একের পর এক লাশ আসছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে বালুবাহী ট্রলারের ধাক্কায় যাত্রীবাহী নৌকা ডুবির ঘটনায় ২১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার কর্মীরা একের পর এক লাশ নিয়ে আসছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে।

আহত ও নিহতদের খোঁজ নিতে হাসপাতালে ভিড় করছেন স্বজনরা। তাদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে পুরো হাসপাতাল চত্বর।

এ পর্যন্ত ২১ জনের লাশ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। আহত ১১ যাত্রীকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

হাসপাতালে কোনো রকম বিশৃঙ্খল পরিবেশ যাতে সৃষ্টি না হয় সে জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। পাশাপাশি নিহতদের পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার লইসকা বিলে প্রায় ৭০ জন যাত্রী নিয়ে নৌকাটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৯ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক।

নিহতরা হলেন- রুবিনা বেগম (৪০), মোসা. ফরিদা বেগম (৪০) ও তার স্বামী জজ মিয়া, অঞ্জনা (৪২), তার স্বামী পরিমল বিশ্বাস, কমলা বেগম (৬০) মুন্নি (২২) মঞ্জুর বেগম (৫০) শারমিন (১৬) জহিরুল ইসলাম (২২) নাজরিন আক্তার (৪৫) মোমেনা (৬০) সিফাত (১০) মিনারা (৫৩)। অন্যদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী আলী আক্তার রিজভী বলেন, বিকাল সাড়ে ৪টায় জেলার বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ঘাট থেকে শতাধিক যাত্রী নিয়ে ট্রলারটি সদর উপজেলার আনন্দবাজার ঘাটের উদ্দেশে রওনা হয়। পথিমধ্যে লইসকা বিল এলাকায় বিপরীত দিকে থেকে আসা একটি বালুবোঝাই ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে যাত্রীবোঝাই ট্রলারটি ডুবে যায়।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন। স্থানীয় মানুষও উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান ঘটনাস্থলে আছেন। তিনি জানান, এ পর্যন্ত ২১ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের একাধিক উদ্ধারকারী দল ও ডুবুরিরা উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন। বালুবোঝাই ট্রলারটি পুলিশ আটক করেছে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যারা মারা গেছেন তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে প্রদান করা হচ্ছে এবং আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

 

সূত্রঃ যুগান্তর