ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় কর্মী মারা গেলে পাবেন ১০ লাখ টাকা

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে প্রতিপক্ষের সঙ্গে সহিংসতায় জড়িয়ে কোনো সমর্থক যদি মারা যান তবে তাঁর পরিবারকে ১০ লাখ টাকা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন এক চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। রীতিমতো ইনস্যুরেন্স কম্পানির মতো করে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, হাসপাতালে গেলে চিকিত্সা ও সংসার খরচের দায়িত্ব নেবেন ওই প্রার্থী।

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী সাইফুল ইসলাম যুবরাজ এই ঘোষণা দেন। নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক কর্মকাণ্ড শুরুর আগেই তিনি গত ২৫ ও ২৬ অক্টোবর নিজ বাড়িতে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে এই ঘোষণা দেন। গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর এ বক্তব্য ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, সাইফুল ইসলাম বলছেন, ‘আমার নির্বাচন করতে গিয়ে যদি কোনো কর্মী মারা যান, তাঁর পরিবারকে ১০ লাখ টাকা দেওয়া হবে। আর যদি খুনাখুনি-বাইড়াবাইড়ি করে হাসপাতালে ভর্তি থাকেন, তাহলে আমি সম্পূর্ণ খরচ বহন করব, তাঁর সংসারের খরচও আমি চালাব।’

সিরাজদিখানের ১৪টি ইউনিয়নে আগামী ২৩ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ২৯ নভেম্বর, প্রত্যাহারের শেষ সময় ৬ ডিসেম্বর এবং প্রতীক বরাদ্দ হবে ৭ ডিসেম্বর। এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কে পাচ্ছেন, তা এখনো নিশ্চিত হয়নি।

সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এই নির্বাচন পারপাসে লোক মারা যেতে পারে। আমার কর্মী যাঁরা তাঁদের একটা লিস্ট (তালিকা) আছে। এই লিস্টটা করতাছি, এই লিস্টটা আমার কাছে আছে।’

সাইফুল ইসলাম বলেন, ১৯৯৬ সালে রাঙ্গামাটিয়া নামের একটি ভোটকেন্দ্রে তিনজন লোক গুলিতে নিহত হন, কিন্তু তাঁদের পাশে কেউ দাঁড়ায়নি। তিনি দাবি করেন, সে কারণে আসন্ন নির্বাচনে কর্মীদের জন্য টাকা ও সহযোগিতা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। এতে তাঁর কোনো অন্যায় হয়নি।

ইউনিয়নের ভোটার, আওয়ামী লীগের অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশী ও অন্য প্রার্থীরা সাইফুলের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী এইচ এম নজরুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘সাইফুল চেয়ারম্যান যে বক্তব্য দিয়েছেন, সামাজিক মাধ্যমে কয়েক দিন ধরেই সেটা ঘুরছে। এটা আমিও দেখেছি। তিনি উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এতে নির্বাচনে সহিংসতা হতে পারে।’

সিরাজদিখান থানার ওসি মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন বলেন, এ রকম কোনো কথা বলে থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘এমন বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। এখনো কেউ অভিযোগ করেনি, করলে ব্যবস্থা নেব।’

উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ