করোনার মাঝেই পতেঙ্গায় ভিড়, মোটরবাইকের স্ট্যান্টবাজি!

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত বন্দরনগরী চট্টগ্রামের জীবনযাত্রা। করোনা ও উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিন গড়ে মৃত্যু হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ জনের। কিন্তু এমন ভয়াল পরিস্থিতিতেও এক শ্রেণির মানুষ করোনাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই চলেছেন।

patenga

বিধিনিষেধ না মেনে করোনার মাঝেই বিলাসবহুল প্রাইভেটকার, মার্সিডিজ বেঞ্জ, হোন্ডা ভিজেল, পাজেরো গাড়িতে সপরিবারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন নগরের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে। এক শ্রেণির বখাটে আবার মেতেছে ভয়াল বাইক স্ট্যান্টবাজিতে!

patenga

শুক্রবার (১২ জুন) বিকেলে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ও মেরিন ড্রাইভ সড়কে জেলা প্রশাসন, নগর পুলিশ ও টুরিস্ট পুলিশের যৌথ অভিযান চলাকালে এমন দৃশ্য দেখা যায়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম।

patenga

আভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশ সদস্যরা জানান, করোনা পরিস্থিতি শুরুর পরপরই নগর পুলিশ পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতসহ নগরের সকল বিনোদন কেন্দ্রে জনসমাগম নিষিদ্ধ করে। সাধারণ ছুটি শেষ হলেও সেই নির্দেশিকায় কোনো পরিবর্তন আসেনি। কিন্তু এমন বিপজ্জনক সময়েও মানুষ সে নিয়ম মানছে না। আজ শুক্রবার ছুটির দিন পেয়েই তারা ভিড় করেছিলেন সৈকতে, যেখানে সামাজিক দূরত্বের কোনো বালাই ছিল না।

patenga

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণের ভয়াবহ জটিল অবস্থার মধ্যেও পতেঙ্গা-হালিশহর মেরিন ড্রাইভ সড়কের সমুদ্র তীরে আজ প্রচুর মানুষের সমাগম হয়েছিল। স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত ঝটিকা অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে গিয়ে দেখা যায়, নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর-তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতী এমনকি শিশু ও বৃদ্ধ সকল বয়সী লোকজনের সমাগম। যেন দেশে করোনা বলে কিছু নেই।’

patenga

তিনি বলেন, ‘অনেক শিক্ষিত মানুষকেও করোনার মাঝেই বিলাসবহুল প্রাইভেট কার, মার্সিডিজ বেঞ্জ, হোন্ডা ভিজেল, পাজেরো গাড়ি নিয়ে সমুদ্র বিলাসে এসেছিল কয়েকটি পরিবার। সমুদ্র সৈকতে ক্রিকেট, ফুটবল-ও খেলছিল অসচেতন কিশোর-তরুণরা। পরিস্থিতি এমন ছিল প্রচুর লোক সমাগম থাকায় সময় ও পরিস্থিতি বিবেচনায় মোবাইল কোর্টে জরিমানা করাও সম্ভব হয়নি। পরে প্রায় ৩০ মিনিটের অভিযানে পতেঙ্গা সৈকত ও মেরিন ড্রাইভ সড়ক থেকে দর্শনার্থীদের সড়িয়ে দেওয়া হয়।’

patenga

‘মার্সিডিজ বেঞ্জ নিয়ে ঘুরতে আসা একটি পরিবারের লোকজনকে সমুদ্র সৈকত এলাকা ত্যাগ করতে বললে তারা পুলিশের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। আমরা মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ি ও মালিকের বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধান করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছি পুলিশকে।’ বলেন তৌহিদুল।

patenga

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল বলেন, ‘অভিযানের শুরুতে দেখা যায় ইপিজেড থানাধীন আকমল আলী রোড এলাকায় মেরিন ড্রাইভ সড়কে আনুমানিক ২৫-৩০টি মোটরবাইক দিয়ে স্ট্যান্টবাজি করছিলেন কিছু যুবক। ভ্রাম্যমাণ আদালত দেখেই তারা মোটরবাইক নিয়ে দ্রুতগতিতে বিপজ্জনকভাবে পালিয়ে যায়। এসব বাইকারদের ছবি ও ভিডিও আমাদের হাতে আছে। যাচাই-বাছাই করে এসব গাড়ি ও বাইকের লাইসেন্স বাতিল/জব্দ করার জন্য বিআরটিএ’র কাছে সুপারিশ করা হবে।’

জাগো নিউজ