উতরাঞ্চলজুড়ে তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: বিশেষ নজরদারিতে ছাত্রাবাসগুলো

নিজস্ব প্রতিবেদক:

উত্তরাঞ্চলজুড়ে জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধি নিয়ে অনেক আগ থেকেই বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ পত্রপত্রিকায়ও বিভিন্ন খবরা-খবর উঠে আসে। ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজন রেস্তোরাঁয় এবং সোলাকিয়ায় হামলায় জড়িত চিহ্নিত জঙ্গিদের মধ্যেও রয়েছে উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকজন জঙ্গি। ফলে এ অঞ্চল ঘিরে জঙ্গি তৎপরতারোধে পুলিশের বিশেষ সতর্কতা জোরদার করা হয়েছে।

এরই মধ্যে সারিয়াকান্দির দুর্গম চরে এবং গাইবান্ধার দুর্গম চরে পুলিশ ও র‌্যাব  পরপর দুইদিন বিশেষ অভিযানও পরিচালনা করে। ওই দুই অভিযানে যদিও কোনো জঙ্গিকে আটক করা যায়নি। তবে ওইসব দুর্গম অঞ্চলেই জঙ্গিদের আস্তানা গড়ে উঠেছিল-সে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজ এম খুরশিদ আলম জানান, সন্ত্রাস প্রতিরোধে রাজশাহী বিভাগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক তৎপরতা চালিয়েছে। সন্ত্রার প্রতিরোধে বিভাগের পুলিশি অভিযান জোরদার করা ছাড়াও স্থানীয় প্রভাবশালীদের নিয়ে কমিটি গঠন, পলতাকদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা, পুলিশ ও র‌্যাবের টহল জোরদার করা, স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে নজরদারি বৃদ্ধি করা ছাড়াও নানা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ইফতে খায়ের আলম সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, সন্ত্রাস প্রতিরোধে নগরীতে প্রতিদিনই পুলিশের বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যারা দেশকে অস্থিশিল করতে তৎপর, তাদের চ্হিনত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

শিবিরের নেতাকর্মীদের প্রতি বিশেষ নজর দিয়ে তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। নগরীর মেসগুলোতে বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে। স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেসব শিক্ষার্থী নিখোঁজ রয়েছে, তাদের তালিকা তৈরী করা হচ্ছে। তালিকা অনুযায়ী এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কার্যকর ভূমিকা রাখছে। এছাড়াও মহানগরীর পাড়া-মহল্লাগুলোতেও সন্ত্রা প্রতিরোধে কমিটি গঠনের কাজ চলছে।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকুল কুমার  ঘোষ জানান, যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসরোধে রাজশাহীতে পুলিশের অভিযান জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে সন্ত্রাস প্রতিরোধে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এলাকায় অপরিচিত লোকদের দেখামাত্র পুলিশকে খবর দিতে বলা হয়েছে। পলাতকদের তালিকা তৈরীরও কাজ চলছে। পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, রাজশাহীর সাধারণ মানুষ জঙ্গিবিরোধী নানা তথ্য দিয়ে পুলিশকে ব্যাপক সহযোগিতা করছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। স্থানীয় কমিউিনিটি পুলিশিং ইউনিট এবং মসদিজের ইমাম থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ থানায় বিভিন্নভাবে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছেন।
মুকুল কুমার ঘোষ বলেন, মানুষের মাঝে আমরা সচেতনতা সৃষ্টি করতে পেরেছি। তারা জঙ্গি বা সন্ত্রাস প্রতিরোধে পুলিশকে নানাভাবে তথ্য দিয়ে ব্যাপক সহযোগিতা করছেন। এতে আমরা উপকৃত হচ্ছি। তাদের সহযোগিতা নিয়ে আমরা অভিযানও অব্যাহত রেখেছি।

এদিকে শুক্রবার জুমআর নামাজের আগ থেকে রাজশাহী নগরজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলে পুলিশ। মসজিদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন গীর্জা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও কড়া সতর্ক দৃষ্টি রাখে পুলিশ। গড়ে তোলা হয় ব্যাপক নিরাপত্তা। হঠাৎ করে এমন নিরাপত্তা দেখে নগরবাসীর মাঝেও নানা প্রশ্নের জন্ম দিতে থাকে।
নাটোরের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জি সিল্কসিটি নিউজকে জানান, সন্ত্রাস প্রতিরোধে জেলায় পুলিশের বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। যাদের কাজ হবে নিখোঁজ ব্যক্তি ু যুবকদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে তাদের খুঁজে বের করা। সন্ত্রাস প্রতিরোধে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে পুলিশের নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলা।
পাড়া মহল্লায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরে নিয়ে সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি গঠন ছাড়াও পুলিশের বিশেষ টিম গঠন করে টহল জোরদার। চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি, জেলা সদরের মেসগুলোতে বিশেষ নজরদারি নিয়মিত তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন পাবনার জেলা পুলিশ আলমগীর কবির।

স/আর