ওরা পারলে আমরা কেন পারব না?

করোনাভাইরাস সারা বিশ্বে যখন পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে এবং আক্রান্তের সংখ্যা যখন এক কোটি ছাড়িয়ে গেছে; এমন পরিস্থিতিতে ২৯ জুন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেডরস্ আধানম গেব্রেসাস কোনো রাখঢাক না করেই জানিয়েছেন, বিপদ কাটতে এখনও ঢের দেরি। ভাইরাসটির আসল রূপ দেখা এখনও অনেক বাকি আছে। বিশ্ব পরিসংখ্যান বলছে, এখন পর্যন্ত করোনা তার আসল রূপ সবচেয়ে বেশি দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে। করোনা শনাক্ত ও মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জুলাইয়ের শেষ নাগাদ দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে করোনা সংক্রমণের হার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছবে বলে আভাস দেয়া হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান যেদিন এ ঘোষণা দিলেন, ঠিক তার পরদিন দুপুরে আমাদের স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৪ জনের রেকর্ড মৃত্যুর সংখ্যা জানানো হল। এমন পরিস্থিতি যে হতে পারে, এ ব্যাপারে দেশের বিশেষজ্ঞ মহল অনেক আগেই আশঙ্কা ব্যক্ত করেছিলেন। কর্তৃপক্ষের কিছু পদক্ষেপ নিয়ে করোনা মোকাবেলায় গঠিত জাতীয় বিশেষজ্ঞ কমিটির একাধিক সদস্যের বিরূপ মন্তব্য দেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় আমরা শুনেছি। জাতীয় বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যদের পরামর্শ এড়িয়ে, রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহলকে পাশ কাটিয়ে আমলাদের ওপর বেশি নির্ভর করে কর্তৃপক্ষের কিছু ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ বর্তমান করোনা পরিস্থিতির জন্য দায়ী বলে অনেকেই মনে করেন। এর পক্ষে বাংলাদেশে প্রথম করোনা শনাক্তের পর থেকে এ পর্যন্ত সংক্রমণের হার তুলনা করলে তার সত্যতা মিলবে। বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৮ মার্চ।

মার্চ থেকে জুনের ৩০ তারিখ পর্যন্ত করোনা সংক্রমণের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ৮ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল মাত্র ৫১ জন; কিন্তু এপ্রিলে পোশাক কারখানা খুলে দিলে পোশাক শ্রমিকদের কারখানামুখী আসা-যাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং ওই মাসেই করোনা শনাক্তের সংখ্যা এক লাফে ৭ হাজার ৬৬৭ জনে গিয়ে দাঁড়ায়। মে মাসে ঈদের ছুটি ঘোষণা করে প্রথমে ঢাকা ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে উঠিয়ে নেয়া, দোকানপাট খুলে দেয়া, সীমিত আকারে পরিবহন চালু করা ইত্যাদি সিদ্ধান্তের জন্য মাত্র এক মাসেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৪৭ হাজার ১৫৩ জনে গিয়ে পৌঁছে। পোশাক কারখানা খুলে দেয়া এবং ঈদ সামনে রেখে ছুটি ও মার্কেট খুলে দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত যে কত ঝুঁকিপূর্ণ ও ভুল ছিল; তার প্রমাণ পাওয়া যায় পরের মাসে অর্থাৎ জুন মাসে।

সোজা কথা ওই দুটি সিদ্ধান্ত কার্যকরের পরই করোনা নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতছাড়া হয়ে যায়। যার ফলে মার্চের ৮ তারিখ থেকে মে মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত মোট ৮৫ দিনে শনাক্তের সংখ্যা যেখানে ৪৭ হাজার ১৫৩ জন ছিল; সেখানে জুনের মাত্র ৩০ দিনেই ৯৮ হাজার ৩৩০ জন শনাক্ত হয়। এ লেখা যখন লিখছি, তখন আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৭৭ জনে গিয়ে ঠেকেছে। উল্লেখ্য, এশিয়ার মধ্যে শীর্ষে এবং বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ সর্বোচ্চ আক্রান্ত এখন ভারতে। ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখে পৌঁছতে যেখানে সময় লেগেছিল ১০৯ দিন, সেখানে সরকার ঘোষিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৮ জুন পর্যন্ত অর্থাৎ ১০৩ দিনেই ১ লাখ ২ হাজার ২৯২ জন আক্রান্ত হয়েছে। সংক্রমণের এ ঊর্ধ্বগতি দেখে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী দেড় মাসের মধ্যেই আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা সর্বোচ্চ শিখরে গিয়ে পৌঁছবে।

একটি কথা প্রায়ই বলতে শুনি- শনাক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও মৃত্যুর হার কিন্তু নিয়ন্ত্রণে আছে। অবশ্য এ ধরনের কথা বেশির ভাগ কিছু কিছু রাজনীতিক, করোনাসংশ্লিষ্ট কিছু সরকারি কর্মকর্তা এবং সরকারের ঘনিষ্ঠ বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন বক্তব্যে শোনা যায়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ের করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার নিয়েও কিন্তু সাধারণ মানুষের ভেতর কিছু বিভ্রান্তি আছে। ইদানীং স্বাস্থ্য অধিদফতরের ব্রিফিংয়ে বাসায় চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠছেন- এমন রোগীর সংখ্যা, হাসপাতালে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যার সঙ্গে যোগ করে ঘোষণা করা হচ্ছে। তাতে দৈনিক সুস্থ রোগীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেড়ে গেছে; কিন্তু টেস্ট করার সুযোগ না পেয়ে করোনার উপসর্গ নিয়ে যারা মারা যাচ্ছেন, তাদের সংখ্যা কিন্তু করোনায় মৃত্যুর সংখ্যার সঙ্গে যোগ করা হচ্ছে না। অথচ দেশের জাতীয় পত্রিকাগুলোর মাধ্যমে প্রায়ই করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ার সংবাদ আমরা পাই।

২৫ জুন একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ইউএনডিপির আর্থিক সহায়তায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে করোনার উপসর্গ নিয়ে এযাবৎ ১ হাজার ২৭১ জনের মৃত্যুর খবর বেরিয়েছে। এ গবেষণা প্রতিবেদনের সত্যতা নিয়ে সরকারের কোনো প্রশ্ন বা বক্তব্য আমরা শুনিনি।

তবে সরকারি ঘোষণায় সুস্থ হয়ে যাওয়ার যে হার উল্লেখ করা হয়ে থাকে, আমার মনে হয় এ হার আরও বেশি ছাড়া কম হবে না। এ বিষয়ে আমার একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এখানে উল্লেখ করতে চাই। আমি যে আবাসিক এলাকায় থাকি, সে এলাকায় প্রায় চার-পাঁচ হাজার পরিবার বাস করে। গত কিছুদিন আগে এ এলাকায় ঘোষিত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২০ থেকে ২৫ জন। আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে দেখে একদিন আবাসিক এলাকার একজন সিকিউরিটি গার্ডকে করোনা পরিস্থিতির কথা জিজ্ঞেস করতে সে যে তথ্য দিয়েছে, তা সত্যিই উদ্বেগজনক। সে জানাল, আমাদের আবাসিক এলাকার করোনা আক্রান্তের যে সংখ্যা আমরা জানি, বাস্তবে এর চেয়েও কয়েকগুণ বেশি। প্রথমে আমি তার কথা বিশ্বাস করতে চাইনি; কিন্তু সে যে যুক্তি দিয়ে আমাকে বোঝাতে চেয়েছে, তাতে আমি কিছুটা চিন্তিত হয়ে পড়লাম। সে বলল, প্রায় প্রতিদিনই সকাল ৯-১০টার সময় করোনা আক্রান্ত বাসাগুলো বাদেও অন্য অনেক ফ্ল্যাটের মানুষদের মুখে মাস্ক পরে বারান্দায় রোদ পোহাতে দেখে সে। এতে সে নিশ্চিত যে, এসব ফ্ল্যাটের কেউ না কেউ করোনায় আক্রান্ত, তা না হলে ঘরের বারান্দায় বসে মুখে মাস্ক পরবে কেন?

রোদ পোহানোর ব্যাপারটা এতক্ষণে আমার কাছে পরিষ্কার হল। অর্থাৎ সকালের নরম রোদে বসে ভিটামিন ‘ডি’ গ্রহণের চেষ্টা। কারণ, নিজ বাসায় করোনায় কেউ আক্রান্ত না হলে সাধারণত মুখে মাস্ক পরে রোদ পোহানোর কথা নয়। এরপর গার্ড যা বলেছে, তা বুঝতে কোনো সমস্যা হয়নি। করোনা আক্রান্ত হয়েছেন- এ খবর অন্য মানুষকে জানিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে ভেবে অনেকেই গোপনে ঘরোয়া চিকিৎসা নিচ্ছেন। গার্ডের কথা একেবারে উড়িয় দিতে পারিনি। কারণ যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী বাংলাদেশি চিকিৎসক ডাক্তার মাসুদ ঢাকার একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রথম এক সাক্ষাৎকারে করোনা উপসর্গ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ‘আইভারমেকটিন সিরিজের স্ক্যাবো ৬’ এবং ডক্সিসাইক্লিন সিরিজের ‘ডক্সিক্যাপ’ ট্যাবলেট সেবনে করোনামুক্ত হওয়া যায় এবং এ ওষুধ অস্ট্রেলিয়ায় ব্যবহার করে উপকার পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন। ডাক্তার মাসুদ তার বক্তব্য প্রদানকালে বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসায় এ ওষুধ ব্যবহারের অনুমোদনের জন্য সরকারের উচ্চমহলের কাছে অনুরোধও করেছিলেন। ডাক্তার মাসুদের সাক্ষাৎকার প্রচারের পরপরই বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডাক্তার তারেক আলম একই ওষুধ দিয়ে ৬০ জন করোনা রোগীকে ভালো করেছেন বলে দাবি করেন।

অপরদিকে পুলিশ হাসপাতালে একই চিকিৎসা পদ্ধতিতে ১২ জন রোগীর ভালো হয়ে যাওয়ার খবর যখন স্থানীয় মিডিয়ায় প্রচার হয়, তখন থেকে এ ওষুধ সেবনে ঘরোয়া চিকিৎসা নিয়ে অনেকেই উপকৃত হয়েছেন বলে শুনেছি। এমনকি আমি যে অফিসে কাজ করি, সে অফিসের এমডিসহ মোট ৯ জনকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একই চিকিৎসা নিয়ে ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে উঠতে দেখেছি। উল্লেখ্য, আমার কোম্পানির এমডি একজন সরকারদলীয় সংসদ সদস্য।

শুনেছি, সিএমএইচেও করোনা চিকিৎসায় এ ওষুধ ব্যবহৃত হচ্ছে। এ প্রসঙ্গটি এখানে উল্লেখ করেছি এ কারণে যে, সরকারি সাহায্য ছাড়াই করোনা আক্রান্ত কতজন যে এ ঘরোয়া চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সেই হিসাব আছে কি? অনুমান করা যায়, এরূপ আক্রান্ত করোনা রোগীর সংখ্যা এবং সুস্থ হয়ে যাওয়ার এ হিসাব কর্তৃপক্ষের নথিভুক্ত নেই। অর্থাৎ এ সুস্থতার সংখ্যা সরকারের কোনো তালিকাতেই নেই। এ চিকিৎসা পদ্ধতি কিন্তু সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত নয়। সুতরাং এভাবে সুস্থ হয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব তারা দাবিও করতে পারেন না। এ পদ্ধতিতে ঘরোয়া চিকিৎসা নিয়ে অনেকেই ভালো হয়ে যাচ্ছেন বলে মৃত্যুর হার কম কিনা কে জানে!

আমরা কথায় কথায় ইউরোপ-আমেরিকার করোনা পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করে আমাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রশংসা করি। এটি তো এখন প্রমাণিত, আমেরিকা-ইউরোপের কিছু কিছু দেশ প্রাথমিক পর্যায়ে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে গুরুত্ব না দিয়ে খেসারত দিচ্ছে। সে ভুল আমরাও করেছি। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক বিশেষজ্ঞ ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করোনা মোকাবেলায় গঠিত টাস্কফোর্সের সদস্য অ্যান্টনি ফাউসি বলেছেন, ‘আমি উদ্বেগে রয়েছি, কারণ আমরা ভুল পথে হাঁটছি। ভবিষ্যতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে সংক্রমণের হার দ্বিগুণ হয়ে দিনে এক লাখ ছাড়িয় যেতে পারে।’ উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের যেসব রাজ্যে লকডাউন তুলে দেয়া হয়েছিল; সেখানে সংক্রমণের হার দ্রুত বেড়ে গিয়ে আজকের এ জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে। প্রশ্ন হল, আমরাও কী সেই পথে হাঁটছি? কাজেই অন্যের সঙ্গে তুলনা দিয়ে লাভ কী? আর যদি দিতেই হয়; অন্যদের ভালো ভালো পদক্ষেপগুলোর সঙ্গেও তুলনা করা উচিত। যেমন দায়িত্বে অবহেলা এবং লকডাউনের নিয়মভঙ্গের জন্য নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডেভিড ক্লার্ক নিজ থেকে পদত্যাগ করে যোগ্য ব্যক্তি দিয়ে দেশে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য সরকারকে সুযোগ করে দিয়েছেন।

আক্রান্তের দিক থেকে বিশ্বের চতুর্থ, আমাদের পার্শ্ববর্তী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ত্রাণ সহায়তা হিসেবে সে দেশের ৮০ কোটি দরিদ্র মানুষকে যে ৫ কেজি করে চাল অথবা গম এবং ১ কেজি করে ডাল বিনামূল্যে দিয়ে আসছিলেন; সম্প্রতি তার মেয়াদ আরও ৫ মাস বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। একইভাবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তার রাজ্যে করোনা দুর্যোগে বিনামূল্যে রেশন পাচ্ছেন, এমন ৪ কোটি মানুষের সঙ্গে আরও ৩ কোটি ৯৭ লাখ মানুষকে যোগ করে আগামী এক বছর এ রেশন দিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। আমি গতকাল কলকাতার একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সচিত্র প্রতিবেদনে দেখলাম- সেখানে বলা হয়েছে, কলকাতা শহরে বেসরকারি গণপরিবহনের ভাড়া না বাড়ানোয় পরিবহন সংগঠনগুলো একে একে চলমান বাসের সংখ্যা কমিয়ে দিচ্ছিল। মমতা ব্যানার্জি বাসের সংখ্যা কমানো যাবে না বলে হুশিয়ার করে দিয়েছেন, প্রয়োজনে সরকার বাস মালিকদের ভর্তুকি দেবে; তবু দরিদ্র যাত্রীদের ওপর বাড়তি ভাড়া চাপানো যাবে না। যদি তারা সরকারের কথা না শোনে তাহলে সরকার বেসরকারি বাস রিকুইজিশন করে নিজেরা পাবলিক সার্ভিস দেবে। এতে ফল হয়েছে ভালো। টিভিতে দেখলাম, একে একে বাসগুলো টিভি ক্যামেরার সম্মুখে যাচ্ছে এবং সেসব বাসের ভেতর দাঁড়ানো যাত্রী তো নেই-ই; বরং একই সিটে একাধিক যাত্রী খুব কমই দেখেছি।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ভারতের একটি রাজ্য সরকার যদি পারে তাহলে আমরা কেন পারি না? সুতরাং আমরা অন্যদের সঙ্গে যখন তুলনা করব, তখন তাদের ভালো কাজগুলোর কথাও নিশ্চয়ই উল্লেখ করব। খবর বেরিয়েছে- লকডাউনের কড়া শাসনে করোনার দ্বিতীয় দফার সংক্রমণ ঠেকিয়েছে চীন। আমরা কি পারি না, চীনের এ উদাহরণকে গ্রহণ করে সংক্রমণ কমানোর কোনো উদ্যোগ নিতে? যদি এমন কোনো দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে না পারি তাহলে সন্দেহ নেই, ভবিষ্যতে আমাদের আরও কঠিন দুর্ভোগ পোহাতে হবে।

একেএম শামসুদ্দিন : অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা

 

সুত্রঃ যুগান্তর