ইমোতেও কথা বলে বধিররা

শাহিনুল ইসলাম আশিক:

নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত সাফাওয়াং কমিউনিটি সেন্টার। বধিরদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর একটি অনুষ্ঠান ছিলো। সেই অনুষ্ঠানে বধিরদের প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ জন বিভিন্ন বয়সের মানুষ অংশগ্রহণ করে। সবাই পোশাক-পরিচ্ছদে বেশ আধুনিক। প্রায় সবার হাতেই স্মার্ট মোবাইল ফোন। র‌্যালি থেকে শুরু করে পুরো অনুষ্ঠানব্যাপি তারা একে অন্যের ছবি তুলছে। কেউ কেউ আবার সেলফিও তুলছেন। তবে তা দেখে চেনার উপায় নেই যে তারা বধির। এদের অনেকেই মোবাইল ফোনে কথার বলার অ্যাপস ‘ইমো’তে কথা বলছেন।

ইমোতে কথা বললেও তারা কিন্তু তা করছেন ইশারা বা ইঙ্গিতে। অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে। তবে দেখে তা বোঝার উপায় নেই। দেখে বোঝার উপায় নেই যে তারা বধির। আধুনিক বিজ্ঞান তাদের এমনটাই সুযোগ করে দিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে তাদের সুশৃঙ্খল পরিবেশ ও কথার আদান-প্রদান দেখে এক ব্যক্তি বলেই ফেললো ‘প্রবাদে আছে, বধির ভাষা বধিই বোঝে।’ সে কথা হতে পারে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে। বধিরা শুধু কথা বলতে পারে না এমন কিন্তু নয়, তারা শুনতেও পায় না। তারা বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে এক অন্যকে তাদের প্রয়োজনীয় কথা-বার্তা আদান প্রদান করে থাকে। তারা শুধু মুখোমুখি অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমেই কথা বলে না। বধিররা দূর দূরান্তেও প্রিয়জনের সঙ্গে অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে কথা বলে ‘ইমো’ এর মাধ্যমে।

এসময় কথা হয় নওগাঁ থেকে আসা ব্যক্তি রিংকুর সঙ্গে। তিনিও বধির। রিংকু প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কথা ইমোতে তার এক বধি বন্ধুকে জানায়। শুধু প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রচারই না, অনুষ্ঠান সম্পর্কে তার ভালো লাগার সব অনুভর্তি সে তুলে ধরে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে।

অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে কথা হয় রিংকুর সঙ্গে। রিংকুর অনুষ্ঠানটি অনেক ভালো লেগেছে। রিংকু এই অনুষ্ঠানে বসে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেন। অনুষ্ঠান সম্পর্কে তার ভালোলাগার কথা জানায় অন্যদের।

রিংকু খাতায় লিখে জানান, তিনি তিন বছর আগে মোবাইল কিনেছেন। কিছুদিন আগে স্মার্ট মোবাইল ফোন কিনেছেন। তার পরে থেকে তিনি ‘ইমো’ এর মাধ্যমে ভিডিও কলের সাহায্যে কথা বলেন। তাদের অনেকেই স্মার্ট মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। ইমোতেও কথা বলেন। শুধু তাই নয়, তাদের সাংগঠনিক সকল কাজ ছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কথা আদান প্রদান হয় ইমোতে।

 

স/আ