অস্ত্রবিরতির পরও কুর্দিশ অঞ্চলে মুহুর্মুহু গোলার আওয়াজ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের সঙ্গে চার ঘণ্টারও বেশি সময়ের বৈঠকে একটি অস্ত্রবিরতিতে সম্মতি হওয়ার পরও উত্তর সিরিয়ার রাস আল-আইন থেকে গোলাবর্ষণ ও বন্দুকযুদ্ধের মুহুর্মুহু ধ্বনি শোনা গেছে।

কুর্দিশ বাহিনী ওই অঞ্চলটি থেকে প্রত্যাহারের শর্তে চুক্তিতে রাজি হয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।

রাস আল-আইন থেকে তুরস্কের সিলাপিনার সীমান্ত থেকে মেশিনগানের গুলি ও গোলা নিক্ষেপের আওয়াজ আসছিল। সিরীয় শহরের একটি অংশ থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে।

এরদোগানের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর অস্ত্রবিরতির কথা ঘোষণা করেন মাইক পেন্স। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তির তারিফ করে বলেন, এতে লাখ লাখ মানুষের জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়েছে।

এদিকে সিরিয়া সংকটে সামনে থেকে কাজ করা জেমস জেফরি স্বীকার করে নিয়েছেন যে, তুরস্কের সঙ্গে অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে কুর্দিরা সন্তুষ্ট নন। আর চুক্তিতে পৌঁছাতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে ওয়াশিংটন মুলা ঝুলিয়ে লাঠি দেখানোর নীতি অবলম্বন করেছে।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে এমন তথ্য জানা গেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গে ভ্রমণের সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, এ অঞ্চলে থাকবে বলেই আশা করেছিলেন ওয়াইপিজি যোদ্ধারা।

যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলছে, অভিযান শুরু হওয়ার পর তিন লাখ বেসামরিক লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এটিই সবচেয়ে বড় ঝাঁকুনি।

সংস্থাটি জানায়, অন্তত ৫০০ লোক নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে কয়েক ডজন বেসামরিক লোক রয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই কুর্দিশ।

হামলা শুরু হওয়ার পর আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক নিন্দার মুখে পড়ে তুরস্ক। ইউরোপীয় দেশগুলো আংকারার বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

হামলা বন্ধে তুরস্কের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শুক্রবার ব্রাসেলসে বৈঠক করেন ইউরোপীয় নেতারা।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসগলু বলেন, তুরস্ক হামলা স্থগিত করেছে। বন্ধ করেনি। এটি কোনো অস্ত্রবিরতি নয়। কেবল বৈধ দুটি পক্ষের মধ্যেই অস্ত্রবিরতি চুক্তি হয়ে থাকে।

গত ৩৫ বছর ধরে তুরস্কের ভেতরে রক্তক্ষয়ী বিদ্রোহী চালিয়ে আসা কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) একটি শাখা হিসেবে ওয়াইপিজিকে বিবেচনা করে আংকারা।

পেন্সের সঙ্গে চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা বৈঠকের পর সই হওয়া এ চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এটিকে সভ্যতার একটি মহান দিন হিসেবে উল্লেখ করেছেন।