একটি মোবাইলের জন্য

মোবাইল চুরির অপরাধে পাবনায় এক গৃহকর্মীকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার (৯ জুন) বিকেল ৪টার দিকে পাবনায় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল রেলগেট সংলগ্ন মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে। বুধবার (১০ জুন) এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।

নিহত গৃহকর্মী পাবনা সদর উপজেলার আতাইকুলা থানার লোহাগাড়া চমরপুর গ্রামের জয়নালের স্ত্রী। তিনি একই এলাকার মো. মৃধার মেয়ে।

স্থানীয়রা জানান, আব্দুল আলীমের বাড়িতে মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে মঙ্গলবার তার স্ত্রী লাকি খাতুন গৃহকর্মী মালেকাকে মারপিট ও গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাকা দিয়ে নির্যাতন চালান।এতে মালেকা অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। মালেকা মারা গেছে ভেবে ওই বাড়ির মালিক আলীমের নেতৃত্বে বাড়ির লোকজন লাকিকে চারতলা ভবনের ছাদে নিয়ে নিচে ফেলে দেয়। এতে মালেকা ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, আহত মালেকাকে হাসপাতালে পাঠানোর নাম করে আলীম ও তার লোকজন দ্রুত অটোরিকশায় করে তাকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে ফেলে। এরপর পুলিশকে না জানিয়েই মালেকার মৃতদেহ তার নিজ গ্রামের বাড়ি চোমরপুরে পাঠিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়।

পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহম্মেদ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ মঙ্গলবার রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে বাড়ির মালিক আলীমের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।জিজ্ঞাবাদের এক পর্যায়ে জানা যায় তিনি অন্তঃসত্ত্বা। এজন্য তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।পুলিশ নিহত গৃহর্কমী মালেকার গ্রামের বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে মঙ্গলবার রাতেই পাবনায় নিয়ে আসে।

ওসি আরও জানান, মেয়েটির গায়ে তেমন কোনো ক্ষতের চিহ্ন নেই, তবে হাতে একটু দাগ আছে এবং নাক দিয়ে রক্ত ঝড়ছিল। বুধবার সকালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ঘটনায় নিহত গৃহকর্মীর বড় ভাই আজিজল মির্জা বাদী হয়ে বাড়িওয়ালা আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে পাবনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে বলে জানিয়েছেন ওসি। এদিকে ঘটনার পর থেকে বাড়ির মালিক লাকির স্বামী আব্দুল আলীম পলাতক রয়েছেন।

অভিযুক্ত আলীমের বিরুদ্ধে পাবনা সদর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে প্রতিবেশীরা জানালেও বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত পুলিশ নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি।

পাবনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।তিনি জানান, ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে। মূল হত্যাকারী ওই বাড়ির মালিক আলীমকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।