করোনার অ্যান্টিবডি নিয়ে নবজাতকের জন্ম

সিঙ্গাপুরে গত মার্চে এক নারী করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হন। তখন তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ওই নারী সম্প্রতি সন্তান জন্ম দিয়েছেন। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, নবজাতকটি করোনার অ্যান্টিবডি নিয়েই পৃথিবীতে এসেছে। এই ঘটনা আবারও বিজ্ঞানীদের ধন্দে ফেলে দিয়েছে। গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীর থেকে সন্তানে করোনার সংক্রমণ ছড়ায় কি না, তা নিয়ে আবারও তাঁদের ভাবতে হচ্ছে।

এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, গর্ভাবস্থা অথবা সন্তান প্রসবকালে করোনায় আক্রান্ত নারীর মাধ্যমে ভাইরাসটি তাঁর ভ্রূণে বা সন্তানের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে কি না, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এখন পর্যন্ত মাতৃগর্ভে শিশুর আশপাশে থাকা তরল পদার্থে (অ্যামনিওটিক ফ্লুইড) অথবা মায়ের বুকের দুধের নমুনায় সক্রিয় ভাইরাস খুঁজে পাওয়া যায়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের শিশু-কিশোরদের স্বাস্থ্যবিষয়ক বিজ্ঞান সাময়িকী জেএএমএ পেডিয়াট্রিকস–এ গত অক্টোবরে একটি নিবন্ধন প্রকাশিত হয়। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকেরা বলেন, আক্রান্ত মায়ের শরীর থেকে নবজাতকের মধ্যে করোনার ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা খুবই বিরল।

সিঙ্গাপুরে করোনার অ্যান্টিবডি নিয়ে নবজাতকের জন্মের খবরটি গতকাল রোববার প্রকাশ করেছে স্থানীয় পত্রিকা স্ট্রেইটস টাইমস। শিশুটির মা সেলিন এনজি–চানের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি মাসে একটি হাসপাতালে শিশুটির জন্ম হয়। তার কোভিড-১৯ সংক্রমণের কোনো উপসর্গ নেই। তবে তার শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। সেলিন এনজি–চান বলেন, ‘আমার চিকিৎসকের ধারণা, গর্ভাবস্থায় আমার কোডিভ–১৯ অ্যান্টিবডি তার শরীরে স্থানান্তরিত হয়েছে।’

স্ট্রেইটস টাইমস–এর খবরে আরও বলা হয়েছে, করোনা পজিটিভ ধরা পড়ার পর সেলিন এনজি–চানের শরীরে মৃদু উপসর্গ দেখা দেয়। আড়াই সপ্তাহ সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি ছাড়া পান। চলতি মাসে সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে (এনইউএইচ) এনজি–চান সন্তান প্রসব করেন। নবজাতকের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়ার বিষয়ে জানতে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং এনজি–চানের সঙ্গে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

করোনা নিয়ন্ত্রণে বিশ্বে যে দেশগুলো সফল, সেগুলোর মধ্যে সিঙ্গাপুর একটি। দেশটিতে এ পর্যন্ত ৫৮ হাজারের কিছু বেশি মানুষের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৯ জন রোগীর।

সূত্র: প্রথম আলো