ইউরোপে প্রবাসী বাংলাদেশিদের রমজান শুরু আজ থেকে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ইউরোপে আজ থেকে মুসলমানদের সবচেয়ে পবিত্র মাস রমজান শুরু হচ্ছে। ইউরোপে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ লক্ষ, ইতালিতে প্রায় ২ লক্ষ, স্পেনে প্রায় ৩০ হাজার, ফ্রান্সে প্রায় ২৫ হাজার বাংলাদেশিসহ পুরো ইউরোপ জুড়ে প্রায় ১০ দশ লক্ষাধিক বাংলাদেশি রমজান পালন করবে।

ইউরোপের রাষ্ট্রগুলো মুসলমান সংখ্যালঘু হওয়া সত্ত্বেও রাষ্ট্রের সহযোগিতায় তৈরি হওয়া মসজিদে তারাবির নামাজ থেকে শুরু করে ইফতার অনুষ্ঠানের কাজসহ ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো প্রায় সহজেই চালিয়ে যেতে পারে।

তবে কর্মস্থলে রমজান মাসের জন্য বিশেষ রুটিন না থাকায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যারা ইফতার বা সেহেরির সময় কাজের মধ্যে থাকেন তাদের জন্য রোজা পালনে সমস্যা হয়।

এ জন্য অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি আবার প্রতি বছরের এক মাসের ভেকেশন হিসেবে রোজার মাসকে নির্ধারণ করে নেয় এবং পরিবার নিয়ে একমাস আন্দন নিয়ে রোজাব্রত ও ঈদুল ফিতর পালন করেন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটা বড় সংখ্যা ইউরোপে রোজাব্রত পালন করার কারণে ইউরোপের দেশগুলোতে এ মাসকে ঘীরে কৌতুহল থাকে খোদ ইউরোপিয়ানদেরও। তাই অভিবাসীদের মধ্যে যারা রোজা পালন করেন, তাদের কাছে জানার চেষ্টা করেন রোজার নিয়মকানুন, রোজার শিক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে।

এবছরের রোজা ইউরোপে শুরু হচ্ছে সামার শুরু হওয়ার সময়ে। তাই দিনের অংশ বড় হবে এবং গরম থাকবে। যারা কর্মস্থলে শক্ত কাজ করেন, তাদের জন্য রোজা তুলনামূলকভাবে সহজ হবে না বলে মনে করছেন অনেকে। স্পেনের বার্সেলোনায় থাকেন চাঁদপুরের মতলের আমিনুল হক। তাকে রমজানের প্রস্তুতি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘আমি একটা রেস্টুরেন্টে কাজ করি প্রতিদিন ১১ ঘন্টা। আমার ইফতারে সময় কাজ থাকবে। এছাড়া পরিশ্রমের কাজ বিধায় কারণে প্রচুর ঘেমে পানিশূন্যতা হয়ে যায়। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হয়তো শুধু ছুটির দিনগুলোতেই রোজা রাখতে পারবো। এমন পরিস্থিতির সম্মুখিন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশিই হচ্ছেন।

দিনের অংশের তারতম্যের কারণে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়ার মুসমানদের দীর্ঘসময় (২০ ঘন্টা ৪৫ মিনিটি) ধরে রোজা রাখতে হবে। এছাড়া আইসল্যান্ডে ১৯ ঘন্টা, সুইডেনের লুলেয়াতে ১৯ ঘন্টা, নরওয়ে, ডেনমার্ক, স্কটল্যান্ডে ১৮ ঘন্টা, ইউকেসহ জার্মানির বের্লিনে ১৮ ঘন্টা, ফ্রান্সের প্যারিসে ১৭ ঘন্টা, ইতালিসহ স্পেনে ১৬ ঘন্টা সময় ধরে রোজা পালন করতে হবে।

রোজা উপলক্ষে বাংলাদেশিসহ মুসলিম কমিউনিটি অধ্যুষিত ইউরোপের শহরগুলোতে রোজা উপলক্ষে বিশেষ উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়। বাংলাদেশি ও পাকিস্তানিসহ এ হালাল রেস্টুরেন্টগুলোতে ইফতার অনুষ্ঠানের জন্য আগে থেকেই রিজার্ভেশন শুরু হয়ে যায়। বাংলাদেশি সংগঠনগুলোর আয়োজনে প্রতিদিনই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠান থাকে। ইউরোপে ছড়িয়ে থাকা মসজিদগুলোতে আদায় করা হয় তারাবির নামাজসহ ইসলামী বিভিন্ন অনুষ্ঠান।