সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :
নিউজিল্যান্ডের কাছে হোয়াইটওয়াশড হয়ে এমনিতেই টালমাটাল ভারতীয় ক্রিকেট। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে অস্ট্রেলিয়া সফরের শুরুর দিকে রোহিত শার্মাকে পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা। এমন গুরুত্বপূর্ণ সফরে অধিনায়ককে নিয়ে টানাপোড়েন দলের জন্য আদর্শ নয় বলেই মনে করেন সুনিল গাভাস্কার। ভারতীয় কিংবদন্তির মতে, অনিশ্চয়তা না রেখে সহ-অধিনায়ককেই এই সফরে অধিনায়ক ঘোষণা করা উচিত।
অস্ট্রেলিয়ায় বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির দল ঘোষণার পরপরই ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, দ্বিতীয় সন্তান জন্মের সময় স্ত্রীর পাশে থাকতে এই সফরে প্রথম টেস্টে নাও খেলতে পারেন রোহিত। অধিনায়ককে পাওয়া নিয়ে দোলাচল আছে এমনকি পরের টেস্টেও।
ব্যাপারটি নিয়ে তখন খুব বেশি আলোচনা হয়নি। তবে নিউ জিল্যান্ডের কাছে ভারত হোয়াইটওয়াশড হওয়ার পর এটিই এখন বড় ব্যাপার হয়ে উঠেছে ভারতীয় ক্রিকেটে।
কিউইদের বিপক্ষে মুম্বাই টেস্ট শেষে এই প্রশ্নে রোহিত বলেছিলেন, ‘এই মুহূর্ত নিশ্চিত নই আমি (শুরুতেই) যাব কি না। দেখা যাক।’
ব্যাপারটি সময়ের হাতে ছেড়ে দেওয়াতেই আপত্তি গাভাস্কারের। ভারতের সাবেক অধিনায়ক ইন্ডিয়া টুডেকে বললেন, সফরের শুরুতে অধিনায়ককে নিয়ে অনিশ্চয়তা দলের জন্য ভালো কিছু নয়।
‘সিরিজ শুরুর টেস্টে অধিনায়কের অবশ্যই খেলা উচিত। সে চোট পেলে অন্য ব্যাপার ছিল। কিন্তু অন্য কোনো কারণে অধিনায়ক যদি প্রথম টেস্টে না থাকে, তাহলে সহ-অধিনায়কের ওপর অনেক চাপ পড়ে এবং তা সহজ নয়।’
‘আমরা খবরে দেখছি যে, রোহিত প্রথম টেস্টে খেলবে না, দ্বিতীয় টেস্টে তাকে পাওয়া নিয়েও অনিশ্চয়তা আছে। এটা যদি সত্যি হয়, তাহলে আজিত আগারকারের (প্রধান নির্বাচক) উচিত তাকে বলা যে, যা ইচ্ছা করতো পারো, বিশ্রাম চাইলেও নিতে পারো, সেটা তোমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে এই সফরে তুমি অংশ নিতে পারবে কেবল একজন ক্রিকেটার হিসেবে। যখন ইচ্ছে, সফরে গিয়ে দলে যোগ দিতে পারো তুমি। কিন্তু এই সফরের জন্য সহ-অধিনায়ককে আমরা অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করছি।’
অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতের সহ-অধিনায়ক হিসেবে যাচ্ছেন জাসপ্রিত বুমরাহ। ২০২২ সালে রোহিতের অনুপস্থিতিতেই ইংল্যান্ডে একটি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এই ফাস্ট বোলার।নিউ জিল্যান্ডের কাছে তিন টেস্টে হারার পর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠার পথও কঠিন হয়ে গেছে ভারতের জন্য। এজন্যই রোহিতকে অস্ট্রেলিয়ায় শুরু থেকে প্রয়োজন বলে মনে করেন গাভাস্কার, ‘এই জায়গায় স্বচ্ছতা থাকা প্রয়োজন। কারণ, মাত্রই নিউ জিল্যান্ডের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হেরেছি আমরা। ভারত যদি নিউ জিল্যান্ডের সঙ্গে ৩-০ ব্যবধানে জিতত, তাহলে ব্যাপারটি অন্যরকম হতে পারত।’
২০২০-২১ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরেও অধিনায়ককে নিয়ে ঝামেলা পড়তে হয়েছিল ভারতকে। সেবার সন্তান সম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকার জন্য প্রথম টেস্টের পর ফিরে এসেছিলেন ওই সময়ের অধিনায়ক ভিরাট কোহলি।তবে সেবারের সঙ্গে এবারের ঘটনার পার্থক্য তুলে ধরলেন গাভাস্কার, ‘ওই সময়টায় স্বচ্ছতা ছিল ব্যাপারটিতে। আমরা আগে থেকে জানতাম যে, কোহলি স্রেফ একটি টেস্ট খেলবে এবং এরপর সহ-অধিনায়ক দায়িত্ব নেবে। দলের বাকিদের জন্য ব্যাপারটির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া ছিল তুলনামূলক সহজ।’
সেবার কোহলির নেতৃত্বে প্রথম টেস্টে অ্যাডিলেইডে হেরে গিয়েছিল ভারত। তিনি দল ছেড়ে চলে যাওয়ার পর বেশ কয়েকজনের চোটে দল হয়ে পড়ে একদমই খর্ব শক্তির। কিন্তু সেই ভাঙাচোরা দল নিয়েই অসাধারণ পারফরম্যান্সে ঘুরে দাঁড়িয়ে আজিঙ্কা রাহানের নেতৃত্বে অবিস্মরণীয় এক সিরিজ জিতে দেশে ফেরে ভারত।
সূত্র: যুগান্তর