দুর্গাপুর পৌর নির্বাচনে ছাত্রলীগের সাবেক চার নেতার নৌকার টিকেট পেতে দৌড়ঝাঁপ

দুর্গাপুর প্রতিনিধি:
রাজশাহী দুর্গাপুর পৌরসভার উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আর এই পৌরসভাটির তফসিল ঘোষণার সাথে সাথে পৌরসভার উপ-নির্বাচনে এবার ছাত্রলীগের সাবেক চার নেতা পৌরসভার প্রার্থীতার জানান দিতে শুরু করেছেন। শুরু করেছেন প্রচার-প্রচারনা। বর্তমানে প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পেতে জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে শুরু করেছেন দৌড়ঝাঁপ। ঘোষিত তফসিল অনুযাযী আগামি ১৬ নভেম্বর এই পৌরসভায় অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহন। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় প্রার্থীরা দম ফেলার সময় পাচ্ছেন না। বর্তমান ব্যাস্ত হয়ে পড়েছেন তারা।

এদিকে এই নির্বাচনে একাধিক প্রার্থী নিজেদের প্রার্থী দাবী করলেও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক চার নেতার বাহিরে দলীয় মনোনয়ন দেখছেন না স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতাকর্মীরা।
এই নির্বাচকে ঘিরে স্থানীয় ভোটাররাও বলছেন ছাত্রলীগের সাবেক এই তরুণ নেতাদের মধ্যে পৌর মেয়র নির্বাচিত হলে পৌরবাসীর ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে, হবে এলাকার উন্নয়ন। তরুণদের নেতৃত্বে পৌরসভা হয়ে উঠবে ডিজিটাল পৌরসভা।
জানা গেছে, দুর্গাপুর পৌরসভার নৌকার মনোনয়ন নিয়ে ২০২১ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারী মেয়র নির্বাচিত হন ততকালিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন। নির্বাচিত হওয়ার দেড় বছরের মাথায় তিনি শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পরে তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২১ আগস্ট মারা যান তিনি। এর পরে পৌরসভাটি শূন্য ঘোষণা করা হয়।

এরপর গত ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিস হতে দুর্গাপুর পৌরসভার উপ-নির্বাচনের তফসিল প্রকাশ করেন।
এদিকে তফসিল ঘোষণার পরে গত ২৪ অক্টোবর দলীয় ভাবে উপজেলা আওয়ামী লীগ হতে পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে আগ্রহীদের ১০ জনের নাম পাঠানো হয় জেলা আওয়ামী লীগের কাছে। জেলা আওয়ামী লীগ সেই নামের তালিকা পাঠিয়েছেন কেন্দ্রে।
এদিকে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে ৬নং ওয়ার্ড পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি একরাম আলীসহ একাধিক আওয়ামী লীগএর নেতা ও কর্মীরা বলছেন, আমিনুল হক টুলু ওইসকল ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে তিনি সিনিয়র নেতা। তার জনপ্রিয়তা সবার র্শীষে। স্কুল রাজনীতি থেকেই তার বেড়ে ওঠা। এছাড়াও তিনি একজন প্রভাষক। তিনি প্রার্থী হিসেবে যোগ্য। তাকে দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হলে শতভাগ পাশের সম্ভাবনা রয়েছে।
তারা আরো বলেন, গত ২০২১ সালে পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়ে নির্বাচনি মাঠ গোছাতে শুরু করেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আমিনুল হক (টুলু)। ব্যাপক প্রচার প্রচারনাও চালিয়ে যেতে থাকেন তিনি। পাশা পাশি সেই সময়ের পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জল হোসেনও মনোনয়ন চেয়ে প্রচারনা শুরু করেন।

সেই নির্বাচনে তাদের দুইজনকেই ঘিরে মনোনয় পাওয়ার কেন্দ্রবৃন্দু তৈরী হয়। এক পর্যায়ে সেই দলীয় মনোনয়ন পান আবারো সেই তোফাজ্জল হোসেন। বর্তমানে যারা দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন এরা হলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি প্রভাষক আমিনুল হক (টুলু), উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলমগীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান শরীফ ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাজেদুর রহমান মিঠু। আমিনুল হক টুলু ১৯৯৮ সালে উপজেলা ছাত্র লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এর পরে তিনি টানা ৭ বছর উপজেলা ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালন করেন। এর পরে ২০০৩ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। আলমগীর হোসেন ২০১২ উপজেলা ছাত্রলীগের সালে সভাপতি ও শরিফুজ্জামান শরিফ ২০১২ সালে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তারা দুজনে ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালন করেন ২০১৮ সাল পর্যন্ত।

এদিকে সাজেদুর রহমান মিঠু ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
এই উপজেলায় দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর ধরে পৌর ও উপজেলা আওয়ামী লীগের পুর্নাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় ওইসকল সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা মূল দলের কোনো পদে আসতে পারেননি। তবে ওইসকল ছাত্রলীগ নেতাদের দাবী দলীয় মনোনয়ন না পেলে দলের সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে অব¯’ান করবেন না তারা। এছাড়াও ছাত্রলীগের ৪ নেতার বাহিরে পৌর মেয়র পদ পেতে আরো ৬ প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন চেষ্টায় প্রচারনা চালিয়ে যা”েছন। দুর্গাপুর পৌরসভার তফসীল অনুযায়ী আগামী ১৬ নভেম্বর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আর মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ৩১ অক্টোবর। যাচাই বাছাই ১ নভেম্বর। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষদিন ৬ নভেম্বর। দুর্গাপুর পৌরসভায় ৯ টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ২১ হাজার ১২৬ জন।