের অভিযোগ?এমন প্রশ্নের জবাবে সভাপতি বলেন, চালটা ফেস তবে আলুর ব্যাপারে অভিযোগ এসেছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে পৌর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেকুর রহমানের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এমপি না থাকলেও দলীয় ভাবে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন ১ম দফায় ৬৭ মেঃ টন চাল, ৭ হাজার পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে বিতরণ করা হয়েছে এবং পরে ১১ হাজার পরিবারের মাঝে সাড়ে ৭ কেজি করে চাল ও ৫ কেজি আলু বিতরণ কাজ অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, এমপি এলে লোকসমাগম বৃদ্ধিপাবে এজন্যই তিনি বাইরে আছেন বলে জানান।

তবে ত্রাণ বিতরনে সকল অনিয়মের বিষয়টি অশ্বীকার করে মোসাদ্দেকুর রহমান বলেন, মিল থেকে চাল ও কোল্ডস্টোরেজ থেকে সরাসরি আলু এনে বিতরণ করা হচ্ছে । তবে এমপি মাঠে না থাকার এ যুক্তি মানতে নারাজ দলের ত্যাগী নেতা কর্মীরা।

 

স/অ