করোনায় কার্যকরী দেশের তৈরি রেমডিসিভির: গবেষণা

অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ রিমডিসিভির প্রয়োগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী দ্রুত সেরে ওঠে বলে এ নিয়ে সদ্য প্রকাশিত একটি পূর্ণাঙ্গ গবেষণা ও ট্রায়াল প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ের রোগ বিশেষজ্ঞ জানিয়েছিলেন, কভিড-১৯ চিকিৎসায় এই ওষুধের ‘সুস্পষ্ট’ উপকার আছে। এর তিন সপ্তাহ পরই রেমডিসিভির নিয়ে নতুন আশার খবর আসলো।

করোনায় ওষুধটি নিয়ে ট্রায়াল ও গবেষণা চালায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এলার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ- এনআইএআইডি।

শুক্রবার এ নিয়ে পুরো গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় মেডিকেল বিষয়ক প্রভাবশালী সাময়িকী ‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন’-এ।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সেসব কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর শরীরে টানা ১০ দিন রেমডিসিভির প্রয়োগ করা হয়েছে অন্যদের তুলনায় তারা দ্রুত সেরে উঠেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের করোনা টাস্কফোর্সের অন্যতম সদস্য এনআইএআইডি’র পরিচালক অ্যান্থনি ফাউসিও গত ২৯ এপ্রিল দাবি করেছিলেন, প্রাথমিক গবেষণায় করোনা চিকিৎসায় রেমডিসিভিরের ‘সুস্পষ্ট’ উপকার পাওয়া গেছে। করোনাভাইরাস থেকে দ্রুত সেরে উঠতে এই ওষুধ ‘ইতিবাচক ও গুরুত্বপূর্ণ’ হতে পারে।

এনআইএআইডি’র মূল প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথ শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া যেসব রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন, যাদের অক্সিজেন সাপ্লিমেন্টের প্রয়োজন হয় তাদের ক্ষেত্রে রেমডিসিভির প্রয়োগে সবচেয়ে ‘বেশি উপকার পাওয়া গেছে’।

এই অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ দিয়ে করোনার কারণে সম্ভাব্য সব মৃত্যু ঠেকানো যাবে না বলেও জানিয়েছেন গবেষকেরা। তারা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস চিকিৎসায় কেবল একটি অ্যান্টিভাইরালই যথেষ্ট নয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রায়ালে দেখা গেছে, রেমডিসিভির প্রয়োগ করা রোগীদের মধ্যে ১৪ দিনে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৭.১ শতাংশের। এই সময়ে সাধারণ ওষুধে চিকিৎসা চলা রোগীদের মৃত্যুর হার ১১.৯ শতাংশ।

করোনাভাইরাসে নিরাময়ে কার্যকরী কোনো ওষুধ এখনো আবিষ্কার হয়নি। তবে উপসর্গ নিরাময়ে প্রচলিত কিছু ওষুধ ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন দেশে।

কভিড-১৯ রোগীর জরুরি প্রয়োজনে জাপান রেডসিভির প্রয়োগ শুরু করে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রও এটি প্রয়োগের অনুমতি দেয়। ওষুধটি ব্যবহার করার কথার ভাবছে ইউরোপের অনেক দেশ।

বাংলাদেশেও বেশ কিছু ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রেমডিসিভির উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার নিজেদের উৎপাদিত এই ওষুধ সরকারের জমা দিয়েছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।