আত্রাইয়ে মানব পাচারকারীর প্রতারনায় দিশেহারা তিনটি পরিবার

আত্রাই প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর আত্রাইয়ে মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে প্রতারণা ও ২২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন এক ভুক্তিভোগী। উপজেলার রসুলপুর গ্রামের মৃত: খোদাবক্স সরদারের ছেলে মোঃ লোকমান হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রসুলপুর গ্রামের মৃত. শেখ আরবুল্লার পূত্র শেখ আলমগীর হোসেন দীর্ঘ দিন ধরে উপজেলা ও পাশ্ববর্তী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের নিরীহ দরিদ্র পরিবারের লোকজনদের কম খরচে বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অবৈধ ভাবে গোপনে মানব পাচারের ব্যবসা করে আসছিল। সম্প্রতি ভুক্তভোগী উপজেলার রসুলপুর গ্রামের লোকমান হোসেনের পুত্র মোঃ মামুন (৩০), শ্রী নিরেন্দ্রনাথ হালদারের পূত্র শ্রী জিতেন (২৫) ও পাশ্ববর্তী রানীনগর উপজেলার ভবানীপুর উত্তর পাড়া মৃত. কফির উদ্দিনের পূত্র মোঃ আইজার মন্ডল (৫০)। ইরাক পাঠানোর কথা বলে সবার কাছে থেকে চুক্তি মোতাবেক গত ৩ এপ্রিল ২১ লক্ষ টাকা নেয়।

 

বিগত দুই বছর ঘোরানোর পর গত ৩০ আগস্ট  সবাইকে আলমগীর তার পাতানো ফাঁদে ফেলে ইরাকে পাচারের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে তাদেরকে আলমগীর তার পাচার চক্র দলের সহায়তায় ইরাকে একটি গোপনস্থানে জিম্মি করে রাখে এবং তাদের উপর শারীরিক নির্যাতন ও টাকা না দিলে তাদের চোখ, কিডনী বিক্রয় করা হবে বলেও ভয় দেখিয়ে তিন জনের পরিবারের কাছে থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দাবি করে।

 

এ সময় উপায়ন্তর না দেখে ভুক্তভোগীর পরিবার  গত ৭ সেপ্টেম্বর উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ইউপি সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে ছেলেদের বাঁচাতে আবারও ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করে। কিন্তু তারপর ও তারা মানব পাচার চক্রের হাত থেকে বাঁচতে পারেনা। কিছু দিন পর আবারও তাদেরকে প্রানে মারার ভয় দেখিয়ে ৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দাবি করে।

 

ভুক্তভোগীর পরিবার দিশেহারা হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছে এবং তাদের পরিবারের এখন একটায় দাবি তাদের প্রদানকৃত অর্থ ও সন্তানদের  সুস্থ শরীরে ফিরে পেতে এবং প্রতারক চক্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা।

 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আসামীদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের সবার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তাদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয় না এবং তারা সকলে পলাতক রয়েছে বলে জানা যায়।

 

এ ব্যাপারে আত্রাই থানা অফিসার ইনচার্জ ( ওসি ) বদরদ্দোজা অভিযোগ দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে সিল্কসিটি নিউজকে জানান, এ ঘটনায় শেখ আনোয়ার গ্রেফতার হয়েছে। বাঁকি শেখ আলমগীরসহ আসামী শেখ জাহাঙ্গীর, মোঃ ইয়াকুব আলী পলাতক রয়েছে এবং তাদেরকে গ্রেফতার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
স/শ