উত্তরা গণভবনের গাছ কর্তন: ৬ জনকে অভিযুক্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর:
নাটোরের উত্তরা গণভবনের ঝড়ে পড়া এবং মরা গাছের নামে শতবর্ষী তাজা গাছ কর্তনের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নাটোরের জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুনের কাছে তদন্ত প্রতিবদেন দাখিল করেন তদন্ত কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট রাজ্জাকুল ইসলাম।

তদন্ত প্রতিবেদনে গণপূর্তর নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান আকন্দ, ঠিকাদার সোহেল ফয়সাল এবং গণভবনের তত্ত্বাবধায় আব্দুস সবুর তালুকদারকে প্রধান অভিযুক্ত করে মোট ৬জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া বাঁকি তিনজন গণপূর্তর উপ-বিভাগী প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম, গণপূর্তর এসও কামরুজ্জামান এবং তত্ত্বাবধায়ক আবুল কাশেম কে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ এনেছে তদন্ত কমিটি।

তদন্ত রিপোর্টে মোট ১হাজার ৯২সেপ্টি গাছ কাটা হয়েছে উল্লেখ করা হয়েছে।
গণবভন সুষ্ঠ ভাবে ব্যবস্থাপনার জন্য ৭দফা সুপারিশ দিয়েছে তদন্ত কমিটি। এসময় তদন্ত কমিটির সদস্য নেজারত ডেপুটি কালেক্টরের অনিন্দ মন্ডলসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

তদন্ত কমিটির রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, গত ১৭ অক্টোবর গণভবন ব্যবস্থাপনা কমিটি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট রাজ্জাকুল ইসলামকে প্রধান করে ৫সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়া হয়। তদন্ত কমিটি তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। সেই আলোকেই তদন্ত কমিটি সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে গণপূর্তর নির্বাহী প্রকৌশলী, ঠিকাদার এবং তত্ত্বাবধায়ক সহ মোট ৬জনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।


জেলা প্রশাসক আরো বলেন, গণভবনের মতো জায়গা গাছ কাটতে সহযোগিতা করার জন্য তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী দায়ি ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অপরদিকে, গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগী প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম এবং গণপূর্তর এসও কামরুজ্জামানকে অন্যত্র বদলি করেছে গণপূর্ত বিভাগ রাজশাহী ডিভিশনাল অফিস। গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তবে তদন্ত কমিটির রিপোর্টে নির্বাহী প্রকৌশলীকে অভিযুক্তর বিষয়ে মশিউর রহমান আকন্দ বলেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্টে আমি কিভাবে অভিযুক্ত হলাম, বিষয়টি বুঝতে পারছিনা। তাছাড়া তদন্ত কমিটি কিভাবে তদন্ত করেছে এটা তাদের বিষয়।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতি উত্তরা গণভবনে ঝড়ে পড়া এবং মরা তিনটি গাছ এবং কিছু ডালপালা কর্তনের টেন্ডার দেয় স্থানীয় গণপূর্ত বিভাগ। পরে মাত্র ১৮হাজার ৪০০ টাকার বিনিময়ে গাছগুলো কর্তনের কাজ পায় স্থানীয় যুবলীগ কর্মী সোহেল ফয়সাল। কিন্তু ঠিকাদার সহ অন্যদের যোগ সাজসে উত্তরা গণভবনের মোট ২২টি গাছ এবং ২৮টি গাছের বড় বড় ডালপালা কেটে নিয়ে যায় ঠিকাদার। যার অনুমানিক মূল্য ১০থেকে ১২লাখ টাকা। পরে বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আসলে গত ১৭ অক্টোবর ৫সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠণ করে জেলা প্রশাসন।

স/শ