ইন্টারনেট মানুষকে যতটা না একত্র করেছে তার চেয়ে বেশি বিভাজন করেছে : ড. আনিস রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক :
‘আমরা সবাই এখন ডিজিটাল কলিনিয়ালিজমের মধ্যে আছি। ইন্টারনেট মানুষকে যতটা না একত্র করেছে তার থেকে বেশি বিভাজনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের মনে রাখতে হবে ভাইরাল হওয়া বিষয়গুলো অনেক ক্ষেত্রে পজিটিভ, তবে বৃহৎ পরিসরে নেগেটিভ।’

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন বিভাগের টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ড. আনিস রহমান বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের উদ্যোগে ‘ডিজিটাল বাস্তবতা ও সংকট’ শীর্ষক বিশেষ বক্তৃতায় এই মন্তব্য করেন।

আজ বেলা ১১ টায় বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা ভবনে এই বিশেষ বক্তৃতা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জার্নালিজম, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের কোঅর্ডিনেটর জনাব শাতিল সিরাজ।

বিশেষ বক্তৃতায় ড. আনিস রহমান বলেন, আমরা সবাই এখন ডিজিটাল কলোনিয়ালিজমের মধ্যে আছি। ইন্টারনেট মানুষকে যতটা না একত্র করেছে, তার থেকে বেশি বিভাজনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের মনে রাখতে হবে ভাইরাল হওয়া বিষয়গুলো অনেক ক্ষেত্রে পজিটিভ, তবে বৃহৎ পরিসরে নেগেটিভ। কোনো বিষয় সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার আগে একটু থামুন, তারপর তার উৎস খুঁজে বের করুন।

ড. আনিস আরো বলেন, ভাইরালেটির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অস্ত্র হচ্ছে ফ্যাক্ট-চেকিং। সাংবাদিকতার শিক্ষার্থী হিসেবে ফ্যাক্ট-চেকিং করাটা অতি জরুরি। আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্টসের বিপরীতে মানুষের এখন মোরাল ইথিকস নিয়ে কাজ করার সময় এসেছে। আসলে বৃহত্তর অর্থে ডিজিটাল মিডিয়া মানুষের মধ্যে প্রতিনিয়ত গ্যাপ তৈরি করছে। সোশ্যাল মিডিয়া এলগরিদম মডেল আমাদেরকে সব সময় এগুলোর মধ্যে ব্যস্ত রাখে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও বাস্তবায়ন করতে হলে সকলকে সৎ ও দায়িত্বশীল হতে হবে।

এই বিশেষ বক্তৃতা অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রশ্ন উত্থাপন করেন। এসব প্রশ্নের জবাবে ড. আনিস বলেন, মানুষের মধ্যে আন্তর্ব্যক্তিক যোগাযোগ বাড়াতে হবে। সরকার ও ব্যক্তিগতভাবে সবাইকেই সচেতন হয়ে নিজস্ব তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াকে বুঝতে ক্রিটিক্যাল থিংকার হতে হবে এবং সেলফ কন্ট্রোল নিয়ে এগুলো মোকাবেলা করতে হবে। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত করে গড়ে তোলার এখনই সময়। আর এ জন্য শিক্ষক-গবেষকদের নিয়মিত সেমিনার-সিম্পোজিয়াম আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সক্ষম করে গড়ে তুলতে হবে।

বিশেষ বক্তৃতা অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছালমা জান্নাত, প্রভাষক রমজান আলী, প্রভাষক মো. সাজ্জাদ হোসেন, প্রভাষক মুহাম্মদ রাকিব হোসাইন ও প্রভাষক তন্দ্রা মন্ডল। এছাড়াও জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দও এতে অংশগ্রহণ করেন।