আপনি কি কুমারী!

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

কেউ কুমারী কি না বা কোনো পুরুষের একাধিক স্ত্রী আছেন কি না, সেটা তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু চাকরি করতে গেলে এবার সেটা কর্তৃপক্ষকে জানাতেই হবে। নইলে হাত ফসকে যেতে পারে কাঙ্ক্ষিত চাকরি।

এমন অদ্ভুত নিয়ম চালু করেছে ভারতে বিহারের রাজধানী পাটনায় অবস্থিত ইন্দিরা গান্ধী ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (আইজিআইএমএস) হাসপাতাল।

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়, আইজিআইএমএস হাসপাতালে সদ্য চাকরি পাওয়া চিকিৎসক, নার্সসহ অন্য কর্মীদের জন্য এ-সংক্রান্ত ফরম রেখেছে কর্তৃপক্ষ। ওই ফরমেই এ ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য লিখিতভাবে জমা দিতে হবে। এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ফরমে পুরুষ কর্মীদের জানাতে হবে, তাঁদের একজনের বেশি স্ত্রী আছে কি না। আর নারী কর্মীদের জানাতে হবে, তাঁরা কুমারী কি না? যাকে বিয়ে করেছেন তাঁর আর কোনো স্ত্রী আছেন কি না? ওই স্বামী অন্য স্ত্রীর সঙ্গে থাকেন কি না?

এ বিষয়ে আইজিআইএমএসের উপতত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক মনিশ মণ্ডল বলেন, ‘১৯৮৪ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের বিয়েসংক্রান্ত ঘোষণাপত্র দিতে হয়। এটা নতুন কোনো নিয়ম নয়। দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সের (এআইআইএমএস) চাকরিবিধি অনুযায়ী সব কর্মীকেই এই ঘোষণাপত্র পূরণ করতে হয়। যদি কখনো এআইআইএমএস এই বিধি পরিবর্তন করে, তাহলে আমরাও তা পরিবর্তন করে নেব।’

এসব বিতর্কিত প্রশ্ন করার ব্যাখ্যা হিসেবে মনিশ মণ্ডল বলেন, কোনো কর্মী যেন ব্যক্তিগত জীবনে কোনো ভুল কাজ না করেন, সে কারণেই ওই প্রশ্নগুলো জানতে চাওয়া হয়। তবে তিনি বলেন, ঘোষণাপত্রে ‘আপনি কুমারী কি না’ এই প্রশ্নটি রাখা ঠিক হয়নি।

মনিশ মণ্ডল বলেন, ‘আসলে ঘোষণাপত্রে কর্মী বিবাহিত না অবিবাহিত, সেটা জানানোই মুখ্য। আমার ধারণা অবিবাহিত লেখার বদলে ওখানে ভুল করে কুমারী শব্দটি লেখা হয়েছে।’

ইন্ডিয়া টিভি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আইজিআইএমএস কর্তৃপক্ষ।

প্রতিষ্ঠানটির চিকিৎসক এস কে শাহি বলেন, ব্যক্তিগত তথ্যের ফরম বা ঘোষণাপত্রে কেউ হয়তো ‘দুষ্টুমি’ করে কুমারী শব্দটি লিখে দিয়েছেন। তবে এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আইজিআইএমএস ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সের অধিভুক্ত। এর বার্ষিক বাজেট ১৩৩ কোটি রুপিরও বেশি। রাজ্যে এটাই সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি ক্যানসার-আক্রান্ত এক শিশুর মরদেহ বহনে অ্যাম্বুলেন্স-সেবা দিতে অস্বীকৃতি জানায় কর্তৃপক্ষ। পরে পাঁচ বছর বয়সী শিশুর লাশ নিজের কাঁধে করে বয়ে নিয়ে যান তার বাবা। এ ঘটনায় বেশ বিতর্কিত হয় প্রতিষ্ঠানটি।

সূত্র: প্রথম আলো