এক জন ডাক্তার দিয়ে চলছে লালপুরে স্বাস্থ্য কমপ্লে্ক্সের চিকিৎসা সেবা

আলাউদ্দিন, লালপুর:
নাটোরের লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হলেও মাত্র একজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা, নেই কোন নিরাপত্তা প্রহরী। এক্সরে মেশিনও বিকল। ১১জন চিকিৎসকের মধ্যে দুইজন কর্মরত থাকলেও বাঁকি ৯টি পদই ফাঁকা রয়েছে। এতে ভেঙ্গে পড়েছে স্বাস্থ্য সেবা। প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা পড়ছেন ভোগান্তিতে।

লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, লালপুর উপজেলা হাসপাতালটিতে মেডিকেল অফিসার ও সমমানের পদ রয়েছে মোট ১১জন। এর মধ্যে কর্মরত রয়েছে মাত্র দুইজন। এই দুইজনের মধ্যে একজন ডা. মুজিবুল হক সবুজ ফাউন্ডেশনের ট্রেনিং এ বগুড়া রয়েছেন।  শুধুমাত্র আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা.আব্দুর রাজ্জাক এর মাধ্যমেই চলছে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা।

এছাড়া নিয়োগ প্রাপ্ত ডা. উদয় কুমার, ডা. পলাশ কুমার শাহ্, ডা. আতিয়ার চৌধুরী সংযুক্তিতে ঢাকায় কাজ করছেন। কিন্তু বেতন ভাতা তুলছেন এই হাসপাতালের নামেই। যাতে করে কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছে লালপুরের প্রায় ৩ লক্ষ জনসাধারণ।

হাসপাতালের কর্তব্যরত আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে প্রতি দিন অন্তত ২৫-৩০ জন রোগী ভর্তি হয়। যদিও হাসপাতালটি ৫০ শয্যার তার পরও সব সময় হাসপাতালে ৬০-৭০ জন রোগী ভর্তি থাকে। এই রোগিদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজন ১১ জন মেডিকেল অফিসার। কিন্তু সেখানে ৭জন নিয়োগ থাকলেও তাদের একজন ডা. মুজিবুল হক সবুজ ফাউন্ডেশননের ট্রেনিং ও অপরজন ডা. হাফিজ ইকবাল প্রশিক্ষনে রয়েছেন। এছাড়া বাঁকি ৩ জন ডা. উদয় কুমার, ডা. পলাশ কুমার শাহ, ডা. আতিয়ার চৌধুরী সংযুক্তিতে ঢাকায় কাজ করছেন।

তিনি আরো জানান হাসপাতালে ৩জন নিরাপত্তা প্রহরী থাকার কথা থাকলেও একজনও নেই, ওয়ার্ডবয় ৩জনের মধ্যে ২জনের ও মিডওয়াইফ ৪ জনের মধ্যে ৪টি পদ শূন্য। অন্যদিকে বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে এক্সরে মেশিনটি। দীর্ঘদিন ধরে অপারেশন থ্রিয়েটর বন্ধ থাকায় অপারেশনের যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। প্রয়োজনীয় ডাক্তার না থাকায় হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা দিন দিন ভেঙ্গে পড়েছে। হাসপাতালে যে পরিমান রোগী ভর্তি রয়েছে তাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া আমার একার পক্ষে কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে। তার পরেও হাসপাতালে আগত রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছি। এই হাসপাতালে রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করতে অতিসত্ত্বর ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।

হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেডে রোগীরা শুয়ে আছে নেই কোন ডাক্তার। এ সময় বেডে শুয়ে থাকা রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই হাসপাতালে শুধু একজন ডাক্তার আছে। যিনি দিনে এক থেকে দুইবার ভিজিট করে। আমরা অত্যান্ত গরীব মানুষ তাই এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছি। তবে মাঝে মধ্যে এক জন নার্স এসে খোঁজ খবর নেয়। ডাক্তার না থাকার কারনে আমরা কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছিনা।

এলাকার সচেতন মহল ও ভুক্তভোগী রোগীরা হাসপাতালটিতে জরুরী ভাবে শূন্য পদ গুলিতে চিকিৎসক দেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসক সংকট মেটাতে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আশা করছি খুব অচিরেই এই সংকট কেটে যাবে।

স/অ