ঋণের সুদ হার এক অঙ্কে আনতে সরকার বদ্ধপরিকর

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

দেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ঋণের সুদের হার এক অঙ্কে (সিঙ্গেল ডিজিট) নামিয়ে আনতে সরকার বদ্ধপরিকর বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, এরইমধ্যে ২১টি ব্যাংক এই সুদ এক অঙ্কে নামিয়ে এনেছে। বাকি ব্যাংকগুলোও শিগগিরই এক অঙ্কে নামিয়ে আনবে।

একই সঙ্গে ক্লাসিফায়েড (খোলাপি) ঋণের পরিমাণ আর বাড়বে না বলে তার দেয়া ঘোষণার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, অতীতের ঋণখেলাপির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতেই হবে।

রোববার জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গার এ সংক্রান্ত ৭১ বিধিতে আনীত নোটিশের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ বলেন, সরকারের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও দেশের ব্যাংকসমূহ ঋণের সুদের হার এখনও এক অংকের ঘরে নেমে আসেনি। এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, বক্তব্যটি পুরোপুরি সত্য না হলেও আংশিক সত্য। আমরা সবাই জানি ব্যাংক ঋণে অব্যবসাবান্ধব অতিরিক্ত সুদ হার ধার্য করা হলে দেশের অর্থনীতি সাবলীলভাবে এগিয়ে যেতে পারে না। ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বাধাপ্রাপ্ত হয় আমাদের কর্মসংস্থান। সামষ্টিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক অবস্থার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি অনুধাবন করে দেশের ব্যবসায়ী সমাজ অবস্থাটি ব্যাখ্যা করার জন্য ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলাপ করে ব্যাংক ঋণের সুদের হার এক অংকের ঘরে নামিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। সেই নির্দেশনার ফলশ্রুতিতে এরইমধ্যে দেশের ২১টি ব্যাংক ঋণের ওপর সুদ হার এক অংকের ঘরে তথা শতকরা ৯ ভাগে নামিয়ে এনেছে।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক অন্য সকল ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে বাকি ব্যাংকগুলোও প্রদত্ত ঋণের সুদ হার অল্প সময়ের মধ্যে এক অংকের ঘরে নামিয়ে আনতে সক্ষম হবে। বিষয়টি নিয়ে আমি নিজেও এরই মধ্যে সংশ্লিষ্টদের অর্থাৎ সরকারি কর্মকর্তা সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকসমূহের মালিক এবং ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কয়েক দফা কথা বলেছি। সংশ্লিষ্ট সবাই ইতিবাচক মনোভাব প্রদর্শন করেছেন।

মন্ত্রী বলেন, ব্যাংক ঋণে উচ্চ হারে সুদ আমাদের অর্থনীতিতে দীর্ঘকাল ধরে একটি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে আসছে। ব্যাংক ঋণের সুদের হার একটি গ্রহণযোগ্য এবং ব্যবসাবান্ধব পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য আমাদের সরকার বদ্ধপরিকর।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা ব্যবসাবান্ধব একটি সরকার। আমরা ব্যবসায়ীদের বিপক্ষে না। ব্যবসায়ীরা যদি ব্যবসা না করতে পারে, আমাদের কর্মসংস্থান কোথা থেকে আসবে? দারিদ্র্যবিমোচন কীভাবে হবে? সেই কাজগুলো করার জন্য তাদের (ব্যাংক মালিক) সঙ্গে বারবার বসছি। আমি আশ্বস্ত করছি অতি শিগগিরই এর ফলপ্রসূ অবস্থা দেখতে পাবেন।

তিনি বলেন, আমরা ঘোষণা দিয়েছি ক্লাসিফায়েড ঋণের পরিমাণ আর বাড়বে না। ঋণখেলাপির সংস্কৃতি দীর্ঘকাল ধরে আমাদের এই সমাজে বহমান। আমরা সেই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। আমি আশ্বস্ত করতে পারি আমরা সেই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসব। খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়বে না।