ইউরোপীয় পার্লামেন্টের পুরস্কারের তালিকা থেকে বাদ পড়লেন সু চি

মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন মেনে নেয়ায় দেশটির ডি-ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চিকে ‘সাখারভ প্রাইজ কমিউনিটি’র তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

১৯৯০ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার এক বছর আগে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রীকে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট এই পুরস্কার দেয়। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকারবিষয়ক সর্বোচ্চ এই পুরস্কারের তালিকা থেকে বাদ পড়ায় এখন থেকে পুরস্কারজয়ীদের কোনও অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবেন না অং সান সুচি।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলেছে, ১৯৯০ সালের আগে গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের জন্য অং সান সু চিকে এই পুরস্কার দেয়া হয়েছিল। পুরস্কারটি প্রত্যাহার করে নেয়া সম্ভব না হওয়ায় বৃহস্পতিবার জয়ীদের তালিকা থেকে সু চিকে বাদ দেয়া হয়েছে; যা ইউরোপীয় পার্লামেন্টের শক্তিশালী নিষেধাজ্ঞা।

২০১৭ সালের অক্টোবরে মিয়ানমারে রাখাইনে রক্তাক্ত সামরিক অভিযান পরিচালনা করে দেশটির সামরিক বাহিনী। সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও পোড়াও থেকে বাঁচতে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম প্রতিবেশি বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।

জাতিসংঘ বলছে, রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যার উদ্দেশে রক্তাক্ত অভিযান পরিচালনা করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তবে দেশটির সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও সহিংস অভিযানের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের দমনে ও দেশের সুরক্ষায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে সেনাবাহিনী।

গত বছরের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ৩০ মিনিটের ভাষণে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি নিজ দেশের সেনাবাহিনীর অভিযানের পক্ষে সাফাই গেয়ে গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেন। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে প্রায় ৩ হাজার ৩৭৯ শব্দের সেই সাফাইয়ে রোহিঙ্গা শব্দটি একবারের জন্যও উচ্চারণ করেননি তিনি।

সূত্র: আলজাজিরা।