সোমবার , ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ৩রা আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

ডাইনি অপবাদে ১ হাজার মানুষকে পিটিয়ে হত্যা!

Paris
ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২২ ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ

প্রতিদিন গড়ে তিনজন ডাইনি শিকারের ঘটনা রেকর্ড করা হয়। গত ২২ বছরে এক হাজার মানুষকে ডাইনি সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে ভারতের ঝাড়খণ্ডে।

চলতি বছরে এ পর্যন্ত পাঁচজন, এই কুসংস্কারের কারণে আক্রান্ত হয়েছেন, এদের মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আইএএনএসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ঝাড়খণ্ড পুলিশের রিপোর্টে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেয়েছে।

রিপোর্ট বলা হয়েছে, ডাইনি অপবাদে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় এক হাজার জনের মধ্যে ৯০ শতাংশই মহিলা।

একবিংশ শতাব্দীতে রাজ্যে ডাইনি অপবাদে পিটিয়ে খুন। এই কুসংস্কারে সবচেয়ে বেশি ঘটে ঝাড়খণ্ডে। ২০০০ সালে বিহার থেকে পৃথক হয়ে স্বতন্ত্র রাজ্য হিসাবে ঘোষণা করা হয় ঝাড়খণ্ডকে।

প্রতিবেদনের তথ্য থেকে জানা যায়, ২০২১ সালে ২৪ জন এই কুসংস্কারের শিকার হয়েছেন।

চলতি বছরের গত ২ জানুয়ারি ঝাড়খণ্ডের গুমলা জেলার লুকিয়া গ্রামে এক মহিলাকে ডাইনি অপবাদে মারধর করেন স্থানীয়রা। মৃত্যু হয় সেই মহিলার। মাকে রক্ষা করতে ছুটে যান দুই ছেলে। রক্ষা পায়নি তারাও। তাদের দড়ি দিয়ে বেঁধে চলে নির্মম প্রহার করা হয়। দুই ভাই গুরুতর আহত হন। এখন অজয়ের চোখটাই নষ্ট হওয়ার পথে। এ ঘটনায় পুলিশ যে অভিযোগ করে সেখানে মূল অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছেন স্বয়ং পঞ্চায়েতপ্রধান। সব মিলিয়ে ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ।

খুনতি জেলার অদকি থানার তিরলা গ্রামে ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি এক দম্পতিকে পিটিয়ে খুন করেন প্রতিবেশীরা। অভিযোগ, তারা ‘কালাজাদু’ জানতেন। পর এই খবর পাঁচ দিন পর প্রকাশ্যে আসে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১২ জানুয়ারি, আবারো ডাইনি সন্দেহে মারধরের ঘটনা ঝাড়খণ্ড রাজ্যে। থেতাই থানার অন্তর্গত কুড়পানি গ্রামে এক মহিলাকে ডাইনি অপবাদে বেধড়ক মারধর করা হয়।

অভিযুক্তের বয়ান অনুযায়ী, ঝড়িয়ো নামে এক প্রতিবেশীর কুনজরে অকালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তার স্ত্রী। এখনও রাঁচির এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ওই মহিলা।

ডাইনি সন্দেহে ২৭ জানুয়ারি আবারও একটি খুনের ঘটনা ঝাড়খণ্ডে। খুনের বীভৎসতা চমকে দেওয়ার মতো।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মহিলাকে খুনের পর গাড়িতে তার দেহ লুকিয়ে রাখেন অভিযুক্তরা। তার পর গাড়িটিকে খুনতি থানা এলাকার একটি নির্জন জঙ্গলে ফেলে রেখে আসেন চার অভিযুক্ত। আর এই খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত পেশায় নার্স! পুলিশি জেরায় সালোমি মিজ নামে ওই নার্স জানান হঠাৎ তার ছেলের মৃত্যু হয়। নার্সের ঘোর সন্দেহ, নোরা লকড়া নামে তার ভাড়াটে ডাকিনী বিদ্যা করে তার ছেলেকে মেরে ফেলেছেন।

২০২০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি। গুমলা জেলায় পাঁচজনকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে আট জনের বিরুদ্ধে। সেখানেও কারণ সেই এক ডাইনি অপবাদ। তার আগের দুমাসে তিন জন এই কুসংস্কারের বলি হন।

ঝাড়খণ্ড পুলিশের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত সাত বছর ধরে প্রতি বছর গড়ে ডাইনি সন্দেহে খুনের ঘটনা ৩৫টি।

সিআইডি-র রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালে ডাইনি সন্দেহে ৪৬ জন মহিলাকে পিটিয়ে মারা হয়। ২০১৬ সালে ৩৯, ২০১৭ সালে ৪২, ২০১৮ সালে ২৫, ২০১৯ সালে ২৭ এবং ২০২০ সালে ২৮ জন এই কুসংস্কারের বলি হয়েছেন।

২০২১ সালের পুরো তালিকা এখনও আসেনি। তবে পুলিশের খাতায় এমন ২৪ খুনের মামলা রুজু হয়েছে। গত সাত বছরে ঝাড়খণ্ডে ২৩০ জনের মৃত্যুর কারণ হল ডাইনি অপবাদ। গত ২২ বছরে সংখ্যাটা এক হাজারের বেশি।

 

সূত্রঃ যুগান্তর

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক