এবার লিজার বিরুদ্ধে মামলা করলেন এমপি এনামুলের এপিএস

নিজস্ব প্রতিবেদক:

এবার সেই আয়েশা আক্তার লিজার বিরুদ্ধে রাজশাহী-৪ আসনের এমপি এনামুল হকের পক্ষে তথ্যপ্রযুক্তি ও কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। জেলার বাগমারা থানায় মামলাটি করেন এমপি এনামুলের ব্যক্তিগত সহকারী আসাদুজ্জামান।

এর আগে গত ২৯ মে ফেসবুকে এমপি এনামুলের সঙ্গে অন্তরঙ্গ ছবি দিয়ে আলোচনায় আসেন আয়েশা আক্তার লিজা। এরপর তিনি বিভিন্ন ছবি ও এমপি এনামুলের সঙ্গে প্রেম এবং বিয়ের বিষয় নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করতে থাকেন। মামলাটি দায়ের করেছেন সাংসদ এনামুল হকের পক্ষে তার একান্ত সহকারি ও বাগমারা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ।

বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, শুক্রবার সকালে এমপি এনামুল হকের পক্ষে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে ও চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করেছেন তার একান্ত সহকারি আসাদুজ্জামান আসাদ। এতে একক আসামী করা হয়েছে এনামুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রী আয়েশা আক্তার লিজাকে। মামলায় বলা হয়েছে, আয়েশা আক্তার লিজাকে তালাক দেয়ার পর সে তার স্বামী সাংসদ এনামুল হকের কাছে নিজের ব্যাংক লোনের এক কোটি টাকা পরিশোধের জন্য চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবি দিয়ে সাংসদ এনামুল হকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে সুনাম ক্ষুন্ন করেছেন। পুলিশ আসামী লিজাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে। বাগমারা থানার মামলা নম্বর ৬, তারিখ-৫জুন, ২০২০।

মামলা প্রসঙ্গে সাংসদ এনামুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রী আয়েশা আক্তার লিজা বলেন, ‘আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার এবং মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হচ্ছিলো। তার অংশ হিসেবেই আমার নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আইনগত আমি এখনো সাংসদ এনামুল হকের বৈধ স্ত্রী। আমাকে তালাকের প্রথম নোটিশ দেয়া হয়েছে বলে শুনেছি। এখনো নোটিশ হাতে পাইনি। পরপর তিনটি নোটিশ তিনমাসে আসার পর তালাক চুড়ান্ত হয়। আমাকে তালাক দেয়ার বিষয়টি শুনতে পেয়ে আমি ন্যায় বিচার চেয়ে আমি আমার স্বামীর সঙ্গে ফেসবুকে ছবি দিয়েছি। এতে তার একার পক্ষে মান সম্মান নষ্ট হবার কথা নয়। যেহুতু আমরা বৈধ স্বামী স্ত্রী।

এই মামলার বিষয়ে সাংসদ এনামুল হকের একান্ত সহকারী ও বাগমারা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদকে ফোন করা হলে তিনি সরাসরি ফোন রিসিভ করেননি।

আরও পড়ুন:

রাজশাহীর এক এমপির সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ের দাবি নারীর, ফেসবুকে ছবি নিয়ে তোলপাড়

এমপি এনামুল হক এর আগে বলেছিলেন, লিজার সঙ্গে একটা সম্পর্ক  ছিল। এখন আর নাই। সে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করছে। বিয়ের পর চাঁদাবাজি করেই সে ৫তলা বাড়ী করেছে ‘

এদিকে আয়েশা আক্তার লিজা সাংসদ এনামুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের নামে প্রতারণা ও ভ্রুণ হত্যার অভিযোগ এনে বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবি সমিতির কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবি সমিতির রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান দিল সেতারা চুনি বলেন, প্রতারণামূলকভাবে বিয়ে, বাচ্চা নষ্ট করা এবং রাজনৈতিক কারণে বিয়ে গোপন করতে বলে লিজার সাথে ঘর সংসার করেন এমপি এনামুল হক। পরে যখন সন্তান এবং স্বীকৃতি দাবি করেন, তখণ লিজার স্বাক্ষর জাল করে একটি তালাকের কাগজ দেখান। এতে বলা হয় লিজাই তালাক দিয়েছেন। পরে বলা হয় এনামুল হক তালাক দিয়েছেন। এরপর থেকেই এনামুল হকের অনুসারীরা লিজাকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, তারা নিজেরা দুজনই বিবাহিত ছিলেন। দুজনই বিয়ে করেছেন। এখন তাদের কাগজপত্র যাচাই করে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কাগজ পর্যালোচনা করছি।

স/আর