এবারের ঈদে চাঁপাইনবাবগঞ্জের তাঁত পল্লীতে নেই কর্মচাঞ্চল্য

কামাল হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জঃ

এবারের ঈদে চাঁপাইনবাবগঞ্জের হরিনগর ও কানসাটের বিশ্বনাথপুরে তাঁত পল্লীতে নেই সরগরম, পাইকারদের নেই আনাগোনা। করোনার প্রভাবে বন্ধ হয়ে গেছে তাঁতের কাজ। হাতে গোনা কয়েকজন শিল্পী কাজ করলেও মিলছে না ন্যায্য মজুরি। করোনার প্রভাবে এখন কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তারা। তাঁত শিল্পকে বাচাঁতে সরকারের হস্তক্ষেপও করেছেন তারা।

জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় প্রায় ২ হাজার তাঁত কারখানা রয়েছে যার সাথে প্রায় দশ হাজার কর্মচারীর জীবিকা জড়িত। এ জেলায় শুধু দ ’ ঈদেই বেচাকেনা হতো প্রায় ৪ কোটি টাকার শাড়ি কাপড় ও পোশাক। কিন্তু এবার করোনার কারণে সবই ছন্দপতন ঘটেছে।

জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার হরিনগর ও সদর উপজেলার লাহারপুর গ্রামের তাঁত শিল্প প্রসিদ্ধ। ঈদকে সামনে রেখে নেই ক্রেতা ও পাইকারদের আনাগোনা। অথচ ঈদের তিন মাস আগ থেকেই এই তাঁত পল্লী হয়ে উঠে মেশিনের শব্দে মুখরিত। ঈদের পোশাক নিতে নিজ জেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকার ও ক্রেতা বিক্রেতাদের বেড়ে যায় সমাগম। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তাঁতের খটখট শব্দে নিপুন শিল্পীর হাতে চলতো বুননের কাজ।

বিভিন্ন স্থানে এখান থেকে সরবরাহ হতো নানা জাতের কাপড়। এখানকার তৈরি শাড়ি, লুঙ্গি, চাদর, গামছার যথেষ্ট কদর থাকায় সেসব সরবরাহ হতো দেশের বিভিন্ন স্থানে। করোনার আতঙ্ক ও লকডাউনের কারণে কোনো অর্ডার নেই। সরবরাহ করতে পারেনি রং, সুতা, কাচামালসহ বিভিন্ন উপকরণ।

তাঁত শিল্পী চিরঞ্জিত আকাশ বলেন, আমাদের এই হরিনগর তাঁতি পাড়ায় শতাধিক তাঁত কারখানা থাকলেও এরা করোনার জন্য তাত বোনাতে পারছে না। দুই-চারজনের ঘরে তাঁত বোনাচ্ছে। হাতে হাতে বিক্রি করছে। তাও খুবই কম।

তাঁত শিল্পী ফেরদৌসি খাতুন বলেন, আমাদের করোনা ভাইরাসের কারণে কোনো কাজ করতে পারছিনা। এখন আমরা সেই কাজ বন্ধ রাখছি। এখন বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে খুবই অসুবিধা। সেই অসুবিধা দূর করতে সহযোগিতার জন্য আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাই।

এদিকে তাঁত মালিকরা জানান, বর্তমানে করোনার কারণে সিল্ক কাপড়ের কোনো চাহিদা নেই। দোকানিরা অর্ডার দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে, কিভাবে ব্যবসা চালাবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা।