আদমদীঘিতে কৃষি যান্ত্রিকীকরনের মাধ্যমে উচ্চফলনশীল ধানের চাষাবাদ

তরিকুল ইসলাম জেন্টু, আদমদীঘি:
দেশ খাদ্যে সয়ংসম্পন্ন করতে এবং শ্রমিক সংকট থেকে কৃষিখাতকে বাঁচাতে খামার যান্ত্রিকীকরণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ট্রে’তে বিজতলা ও রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টারের মাধ্যমে ধানের চারা রোপন কার্যক্রমের উদ্ধোধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের পান্নাথপুর গ্রামে ব্লক প্রদর্শনী কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বগুড়া জেলা প্রশাসক (ডিসি) জিয়াউল হক। তিনি প্রদশর্নীর মাধ্যমে ‘রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার’ এর সুফল ও সুবিধা সম্পর্কে কৃষকদের অবগত করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সীমা শারমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বগুড়া অঞ্চলের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) কৃষিবিদ আ.জা.মু আহসান শহীদ সরকার, অতিরিক্ত উপপরিচালক (পিপি) কৃষিবিদ সোহেল মো. শামসুদ্দীন ফিরোজ, অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মিঠু চন্দ্র অধিকারী, সান্তাহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ দিপ্তী রানী রায়, বিআরডিবির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাবু, বগুড়ার কৃষি প্রকৌশলী আবু সাঈদ চৌধুরী, আওয়ামীলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ, সান্তাহার ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কামরুল আহসান কাঞ্চন প্রমূখ।

পান্নাথপুরের কৃষক বাবলু খান ও মোশারফ হোসেন জানান, কম খরচে ধান রোপণ করে কৃষকরা আর্থিকভাবে সাশ্রয়ী এবং লাভবান হবে। একটি জমিতে ধানের চারা রোপন করলে শ্রমিকের খরচ যদি ৬শ’ টাকা হয়, সেখানে এই মেশিং দিয়ে যদি ধান রোপন করি তাহলে খরচ হবে দেড়শ’ টাকা। এই জন্যই এই মেশিং আমাদের জন্য সুবিধাজনক। অল্প খরচেই ধান আবাদ করা যাবে।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মিঠু চন্দ্র অধিকারী জানান, এই যন্ত্র দিয়ে একসাথে ৬ লাইনে ধানের চারা রোপণ ও ১২টি ট্রে বহন করে চালাতে পারে। সনাতন পদ্ধতিতে এক বিঘা জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে কমপক্ষে চার জন শ্রমিককে কাজ করতে হয়। এতে করে কৃষকদের অধিক মজুরি গুনতে হয়। যন্ত্র দিয়ে এক ঘন্টায় ০.৩৫ হেক্টর জমির ধান রোপণ করা যায়। জ্বালানি খরচ বিঘায় আটশ’ মিলিগ্রাম। প্রতি হেক্টর জমিতে ২০ জন শ্রমিকের সাশ্রয় হয়। এ যন্ত্র দিয়ে ধানের চারা রোপণ করলে কৃষকের সময় ও অর্থের সাশ্রয় হবে। চারা রোপণে যন্ত্রটি ব্যবহার করলে রোপণ খরচ ৫০-৭৫ ভাগ কমানো সম্ভব হবে। এ ছাড়া রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার দিয়ে চারা রোপণ করলে লাইন সোজা হয়। ফলে পরবর্তীতে আগাছা নিংড়ানো, সার ও কীটনাশক ছিটানো ও ধান কাটা সহজ হয়। কৃষকদের এসব বিষয়ে অবগত করতেই ২০২০-২১ অর্থবছরে রবি মৌসুমে ৫০ একরের ব্লকপ্রদর্শনী স্থাপনের মাধ্যমে হাইব্রিড জাতের বোরো ধানের সমলয়ে চাষাবাদের নিমিত্তে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টারের মাধ্যমে ধানের চারা রোপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এবছর ট্রেতে উৎপাদিত ধানের চারা মেশিন দিয়ে ১৫০ বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান রোপন করা হয়।

বগুড়া জেলা প্রশাসক (ডিসি) জিয়াউল হক বলেছেন, এ পদ্ধতিতে কৃষিতে ফলনশীল জাতের ধান চাষাবাদ করে খাদ্য উৎপাদনে সহায়তা ও বৃদ্ধি সম্ভব।

স/অ