ওয়ান ইলেভেনের উপকারভোগীরাও সক্রিয় : তথ্যমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির সঙ্গে ওয়ান ইলেভেনের উপকারভোগীরাও সক্রিয় হয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘বিএনপির দুঃশাসন আর দুর্নীতির কারণে ওয়ান ইলেভেনে দুই বছরের জরুরি সরকার এসেছিল। তখন ড. কামাল হোসেন ওই সরকারকে সার্টিফিকেট দেন, যতদিন ইচ্ছা ক্ষমতায় থাকুন। সুজনও তখন তাদের সঙ্গে ছিলো।

ওয়ান ইলেভেনের উপকারভোগীরা আবারও সরব হয়েছে। তারা অনলাইনে সভা করছে, জাতিকে নসিয়ত করছে, ষড়যন্ত্র করছে। বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। এটি অশুভ লক্ষণ। ’

আজ রবিবার নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপির সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপির পরিচালনায় সম্মেলনে ভার্চুয়ালি দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘুমন্ত জাতিকে জাগিয়ে তোলেন, হ্যামিলনের বংশীবাদকের মত এক সাগর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা উপহার দেন। যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনঃগঠনে কাজ শুরু করেন। ভারতে আশ্রয় নেওয়া এক কোটি শরণার্থীকে ফিরিয়ে আনেন, দেশে বাস্তুচ্যুত আরও এক কোটি মানুষকে পুনর্বাসিত করেন। ১৯৭৪-৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর সময়ে দেশের রেকর্ড পরিমাণ ৯.৫৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার রক্ত পরাভব জানে না, আপোষ জানে না। অসংখ্যবার হত্যা চেষ্টা করা হলেও দৃপ্ত পদভারে তিনি দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। দেশের তিন কোটি মানুষ সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচীর আওতায় আছেন। সকল গৃহহীন মানুষকে গৃহ নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার, রাস্তার ভিক্ষুককে পাকাঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশে ইসলাম থাকবে না বলে গুজব ছড়ানো হলেও এই সরকার ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রত্যেক জেলায়, উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণ করে দিয়েছে। দেশে দুই লাখ মসজিদ ভিত্তিক মক্তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে মাসে ৫ হাজার ২০০ টাকা বেতন দিচ্ছে সরকার। এই সরকার পদ্মা সেতু তৈরি করতে পারবে না বলে বিএনপি গুজব ছড়ালেও পদ্মা সেতু এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। বিএনপি’র রাজনীতি বিভ্রান্তি, অপপ্রচার আর গুজব রটানোর রাজনীতি।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশের মানুষ করোনাকালীন সময়ে সুরক্ষা পেয়েছেন। সময়মত টিকা আমদানী করে দেশের ১৭ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি আরও এক কোটি ব্যক্তিকে টিকা দেওয়া হবে। অথচ মির্জা ফখরুলরা শুরুতে এই টিকা গ্রহণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জাতিসংঘসহ বিশ্বের সকল দেশ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি সফলভাবে মোকাবেলা করায় প্রশংসা করেছে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে গঠিত সার্চ কমিটির মধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আওয়ামী লীগ খুঁজে পান। অথচ তাদের মধ্যে চারজন সাংবিধানিক পদধারী নিরপেক্ষ ব্যক্তি। মির্জা ফখরুলরা সারা দেশে আওয়ামী লীগ দেখতে পান। তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের উচিৎ- মির্জা ফখরুলের ঘাড়ে সওয়ার হওয়া জ্বিন তাড়ানোর ব্যবস্থা করা।

স্থানীয় শংকর গোবিন্দ চৌধুরী স্টেডিয়ামে জাতীয় সংগীতের সাথে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, কার্যনির্বাহী সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহান, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আকতার জাহান, সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল ও রত্না আহমেদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ