আঞ্চলিক খামারীদের গরুতে জমজমাট পশুহাট

নিজস্ব প্রতিবেদক
ঈদ-উল-আযহার আছে মাত্র কয়েকটা দিন। আর ঈদকে সমনে রেখে কোরবানির পশু হাটে উঠেছে নানা ধরণের গরু। হাট গুলোতে বিদেশী গরুর থেকে দেশি গরু বেশ লক্ষ করা গেছে। হাটগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশ লক্ষ্য করা গেছে।

হাটগুলোতে দেশি গরুর চাহিদা বরাবরের মত বেশি থাকে। তার পরেও দেশি গরুর পাশাপশি ভারতীয় গরুর চাহিদা মোটামোটি। আর এরি মধ্যে জমে উঠেছে রাজশাহীর পশুর হাট। এ হাটে উঠছে অল্প কিছু ভারতীয় গরু। তবে কোরবানির জন্য দেশি গরুরই পছন্দ সবার। দেশি গরু চাহিদা মত না হলই ভারতীয় গরুর দিকে জানা কোরবানির ক্রেতারা।

ত্রেতারা বলছেন, এবার ভারতীয় গরু তেমন নাই। দেশী গরুর দখলে হাট। ভারতীয় গরু না আসার কারণে দেশী গরুর একটু দাম বেশি বলে মনে হচ্ছে। তার পরেও দেশি গুরুই ভালো ভারতীয় গুরুর থেকে। তাই ক্রেতারা তাদের সামর্থের মধ্যে পছন্দের কোরবানি কিনছেন।

রাজশাহী সিটি হাট। এই হাটটি জেলার সব চেয়ে বড় ও ও প্রধান হাট। শহরের সিটি বাইপাস সড়কের পাশে অবস্থিত। সারা দেশের ব্যবসায়ীরা আসেন এই হাটে। সপ্তাহে রবি ও বুধবার এই হাট বসে। এই ঈদ উপলক্ষে সপ্তাহের প্রতিদিনই হওয়ার কথা।

আজ রোববার দুপুরে সিটি হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটের বেশির ভাগ গরুই দেশি। ইজারাদার আতিকুর রহমান ওরফে কালুর হিসাবমতে, হাটের ৭০ শতাংশ গরুই দেশি। বাকি ৩০ শতাংশের মধ্যে রয়েছে ভারতীয় গরু ও মহিষ।

রাজশাহী মহানগরীর বুধপাড়া এলাকায় সফিকুল ইসলাম সিল্কসিটি নিউকে জানায়, এবার হাটে গরুর দাম কম। ১ লাখ ১ হাজার টাকা দিয়ে একটা গরু কিনে ছিলাম এই হাটে বিক্রি করবো বলে। তবে তেমন লাভ হয় নি। মাত্র ৫ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। আরো আমাদের গরু আছে সেগুলো বিক্রি করে দেখি কি হয়।

তিনি বলেন, গত বছর তাঁরা ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা মণ ধরে গরু কিনেছেন। এবার সেটা ১৭ থেকে ২০ হাজার টাকা উঠে গেছে। তা ছাড়া এবার হাটের খাজনাও বেড়ে গেছে। গত বছর হাটে বিক্রেতার কাছ থেকে খাজনা নেওয়া হতো ৮০ টাকা।

মোহনপুরের এক ক্রেতা সিল্কসিটি নিউকে জানায়, ৬০ হাজার ৬০০ টাকা দিয়ে একটি দেশি গরু কিনেছেন। এবার বাজার ঠিকই আছে। চড়া মনে হলো না। আরো এলাকায় অনেকে এসেছে গরু কিনতে। দেখা যাক কি হয়।

এদিকে রাজশাহীর পুঠিয়ার নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যাক্তি সিল্কসিটি নিউকে জানায়, ৭৫ হাজার টাাকয় একটা ভারতীয় গরু কিনেছে। গরুটির সাড়ে চার থেকে পৌনে পাঁচ মণ মাংস হবে বলে তার ধারণা।

ভারতীয় গরু কম আসার বিষয়ে একজন ব্যবসায়ী বললেন, ভারতের গরুর থেকে আমাদের দেশের গরুর মাংশই ভালো। আমরা অল্প টাকায় বেশি খেতে গিয়ে ভারতীয় গরু কিনে থাকি। তাছাড়া ভারতেই এক জোড়া বড় গরুর দাম পড়ে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। বাংলাদেশে আনতে সরকারি কাগজ পত্র পুলিশ, বিজিবি, ঘাঁটিয়াল ইত্যাদিতে গরু প্রতি খরচ হয় আরও প্রায় তিন থেকে চার হাজার টাকা। আবার খরচ বেশি পড়ায় ভারতীয় গরুর আমদানির ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের বেশি আগ্রহী না।

সিটি হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান কালু বলেন, ঈদে ভারত থেকে গরু না আসলেও  তেমন সমস্যা হবে না। কারণ হাটে ব্যাপক দেশী জাতের গরু রয়েছে। আবার এ অঞ্চলের খামারিদের কাছে যে পরিমাণ গরু আছে, তাতেই চাহিদা মিটে যাবে আশা করা হচ্ছে।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইফতে খায়ের আলম সিল্কসিটি নিউজকে জানান, রাজশাহীতে এটা সব চেয়ে বড় হাট। এই এলাকায় বেশ কিছু স্থানে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। আর হাটের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক সাদা পোশাকে গোয়েন্দা ও ডিবি পুলিশের সদস্যরা রয়েছে।
স/মি