ইইডি রাজশাহীর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর পদ এক বছর থেকে শূন্য, ভোগান্তি

আমজাদ হোসেন শিমুল: 
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ইইডি) রাজশাহী সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর পদটি এক বছর থেকে শূন্য থাকায় এই দপ্তরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কাজ করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। করোনার এই মহামারীর সময়ে এই সংক্রান্ত কাজের জন্য সম্পৃক্তদের প্রতিনিয়ত ঢাকায় ইইডি’র প্রধান কার্যালয় শিক্ষা ভবনে যেতে হচ্ছে। ফলে অর্থের অপচয়ের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দপ্তরের কাজ।

এদিকে ইইডি’র রাজশাহী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রেজাউল ইসলাম নিয়ম অনুযায়ী গত বছরের ১ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর এই পদটিতে পদোন্নতি পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করলেও তাকে উক্ত পদে পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে না। কয়েক মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও বৈধ এই পদোন্নতির সুযোগ না পাওয়ায় চরম হতাশায় ভুগছেন তিনি।

রাজশাহীর বেশ কয়েকজন ঠিকাদার জানান, রেজাউল ইসলামের কর্মদক্ষতার কারণে ইইডি রাজশাহী জেলার অধিভূক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন তথা ভবন নির্মাণ কাজের মান ও উৎকর্ষের দিক দিয়ে যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটেছে। অফিস ব্যবস্থাপনায় ফিরেছে শৃঙ্খলা। নির্মাণ কাজের ঠিকাদাররা পক্ষপাতিত্ব ও বৈষম্যের যাতাকল থেকে পেয়েছে নিষ্কৃতি। তারা জানান- জেলার বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও সাধারণ ঠিকাদারের কাছে রেজাউল একজন ত্যাগী, নির্ভোলী ও আদর্শ ব্যক্তিত্ব।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী ও খুলনা সার্কেলের দুটি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহী সার্কেলের পদটি গত বছরের ৬ জানুয়ারি থেকে এবং খুলনা সার্কেলের পদটি গত বছরের ১ আগস্ট থেকে শূন্য রয়েছে। ফলে এই পদ দুটির দেখভালের দায়িত্ব ইইডি’র প্রধান কার্যালয় তথা ঢাকা থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এতে করে এই দুই সার্কেলের ঠিকাদারদেরকে নির্মাণ কাজের পাক্কলন অনুমোদন, কাজের সময় বৃদ্ধিসহ নানাবিধ কাজে সশরীরে ইইডি’র প্রধান কার্যালয়ে যেতে হচ্ছে। যার কারণে একদিকে ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত অন্যদিকে বেড়েছে খরচের বোঝা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঠিকাদার ফিরোজ কবির জানান, ইইডি’র রাজশাহী সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর পদ শূন্য থাকায় তাকে প্রায় প্রতি সপ্তাহে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় ইইডি’র প্রধান কার্যালয় শিক্ষা ভবনে যেতে হচ্ছে। রাজশাহী সার্কেল কার্যালয়ে কাজ সারতে পারলে এত অর্থের অপচয় ও কষ্ট পোহাতে হতো না।

এ বিষয়ে ইইডি’র রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘গত বছরের ১ আগস্ট আমার পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। যেহেতু তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর দুটি পদ শূন্য আছে তাই পদোন্নতি পাওয়া আমার বৈধ অধিকার। সরকার আমার এই বৈধ অধিকার লাভের সুযোগ দিলে উপকৃত হতাম। আমাকে যখন যে দায়িত্ব দেয়া হবে জনস্বার্থে সেই দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সাথে আন্তরিকভাবে পালন করবো।’

জানতে চাওয়া হলে ইইডি ঢাকার প্রধান প্রকৌশলী আরিফুর রহমান বলেন, ইইডিতে সারাদেশে ৩ হাজার ১৭৪টি পদের বিপরীতে জনবল আছে মাত্র ৮১৪ জন। যাদেরকে পদোন্নতি দেবো সেই জায়গাতে কাকে রিপ্লেস করবো, লোক নেই তো। এজন্য এই পদোন্নতি দীর্ঘদিন থেকে আটকে আছে।’ জনবল নিয়োগ হলে পদোন্নতি দেয়া সম্ভব বলে জানান তিনি।

এএইচ/এস