ইলিশ ধরা শরু: জেলেদের মধ্যে কর্মতৎপরতা

আমানুল হক আমান, বাঘা:
রাজশাহীর বাঘার পদ্মায় গতকাল সোমবার ইলিশ ধরা ২২ দিন নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। তারপর থেকে জেলেরা জাল নৌকা নিয়ে ইলিশ ধরতে ফের পদ্মা নদীতে শরু করেছে। ফলে জেলেদের মধ্যে প্রান চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। ১ অক্টোবর থেকে শরু করে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত বাঘার পদ্মা নদীতে ২৬ কিলোমিটার ২২ দিন মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা ছিল।

ফলে এ সময় মাছ ধরা সংরক্ষণ, ক্রয়, বিক্রয় পরিবহন, বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ ছিল। ফলে দীর্ঘদিন বাছ ধরা থেকে জেলেরা বিরত ছিলেন। ফলে সোমবার সকাল থেকে আবার জেলেরা পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। পদ্মা নদীতে মাঝ ধরা শরু হওয়ায় জেলেরা যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। ফলে জেলে, ব্যবসায়ী ও ক্রয়-বিক্রেতাদের মধ্যে কর্মতৎপরতা শরু হয়েছে।

চকরাজাপুর গ্রামের জেলে ওলিউর রহমান বলেন, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর বর্তমানে পদ্মা নদীতে ছোট বড় দিয়ে অর্ধশতাধিক জেলে মাছ শিকার করছেন। বর্তমানে তিনি পদ্মা নদীর মধ্যে প্লেনপাড়া এলাকায় মাছ শিকার করছেন। তিনি সকাল থেকে ১০ কেজি ইলিশ ধরেছেন। এছাড়া সবাই মিলে প্রায় সাড়ে চার থেকে পাঁচ মন ইলিশ ধরেছেন।

আলাইপুর গ্রামের জেলে জহুরুল ইসলাম, চকরাজাপুর গ্রামের আবদুর রব খাঁ, আফজার হোসেন, মহিদুল ইসলাম বলেন, শিকারকৃত মাছের মধ্যে ৭০০ গ্রাম থেকে ৯০০ গ্রাম উজনের মাছ ইতিমধ্যে সাড়ে চারশত টাকা থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। এছাড়া আড়াই’শ গ্রাম থেকে শুরু কওে সাড়ে চার’শ গ্রাম ওজনের মাছ দুই’শ টাকা থেকে আড়াই’শ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। এই মাছগুলো ফড়িয়ারা ক্রয় করে বিভিন্ন এলাকায় হাট-বাজারে ও গ্রামে গ্রামে বিক্রি করে।

বাঘা উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় মোট এক হাজার ৭ জন জেলে রয়েছে। এরমধ্যে নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ৯৩৮ জন। পদ্মা নদীর আশেপাশে চকরাজাপুর নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ১২১ জন, মনিগ্রাম এলাকায় ৬০ জন, পাকুড়িয়ায় ৬০ জন, গড়গড়ি এলাকায় ৪০ জন ও বাঘা পৌর এলাকায় ৩০ জন। মোট ৩১১ জন জেলেকে ২০ কেজি করে ভিজিএফ এর চাল ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে।

বাঘা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, নিষিদ্ধ সময়ে পদ্মা নদীতে মাছ শিকার করার দায়ে এক জেলের সাত হাজার টাকা জরিমানা, দুই জনের জেল দেওয়া হয়েছে। ২২ দিন অভিযান চালিয়ে দেড় লক্ষ মিটার কারেন্ট জাল ও ৮০ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করা হয়। মাছগুলো গরীবদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া জালগুলো জনস্মুখে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। জালগুলোর মূল্য প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা বলে মৎস্য কর্মকর্তা জানান।

 

স/আ