ইউল্যাবের নিহত ছাত্রীর বান্ধবী ৫ দিনের রিমান্ডে

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) ছাত্রী ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় নিহতের বান্ধবী ফারজানা জামান নেহার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার এ আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সাজেদুল আদালতে দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। এ সময় আদালতে হাজির ছিলেন ফারজানা জামান নেহা। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে আসামিকে নিয়ে অভিযান পরিচালনার জন্য রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, ‘আসামি ভুক্তভোগীকে দাওয়াত দিয়ে মদ পান করিয়ে ধর্ষণে সহযোগিতা করেন। নেহা ঘটনার মূলহোতা। মামলা এখনো রহস্যে ঘেরা। নেহা কোনোভাবে ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না। তিনি ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত।’

আসামির পক্ষে অ্যাডভোকেট এম এ বি এম খায়রুল ইসলাম (লিটন) রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। তিনি বলেন, ‘আসামি তো আর ধর্ষণ করতে পারে না। ধরে নিলাম, আসামি নাচ-গান করে। কিন্তু মদ সরবরাহ করেছে তো রেস্টুরেন্টের লোকজন। আর মদ খাওয়ানো তো ধর্ষণের মধ্যে পড়বে না। রিমান্ডের যৌক্তিকতা নেই। কেন রিমান্ড চাওয়া হলো তা বোধগম্য নয়। ময়নাতদেন্ত মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। আর রেস্টুরেন্টের মালিক ভালো করে জানতে পারেন তারা কী মদ দিয়েছেন। আসামির রিমান্ড বাতিলের আবেদন করছি। একান্ত প্রয়োজন হলে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।’

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত নেহার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে নেহাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মামলাটিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সাফায়েত জামিল নামে এক আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি ওই শিক্ষার্থীর দুই বন্ধু মর্তুজা রায়হান চৌধুরি (২১) ও নুহাত আলম তাফসীরের (২১) পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। গত ৩১ জানুয়ারি চারজনকে আসামি করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন ওই তরুণীর বাবা। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও একজনকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৮ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় মর্তুজা রায়হান ওই তরুণীকে নিয়ে মিরপুর থেকে আসামি আরাফাতের বাসায় যান। আরাফাতের বাসায় স্কুটার রেখে আরাফাত, ওই তরুণী ও রায়হান একসঙ্গে উবারে করে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ব্যাম্বুসুট রেস্টুরেন্টে যান। সেখানে আগে থেকেই আরেক আসামি নেহা এবং একজন সহপাঠী উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আসামিরা ওই তরুণীকে জোর করে ‘অধিক মাত্রায়’ মদপান করান।

মামলার এজহারে আরও বলা হয়, মদ্যপানের একপর্যায়ে ভুক্তভোগী তরুণী অসুস্থ বোধ করলে রায়হান তাকে মোহাম্মদপুরে তার এক বান্ধবীর বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে নুহাতের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তরুণীকে একটি রুমে নিয়ে ধর্ষণ করেন রায়হান। এ সময় রায়হানের বন্ধুরাও রুমে ছিল।

ধর্ষণের পর রাতে ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে বমি করলে রায়হান তার আরেক বন্ধু অসিম খানকে ফোন দেন। সেই বন্ধু পরদিন এসে তরুণীকে প্রথমে ইবনে সিনা ও পরে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করেন। দুই দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর ওই তরুণী মারা যান।

সূত্র : আমাদের সময়