আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুতে সেলিব্রিটিদের আবেগঘন প্রতিক্রিয়া

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু মৃত্যুবরণ করায় হাসপাতালে ছুটে গিয়েছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় সেলিব্রিটিরা। এছাড়া আইয়ুব বাচ্চুর ভক্ত শুভাকাঙ্ক্ষীরাও একনজর দেখতে ছুটে যান।

কিংবদন্তি শিল্পীর আকস্মিক প্রস্থানে মর্মাহতের ছাপ দেখা যায় হাসপাতালে আসা প্রতিটি মানুষের মুখে। প্রিয় বিদায়ী মানুষটিকে দেখতে আসেন নবীন-প্রবীণ থেকে প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী, অভিনয়শিল্পী, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন নানা পেশার মানুষ।

আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুতে সবচেয়ে বেশি ভেঙে পড়েন সঙ্গীতের আরেক কিংবদন্তি কুমার বিশ্বজিৎ।

তিনি আবেগতাড়িত কণ্ঠে বলেন, আইয়ুব বাচ্চুর সঙ্গে গত পরশু দিনও আমার সঙ্গে কথা হয়েছে। কথা শেষ করার আগে শুধু বলল, ‘দোস্ত, মাসিমাকে দেখতে আসব।’

তিনি বলেন, সবচেয়ে কষ্টের ব্যাপার হচ্ছে, মাকে বলতে পারিনি। মা বাচ্চুকে আরেকটা সন্তান বানিয়েছেন। সে আমার শুধু বন্ধু না, ভাইও।

প্রাণপ্রিয় সহযাত্রীকে হারানোর বেদনায় আরেকজনের কাঁধে হাত রেখে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসছিলেন শ্রোতানন্দিত কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর।

সঙ্গীতাঙ্গনে আইয়ুব বাচ্চুর অবদান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গায়কির বিবেচনায় এখন পর্যন্ত এ দেশের সে এক ও অদ্বিতীয় শিল্পী। স্বতন্ত্র কণ্ঠস্বরের সঙ্গে নিজস্ব ধারার মিশেলে অনন্য এক শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু। বছরে বছরে এমন শিল্পীর জন্ম হয় না। নতুন প্রজন্ম যদি তার গায়কির ধরন থেকে কিছুটাও শিখতে পারে, সেটাই হবে তার প্রতি ভালোবাসা জানানোর সুন্দরতম কৌশল।

হাসপাতালে কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর

জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ফাহমিদা নবী বলেন, কাউকে না বলে হঠাৎ করেই যেন চলে গেলেন আইয়ুব বাচ্চু। এত বড় মাপের শিল্পী সহজে পাওয়া যায় না। তিনি যেভাবে গান গাইতেন শত বছর আগে কিংবা শত বছর পরেও এমন শিল্পী আসেনি এবং আসবে না। শিল্পী হিসেবে দেশের প্রতি ছিল তার দারুণ ভালোবাসা। প্রতিটি অনুষ্ঠান শেষ করতেন ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গেয়ে। আর তিনি শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবতেন না। আপদে-বিপদে ছোট কিংবা বড় যে কোনো শিল্পীর পাশে গিয়ে দাঁড়াতেন। অন্যের জন্য নিজের সর্বোচ্চটুকু দেয়ার চেষ্টা করতেন।

রেনেসাঁ ব্যান্ডের নকীব খান বলেন, আইয়ুব বাচ্চুর মতো শিল্পীর কারণে এ দেশের ব্যান্ডসঙ্গীত জয় করেছে শ্রোতার অন্তর। শরীরী মৃত্যু হলেও মননের তাড়নায় রেখে গেছেন অনেক কালজয়ী গান। তার গাওয়া সেই গানগুলো সংরক্ষণের জন্য আমরা সব শিল্পী মিলে উদ্যোগ গ্রহণ করব, যাতে শত বছর পরের শ্রোতারাও শুনতে পায় সেসব গান।

সামিনা চৌধুরী বলেন, সময়ের আগেই চলেন আইয়ুব বাচ্চু। তাই এমন অসময়ে মৃত্যুকে মেনে নেয়া যায় না। এই দেশ ও এ দেশের শ্রোতাদের আরও অনেক কিছু দেয়ার ছিল তার। এই শিল্পীর গায়কির ধরন কিংবা গিটারের বাদন বড্ড বেশি মিস করবে নতুন প্রজন্ম।

সংবাদিকদের মুখোমুখি চিত্রনায়ক ফেরদৌস

প্রসঙ্গত, ব্যান্ড সঙ্গীতের কিংবদন্তি শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।

তার স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে ধানমণ্ডির বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন আইয়ুব বাচ্চু। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।