পাকিস্তান দলে কোন্দল : খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন সরফরাজ!

ইংল্যান্ড সফরে টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি- উভয় ফরম্যাটেই পাকিস্তান দলে প্রধান উইকেটরক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তরুণ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ান। সাবেক অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ দলে থাকলেও ছিলেন সাইডবেঞ্চে।

সরফরাজ আহমেদকে কেন সাইডবেঞ্চে বসিয়ে রেখে পানি টানানোর কাজ করানো হয়েছে- তা নিয়ে ক্ষেপেছিলেন শোয়েব আখতারের মত সাবেকরা।

সেই সরফরাজ পুরো সফরে খেলেছেন একটি মাত্র ম্যাচ। পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্টই তাকে খেলাতে চেয়েছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একেবারে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে। তবে সেই ম্যাচে আর খেলতে রাজি ছিলেন না সরফরাজ। যদিও শেষ পর্যন্ত খেলেছেন। কিন্তু তিনি যে খেলতে চাননি, সে বিষয়টা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর এখন তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছেন পাকিস্তানের সাবেক এই অধিনায়ক।

পাকিস্তানের সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর চর্চা শুরু হয়েছে, তাদের দেশের ক্রিকেট দলের মধ্যে কোন্দল তৈরি হয়ে গেছে। ঘরের আগুনে পুড়ছে পাকিস্তান। যে কারণে ইংল্যান্ড থেকে কোনো সাফল্য নিয়ে ফিরতে পারেনি তারা।

তবে, এ নিয়ে কথা বলেছেন কোচ মিসবাহ-উল হক এবং সরফরাজ আহমেদ- দু’জনই। ইএসপিএন ক্রিকইনফো জানাচ্ছে, সরফরাজ চিন্তিত ছিলেন, তার পুরো সফরের বিচার-বিবেচনা করা হবে শুধুমাত্র ওই একটি ম্যাচ দিয়েই। সুতরাং, খেলার চেয়ে না খেলাই ভালো। এ কারণেই শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন তিনি।

তবে শেষ পর্যন্ত টিম ম্যানেজমেন্ট এবং অধিনায়ক বাবর আজম বোঝাতে সক্ষম হন সরফরাজকে। তারা নিশ্চয়তা দেন, শুধুমাত্র এই একটি ম্যাচ দিয়ে সরফরাজকে বিচার করা হবে না। কোচ এবং অধিনায়কের কথায় আশ্বস্ত হয়ে খেলতে নামেন সরফরাজ। যদিও ব্যাট করতে নামতে হয়নি তাকে এবং গ্লাভস হাতে ক্যাচও ধরেননি কিংবা স্ট্যাম্পও ভাঙেননি। তবে, একটি রানআউট করিয়েছেন।

গ্লাভস হাতে ইংল্যান্ড সফরে পাকিস্তানের হয়ে টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টিতে বেশ দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। বিশেষ করে টেস্টে। তবে, ব্যাট হাতেও তিনি ছিলেন দারুণ পারফরমার। শুধুমাত্র শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি খেলেননি তিনি। তার পরিবর্তে খেলানো হয়েছে সরফরাজকে।

পাকিস্তান কোচ মিসবাহ-উল হক বলেন, ‘সরফরাজ খেলতে অস্বীকৃতি জানাননি। শুধু চেয়েছিলেন, একজন খাঁটি রিজার্ভ খেলোয়াড় হিসেবে থাকতে। সাইডবেঞ্চ শক্তিশালী হলে দলেরই উপকার। যে কারণে শেষ ম্যাচটা খেলেছেন তিনি।’

সরফরাজের চিন্তার সঙ্গে একমত মিসবাহ। তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি এমন চিন্তা করতে (খেলতে না চাওয়া) বাধ্য করেছিল। এটা সত্য, যে কেউ চিন্তা করবে মাত্র একটি ম্যাচ খেলে নিজের পারফরম্যান্সের মূল্যায়ন না করাতে। সে কারণেই সরফরাজ খেলতে চায়নি। বাবর, ইউনিস খান (ব্যাটিং কোচ) এবং আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি, বুঝিয়েছি যে, কোনো ভিন্ন চাপ না নিয়ে তার অন্তত একটি ম্যাচ খেলা উচিৎ। এরপরই সে রাজি হয়েছে খেলার জন্য।’

খেলতে রাজি ছিলেন না- এটা ফাঁস হওয়ার পর যখন তুমুল সমালোচনা তৈরি হয়েছে, তখন এ নিয়ে কথা বলেছেন সরফরাজ নিজে। তিনি টুইট করে জানিয়ে দেন, এখনও ক্রিকেট খেলতে খুব পছন্দ করেন। পাকিস্তানের হয়ে যে কোনো পরিস্থিতিতে, যে কোনো ম্যাচে মাঠে নামতে রাজি রয়েছেন।