উইকেট পেলেই যে কারণে স্যালুট দেন ইবাদত

ইবাদত হোসেনের উইকেট উদযাপনের রহস্য বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনেকেরই জানা। এবার তা জেনে গেল ক্রিকেট বিশ্ব।

নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশের ইতিহাস গড়া জয়ের নায়ক মাথা উঁচু করে বললেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে গর্বের কথা।

কিছুদিন আগেও বোলিংয়ের চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় ছিল সম্ভবত ইবাদত হোসেন চৌধুরির উদযাপন। উইকেট নেওয়ার পর খানিকটা মার্চ করে তিনি ঠুকে দেন ‘স্যালুট।’

এমন উদযাপনের কারণ তার আরেকটি পরিচয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্যই শুধু নয়, তিনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীরও সদস্য। ২০১২ সালে যোগ দেন বাহিনীতে।

বিমান বাহিনীর হয়ে খেলতেন ভলিবল। তবে ভালোবাসা ছিল ক্রিকেটের প্রতি। আর ছিল জোরে বল করতে পারার সহজাত সামর্থ্য। ভলিবল খেলোয়াড় ইবাদত স্বপ্ন দেখতেন কোনোভাবে ক্রিকেটের ভুবনে বিচরণের।

২০১৪ সালে ঢাকা প্রথম বিভাগ ক্রিকেটও খেলেন। ২০১৬ সালের পেসার হান্ট কার্যক্রমে অংশ নিয়ে আসরের সবচেয়ে গতিময় বোলার হিসেবে পুরষ্কার পান। একটি ক্যাম্পে ইবাদতকে দেখে মনে ধরে সাবেক পাকিস্তানি পেসার আকিব জাভেদের। বাংলাদেশ দলের পেসারদের নিয়ে কাজ করে যাওয়া এই কোচ চলে যাওয়ার সময় সংশ্লিষ্টদের বলে যান, ইবাদতের দিকে বাড়তি নজর রাখতে।

ঘরোয়া ক্রিকেট, বিসিবি একাদশে নজরকাড়া ইবাদত সুযোগ পান পাকিস্তানি কিংবদন্তি ওয়াকার ইউনিসের সঙ্গে বিপিএলে কাজ করার। ২০১৯ সালের মার্চে মাথায় ওঠে টেস্ট ক্যাপ। তবে হতাশার অধ্যায়ও শুরু সেখান থেকে।

সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটে সুবিধা করতে পারছিলেন না। নিউজিল্যান্ডে এই চলতি সফরের আগে ১০ টেস্ট খেলে উইকেট ছিল স্রেফ ১১টি। বোলিং গড় ছিল ৮১.৫৪। তবে নিউজিল্যান্ডে এবারের সফরে দুর্দান্ত খেলছে বাংলাদেশ দল।

বল হাতে অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স করেছেন ইবাদত হোসেন। প্রথম ইনিংসে ১ উইকেট শিকার করা ইবাদতের গতির শিকার করে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬৯ রানে অলআউট হয় স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। একাই ৬ উইকেট শিকার করেন ইবাদত।

উইকেট শিকারের পর স্যালুট দেওয়া প্রসঙ্গে ইবাদত বলেন, আমি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সেনা। আমি জানি কিভাবে স্যালুট করতে হয়। ভলিবল থেকে ক্রিকেটে আসা একটি লম্বা গল্প। আমি ক্রিকেট উপভোগ করছি এবং বাংলাদেশ দলকে প্রতিনিধিত্ব করার চেষ্টা করছি, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকেও।

তিনি আরও বলেন, গত ২ বছর ধরে আমি ওটিস গিবসনের সঙ্গে কাজ করছি। তিনি সবসময় আমাদের সাহায্য করেন। বাংলাদেশের কন্ডিশনে আমরা খুব একটা সহায়তা পাই না। এখনও আমরা শিখছি। দেশের বাইরে কীভাবে বল করতে হয়, শিখছি। কিভাবে রিভার্স করতে হয়, নিউ জিল্যান্ডে ভালো লেংথে কীভাবে বল করতে হয়। আমি চেষ্টা করেছি টপ অব দা স্টাম্প হিট করতে। সাফল্য এসেছে তাতেই, একটু ধৈর্য ধরতে হয়েছে।

 

সূত্রঃ যুগান্তর