আলফ্রেড সরেন হত্যা : ১৬ বছরেও বিচার শেষ হয়নি

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

আদিবাসী স্বীকৃতি ও সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠীর ভূমি অধিকারের আন্দোলনের নেতা আলফ্রেড সরেনের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার।

 

১৬ বছরেও হত্যা মামলাটির বিচার শেষ না হওয়ায় আদৌ ন্যায় বিচার পাবেন কি না তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন আলফ্রেড সরেনের পরিবার ও আদিবাসী নেতারা।

 

এদিকে, হত্যাকারীরা এখনও আদিবাসীদের উচ্ছেদ ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

মামলা বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০০ সালের ১৮ আগস্ট নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার বলিহার ইউনিয়নের ভীমপুরে ওই ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান হাতেম আলী ও শীতেষ ভট্টাচার্যের ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা আলফ্রেড সরেনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর তাঁর লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয়। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের কার্যালয় ঘেরাওসহ সারাদেশে আদিবাসী সংগঠনগুলো ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলেন।

 

বিচারের ব্যাপারে আলফ্রেড সরেন হত্যা মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী মহসীন রেজা জানান, আলফ্রেড সরেন হত্যার ঘটনায় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা ও জননিরাপত্তা আইনে দুটি মামলা হয়। চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০১ সালে জননিরাপত্তা আইন বাতিল করলে আসামিরা হাইকোর্টে মামলাগুলো খারিজের আবেদন করেন। হাইকোর্ট তখন জননিরাপত্তা আইনে করা মামলাটি খারিজ করে দেন। ওই খারিজের বিরুদ্ধে বাদীপক্ষ আপিল বিভাগে পিটিশন দাখিল করে। খারিজের আবেদন বাতিল করে আপিল বিভাগ মামলাটি আবার হাইকোর্ট বিভাগে পুনঃশুনানির জন্য পাঠান। বর্তমানে মামলাটি হাইকোর্টে ১২ বছর ধরে শুনানির অপেক্ষায় ঝুলে আছে। রাষ্ট্রপক্ষের গাফিলতির কারণে হাইকোর্টে মামলাটি এত বছর ধরে ঝুলে রয়েছে বলে মহসিন রেজা অভিযোগ করেন।

 

আলফ্রেড সরেন হত্যা মামলার বাদী ও তাঁর বোন আদিবাসী নেত্রী রেবেকা সরেন বলেন, ‘আমার ভাইকে দিন-দুপুরে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হলেও ১৬ বছরেও বিচার পাইনি। এত বছরেও যখন বিচার পাইনি, এখন আদৌ বিচার পাব কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছি। এর জন্য রাষ্ট্রই সম্পূর্ণরূপে দায়ী। আসামিরা এখনো তাদের রক্ষচক্ষু দেখিয়ে যাচ্ছে। আদিবাসীদের উচ্ছেদ ও মামলা তুলে নেওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।’

 

জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন বলেন, ‘আদিবাসীদের ওপর অত্যাচার ও নীপড়নের বিচার না হওয়ায় আদিবাসীরা আইন ও রাষ্ট্রের প্রতি ক্রমেই আস্থা হারিয়ে ফেলছে। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় হাইকোর্টে রিট করে মামলা বিলম্ব করছে। শুধু এই হত্যা মামলা নয়, নওগাঁতে এ ধরনের আরো ১১টি হত্যা মামলা রয়েছে যেগুলো বছরের পর বছর ধরে ঝুলে রয়েছে। বিলম্বের কারণে এ সব হত্যা মামলার আদৌ বিচার হবে কি না, তা নিয়ে আমরা শঙ্কায় আছি।’

সূত্র: এনটিভি