আমার কারণে রুচি নষ্ট হলে আমাকে মেরে ফেলেন: হিরো আলম

সিল্কসিটি বিনোদন ডেস্ক :

‘রুচির দুর্ভিক্ষে হিরো আলমের উত্থান হয়েছে’- সম্প্রতি এমন মন্তব্য করেছেন অভিনয়শিল্পী, নাট্যনির্দেশক ও সংগঠক মামুনুর রশীদ। তার এমন বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল আলম (হিরো আলম)।

সোমবার (২৭ মার্চ) রাতে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে তিনি মামুনুর রশীদের উদ্দেশে বলেন, যেহেতু আমার কারণে দেশের মানুষের রুচি নষ্ট হচ্ছে, আপনি ইচ্ছা করলে আমাকে তৈরি করতে পারতেন। তাহলে মানুষের রুচি নষ্ট হত না। বাংলাদেশে ১৮ কোটি মানুষ, শুধু হিরো আলমের কারণে যদি সবার রুচি নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে হিরো আলমকে আপনারা মেরে ফেলে দেন।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে মামুনুর রশীদ বলেন, ‘এখন রুচির দুর্ভিক্ষ চলছে। এর মধ্য দিয়েই হিরো আলমের উত্থান হয়েছে। ’ বক্তব্যটি সামাজিকমাধ্যমে তীব্র আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।

সোমবার নাট্য দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি আবারো একই কথা বলেন। মামুনুর রশীদ বলেন, আপনারা যারা স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহার করেন, তারা দেখেছেন, আমার একটি উক্তি নিয়ে হাজার হাজার কমেন্ট হচ্ছে। আমি বলেছি, রুচির দুর্ভিক্ষ চলছে- সেই দুর্ভিক্ষের মধ্য দিয়ে হিরো আলমের উত্থান হয়েছে। এই উত্থান জাতির জন্য আমাদের সংস্কৃতির জন্য ভয়ংকর। এই উত্থানের মূলে আমাদের রাজনীতি আছে, আমাদের মিডিয়ার একটা বড় ভূমিকা আছে।

পরে ফেসবুক লাইভে জবাব দিতে এসে হিরো আলম বলেন, হয় হিরো আলমকে মেরে ফেলে দেন; নয়তো এমন কাউকে কোনো লোককে আপনারা তৈরি করে দেখান, যে কাজ করলে রুচি ফিরে আসবে। নিজের যোগ্যতায়, পরিশ্রম করে আলম থেকে হিরো আলম হয়েছি। রুচিবান লোকেরা হিরো আলম তৈরি করেন নাই। হিরো আলমকে মেরে না ফেললে আপনারা থামাতে পারবেন না।

মামুনুর রশীদের উদ্দেশে আলম বলেন, মামুনুর রশীদ স্যার, আপনি আমাকে তৈরি করুন। বাংলাদেশের যারা বড় বড় কথা বলছে, তারা সবাই আপনাকে ধুয়ে দেবে। তারা বলবে, ‘মামুনুর রশীদের মতো লোক হিরো আলমকে নিয়ে নাটক বানাচ্ছে। ’

হিরো আলম প্রশ্ন রাখেন, তাহলে আমাকে তৈরি করবে কে?

দেশের রুচির পরিবর্তন ‘কোনোদিনই হবে না’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, যারা রুচিবান লোক, তারা রুচিসম্পন্ন লোক তৈরি করবে না। কারণ আপনারা তেল ওয়ালা মাথায় তেল দেবেন। যাদের টাকা আছে তাকেই দাম দেবেন। যার সুন্দর চেহারা আছে তাকেই দাম দেবেন।

হিরো আলম তার সমালোচকদের উদ্দেশে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুক লাইভে বলেন, এফডিসিতে বড় বড় আর্টিস্টরা আমার সমালোচনা করেন। কেন রে ভাই, আমাকে নিয়ে কেন কথা বলেন? আমি কোনদিন কোন পরিচালকের কাছে গিয়েছি? কোন শিল্পীর হাতে পায়ে ধরে বলেছি যে আমাকে সুযোগ করে দেন?

লাইভে আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, আপনারা যদি এসব করতে থাকেন, এত লোকের সামনে বলতেছি, একদিন লাইভে থাকা অবস্থায় আত্মহত্যা করে পৃথিবী থেকে চলে যাব। আপনাদের, এই দুনিয়া, সমাজকে রুচির দায় থেকে মুক্ত করে যাব।

পরক্ষণেই তিনি বলেন, আপনারা এতোই সমালোচনা করেন, হিরো আলমের এখনকার কাজগুলো দেখেন। হিরো আলমের কাজগুলো রুচিসম্মত আছে কি না? আমি নিজে কামাই করে নাটক বানাই, সিনেমা বানাই। আমি কত কামাই করি যে রুচিসম্মত কাজ দিতে পারব? সেই অর্থ সম্পদ আমার আছে? আপনারা আমাকে মেনেই নিতে চান না। এতে আমার কী করণীয় আছে?

সমালোচনাকারীদের নিজেদের রুচি পাল্টানোর পরামর্শ দিয়ে হিরো আলম বলেন, আমি সুন্দরবন নাটক দেখার পর থেকে মামুনুর রশীদ স্যারকে শ্রদ্ধা করি। তার মতো এতো বড় একজন অভিনেতা আমাকে নিয়ে কথা বলেছেন এটা আমার জন্য সৌভাগ্য। সে নেগেটিভ বলুন আর পজেটিভ বলুক। আমি তাকে সাধুবাদ জানাই যে আপনার মতো লোক আমাকে চেনে। আমি তো মনে করেছিলাম আপনারা এতো বড় অভিনেতা আমাকে চেনেন না।