নৌকায় ভোট দেওয়ায় ৭ পরিবার একঘরে!

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় সদ্য অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার অপরাধে সাতটি পরিবারকে একঘরে করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাঁদের স্বজনরা ওই পরিবারগুলোর সঙ্গে সামাজিকভাবে গ্রামের অন্যদের মেলামেশা না করারও নির্দেশ দিয়েছেন। কেউ তাঁদের সঙ্গে কথাবার্তা বললে তাঁদেরকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। তবে একঘরে যাঁরা করেছেন তাঁরা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

গত ১১ নভেম্বর দোহালিয়া ইউপি নির্বাচনের ভোট নেওয়া হয়। ভোটে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন আনোয়ার মিয়া। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন দুইজন। একজন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি নূর মিয়া। অন্যজন উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা শামীমুল ইসলাম শামীম। ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন শামীমুল ইসলাম শামীম।

নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় নূর মিয়া ও তাঁর সমর্থকদের ক্ষোভ গিয়ে পড়ে রাজন গ্রামের ওই সাত পরিবারের ওপর। নূর মিয়ার নির্দেশে ওই সাত পরিবারকে গত শনিবার রাতে একঘরে করে রাখার সিদ্ধান্ত হয়। রাজনপুর গ্রামের খোকন মিয়ার মাঠে সৌদি আরবপ্রবাসী ছমির উদ্দিনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইউপি নির্বাচনে আনোয়ার মিয়াকে নৌকা প্রতীকে ভোট দেয় রাজনপুর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে সফিক মিয়া (৩৫), মৃত হেলাল আহমদের ছেলে জুবের হেলাল (৪০), কুতুব উদ্দিনের ছেলে হাবিবুর রহমান (৩৫), বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসন্দর আলীর ছেলে লুত্ফর রহমান (২৮), আয়াজ আলীর ছেলে আকরামুল হক সোহেল, আরশ আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন মিষ্টার (৪৫) এবং চান মিয়ার ছেলে আলীরাজ সানীয়া (২৫)সহ সাতটি পরিবার।

ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেন মিষ্টার বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থীকে ভোট না দেওয়ায় আমাদের সঙ্গে সকলের কথাবার্তা বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাই।’ বৈঠকে উপস্থিত ওই গ্রামের গিয়াস উদ্দিন বলেন, গ্রাম পঞ্চায়েতবাসীর সিদ্ধান্ত ঠিক আছে। তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বললে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।

সালিসের আয়োজক প্রবাসী ছমির উদ্দিন এ ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, ‘একঘরে করে রাখার বিষয়টি সঠিক নয়। তাদের ভালো-মন্দে কেউ যাতে অংশ না নেয় এ জন্য বলে দেওয়া হয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থী নূর মিয়ার মোবাইলে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাংশু কুমার সিংহ বলেন, ‘এমন ঘটনা শোনার পরই আমরা সবাইকে ডেকে এমন কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দিয়েছি।’

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ