এবার মীমের সঙ্গেও ‘আসপিয়া কাণ্ড’! (ভিডিও)

বরিশালের পর এবার আরেক আসপিয়ার সন্ধান পাওয়া গেছে খুলনায়। পরিবার ভূমিহীন হওয়ায় কনস্টেবল পদে নারী কোটায় উত্তীর্ণ হয়েও চাকরি হয়নি মীম আক্তারের। এতে হতাশ তার পরিবার।

খুলনায় পুলিশে চাকরি প্রার্থী মীম আক্তার তথ্য গোপন করায় চাকরি হয়নি বলে দাবি করেছে পুলিশ। তবে নিজেকে ভূমিহীন বলে দাবি করেছেন মীমের পিতা। সর্বশেষ ভূমিহীন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। চাকরি হওয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে পরিবারটি।

পুলিশ ও মীমের পরিবার সূত্রে জানা যায়, পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে সাধারণ নারী কোটায় আবেদন করে নগরীর সোনাডাঙ্গায় বসবাসরত মীম আক্তার। গত ২৫ অক্টোবর খুলনা শিরোমনি পুলিশ লাইন্সে শারীরিক যোগ্যতা যাচাই হয়। সেখানে উত্তীর্ণ হয় মীম। এরপর ২৮ তারিখে লিখিত পরীক্ষা, মৌখিক ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষাতেও পাশ করে মীম।

চাকরি প্রার্থী মীম আক্তার যুগান্তরকে বলেন, সবকিছুতে পাশ করার পরও আমাকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। খুলনা জেলা পুলিশ লাইন্সে সাধারণ মেডিকেল পরীক্ষার পর ১৩ নভেম্বর রাতে ঢাকায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালেও আমার মেডিকেল পরীক্ষা করানো হয়। এরপর পুলিশ ভেরিফিকেশন শুরু হয়। সোনাডাঙ্গা থানা, পুলিশ ফাঁড়ি ও সিটিএসবি থেকে বাড়িতে তদন্তে আসে। তাদের কাছে ভূমিহীন সার্টিফিকেট জমা দিয়েছি।

তারা বলেছিলেন, ৫ ডিসেম্বর আমাকে জানাবেন। ফোন দিয়ে ৭ তারিখে জেলা পুলিশ লাইন্সে ফিঙ্গার প্রিন্টের জন্য ডাকা হয়। সেখানে পাঁচ আঙুলের ছাপ দিয়ে এসেছিলাম। সেখান থেকে বলেছিল, পরে জানিয়ে দেওয়া হবে। এরপর থেকে আর কিছুই জানায়নি।

মীম বলেন, যারা ফিঙ্গার দিয়ে এসেছিল তাদের ফোন দিয়ে চাকরির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। শনিবার খুলনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে গিয়ে পুলিশ সুপার স্যারকে পাইনি। অনেকক্ষণ পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভির আহম্মেদ স্যার এসে জানান- ‘তোমার সব ঠিক থাকলেও স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় তোমার চাকরিটা আমরা দিতে পারছি না।’

চাকরির বিষয় নিয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বলেন, মীমের পৈতৃক বাড়ি বাগেরহাটে। তারা খুলনায় থাকে। অথচ আবেদন ফরমে তারা সে তথ্য দেয়নি। সে বাগেরহাট থেকে আবেদন করতে পারত। তা সে করেনি। এছাড়াও মীম মেডিকেলে ফিট হয়নি। মেডিকেল বোর্ড থেকে যে মতামত পাওয়া গেছে তাতে সে ফিট না বলেই প্রতীয়মান হয়েছে। যে কারণে তাকে নেওয়া হয়নি।

তবে ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছে খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর আহম্মেদ। তিনি বলেন, মেয়েটা সব দিক দিয়েই পারফেক্ট। মেধা তালিকায় প্রথম হয়েছে। পুলিশে নিয়োগ পেতে হলে জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হয়। শুধু জন্মসনদ এখানে থাকলেই হবে না। তার স্থায়ী ঠিকানা লাগবে। সেটি মীমের নেই। বাগেরহাটে তার চাচা, বাবা ও মামাদের কিছুটা জমি রয়েছে। সে যদি বাগেরহাট জেলা থেকে আবেদন করত তবে সেটি ঠিক ছিল।

মীম আক্তারের পিতা রবিউল ইসলাম বলেন, ১৯৮৮ সাল থেকে খুলনায় বসবাস করছি। মেয়ের জন্মও খুলনায়। বাগেরহাট জেলার চিতলমারি থানার বড়বাড়িয়া গ্রামে বাবার নামে পৈতৃক ভিটে রয়েছে। আমার নামে কোথাও কোনো জমি নেই। পুলিশি তদন্তের সময় আমরা সেটা জানিয়েছি। শুধু জমি না থাকার কারণে আমার মেয়েটার চাকরি হচ্ছে না।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ