ইসরায়েলের সাথে খেলে আলোচিত দুই ইরানি ফুটবলার

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করে না। শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক কোন ক্রীড়া টুর্নামেন্টে ইসরায়েলি খেলোয়াড়দের সাথে ইরানি খেলোয়াড়দের অংশ নেওয়াও নিষিদ্ধ।

কিন্তু দু’জন ইরানি ফুটবলার ইসরায়েলি খেলোয়াড়দের সাথে খেলার পর এনিয়ে দেশের ভেতরে একদিকে তাদের যেমন সমালোচনা হচ্ছে, তেমনি অনেকে তাদের প্রশংসাও করছেন।

তারা খেলেছেন গ্রিসের একটি ক্লাবের হয়ে। আর খেলাটি ছিলো ইসরায়েলের ম্যাকাবি তেল আভিভ ক্লাবের বিরুদ্ধে।

ম্যাচটি ছিলো ইউরোপা লীগের বাছাই পর্বের একটি খেলা। এথেন্সের ক্লাব প্যানিওনিয়স বনাম ম্যাকাবি।

কোনো ক্লাবের সমর্থকদের স্মৃতিতেই হয়তো এই ম্যাচটি খুব দীর্ঘ সময় স্থায়ী হবে না। কিন্তু ইসরায়েলি ফুটবলারদের সাথে দু’জন ইরানির মাঠে নামের ঘটনা হয়তো তাদের অনেক দিনই মনে থাকবে।

এই দু’জন ইরানি ফুটবলারের নাম মাসুদ সোজাই এবং এহসান হাজসাফি।

খেলাটি হয়েছে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে। কিন্তু দূরে ইরানি ফুটবল দর্শকদের চোখ তারা এড়াতে পারেন নি।

সাধারণত ইরানি অ্যাথলেটরা ইসরায়েলি ক্রীড়াবিদদের সাথে কোন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন না। গত বছর রিও অলিম্পিকে এক ইসরায়েলি প্রতিযোগীর সাথে খেলার আগে ইরানি অ্যাথলিট আলীরেজা খোজাস্তেকে ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিলো।

কিন্তু ধারণা করা হয় যে প্রতিদ্বন্ধী ইসরায়েলি অ্যাথলিট হওয়ার কারণেই ইরান তার প্রতিযোগীকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলো।

কিন্তু এবার দু’জন ইরানি ফুটবলার বহু দিনের নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে ইসরায়েলি ক্লাবের প্রতিপক্ষের হয়ে খেলতে নামলো। তাদের হাতে ছিলো সবুজ, শাদা এবং লাল – ইরানি পতাকার এই তিন রঙ-এর ব্যান্ড।

এই ঘটনার পর সোশাল মিডিয়ায় ফুটবল ভক্তদের অনেকে তাদের প্রশংসা করেছেন।

“এই নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদরা কেন খেলা থেকে বঞ্চিত হবেন? এই ট্যাবু ভেঙে দেওয়াটা একটা বড় ঘটনা। এর জন্যে তাদেরকে যে মূল্যই দিতে হোক না কেন, চলুন আমরা তাদের সাথেই থাকি,” এই মন্তব্য করেছেন একজন টুইটার ব্যবহারকারী।

আরেকজন লিখেছেন, “এখন অনেকেই তাদের অপমান করতে শুরু করবে। তারা হয়তো বলবে যে এই দু’জন ফুটবলার ইসলামকে বিপদের মুখে ফেলে দিয়েছে।”

আবার অনেকে বলছেন, তাদের উচিত ছিলো এই ম্যাচে না খেলা।

কট্টরপন্থী ইরানি ওয়েবসাইটগুলোতে তাদের তীব্র সমালোচনা হয়েছে। বলা হচ্ছে যে তারা তাদের জাতীয় ও নৈতিক দায়িত্ব উপেক্ষা করেছেন।

একজন টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, “এহসান ও মাসুদ – ধিক তোমাদের। কিছু নোংরা ডলারের জন্যে তোমরা রক্তচোষা ভ্যাম্পায়ারকে স্বীকৃতি দিলে।”

কিন্তু মজার ব্যাপার হলো গ্রিক ক্লাবটি যখন গত সপ্তাহে তেল আভিভে খেলতে গিয়েছিলো তখন এই দু’জন ফুটবলার দলে ছিলেন না।

ইউরোপা লীগের ভবিষ্যৎ ম্যাচগুলোতে ইসরায়েলি খেলোয়াড়দের সাথে খেলতে নামা নিয়ে তাদেরকে আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না। কারণ প্যানিওনিয়স সেদিন ম্যাকাবি তেল আভিভের সাথে হেরে গিয়ে টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে পড়েছে।

হাজসাফিকে প্রথমার্ধে হলুদ কার্ড দেখানো হয়েছিলো। আর খেলা শেষে কান্নায় ভেঙে পড়েন সোজাই।

একজন মন্তব্য করেছেন খেলায় হেরে যাওয়ার কারণে তিনি কেঁদেছেন নাকি কেঁদেছেন বয়কট ইস্যুতে চাপে থাকার কারণে- সেটি খুব একটা পরিষ্কার নয়।