অনুভবে আহ্লাদ

অনুভবে আহ্লাদ
——————–
ক’দিন ধরে তার দিন-রজনী সমান
দূর করেছে শেখর দু’য়ের ব্যবধান ।
নাড়ির আদরের শেখরের মেয়ে
বায়না ধরেছে নতুন জামা চেয়ে।
মহাজন থেকে তাই নিয়েছে ঋণ
কিনে দিয়েছে শেখর, জামা সৌখিন ।
গায়ে তার তিন তালির জামা
তবু যেন অণু দুঃখ নাই –
ছোট ময়নার গায়ে নতুন জামা
মন এতেই বড় যে তৃপ্তি পাই !

লক্ষী বনিতারে তার !
ঈদে কিনে দিয়েছে শাড়ি ।
শূন্য ঘর যার
অনুরাগে রাখে ভরি !
নিয়ে ক্লান্ত মন-শরীরে
যখন আসে ফিরে ঘরে
নিয়ে আসে যত ব্যাথা
যায় তা ঝরে
বলে যদি দু’চার কথা !

চারদিকে আজ বাজছে ছুটির বীণ ,
আনন্দ-আহ্লাদ আজ ঈদের দিন।
তিন তালি শার্ট গায়ে গেঁথে
শেখর চলেছে নিজ পথে –
মেয়ে বলে, বাবার হাত টেনে টেনে
কোথা যাও বাবা এই ছুটির দিনে ?
এক সাথে যাব হিসেব রেখেছি যে গুণে।
শেখর বলে মনে মনে ,
দরিদ্রের আবার
আছে নাকি কোনো ছুটি ?
ছুটি ভাবলে এবার
অভাব চেপে ধরবে যে টুঁটি !
শেখর বলে ধীর উচ্চারণে ,
বড় জামাতে পড়ব নামাজ মা মণি ।
হবে বেশী আনন্দের ধুম-
যাচ্ছি তাই দ্রুত নামাজে এক্ষুণি ।
ঈদ্গাহে শাহ-মখদুম ।

যাবার পথে দিয়ে
যাত্রী সাথে নিয়ে
ভাবনায়, মজুরি পাব দিগুণ
তবেই শুধব বোঝার ডালি ঋণ
চিন্তায়, এই করছে গুণগুণ ।

মহাজন থেকে নিয়েছে যে ঋণ
না শুধলে উৎপাদ মেশিন
তার হবে যে বিলিন ।
যত বারের দিন হবে দেরি
সুদ হারের ডালি বাড়বে ভরি
শোধ দিতে হবে যে তাড়াতাড়ী ।

ভাবল শেখর নামাজ পরে
ফিরবো না আজও ঘরে,
আজও তবু রিকশা লয়ে
সকাল-সন্ধ্যা যাব বেয়ে ।
আজ মজুরি পাব দিগুণ
তা দিয়েই শুধব বোঝার ঋণ ।
প্রার্থনার পথেও যার
ক্ষুধায় করে বিবাদ ,
রবে কিসে তার
ঈদের আনন্দ-আহ্লাদ ।

-আমিনুল ইসলাম নোবেল