৯ বছর পর জিম্বাবুয়ের কাছে  সিরিজ হার বাংলাদেশের

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :

সিকান্দার রাজা ও রেগিস চাকাভার সেঞ্চুরিতে ভর করে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয়টিতে বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারাল জিম্বাবুয়ে। এ ম্যাচ জয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ২-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করল স্বাগতিকরা ।

এছাড়া ৯ বছর পর বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে জিম্বাবুয়ে।সবশেষ ২০১৩ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজেদের মাঠে তিন ম্যাচে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল জিম্বাবুয়ে।অপরদিকে বাংলাদেশ নিজেদের প্রিয় ফরম্যাট ওয়ানডেতে টানা ৫ সিরিজ জয়ের পর হার দেখল।

টাইগাররা সবশেষ গত বছর মার্চে নিউজিল্যান্ড সফরে তিন ম্যাচ সিরিজে ৩-০তে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল।রোববার হারারে স্পোর্টস ক্লাবে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় দুপুর সোয়া একটায় মাঠে গড়ায়।

যেখানে প্রথমে ব্যাট করা বাংলাদেশ তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহর হাফসেঞ্চুরিতে নির্ধারতি ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৯০ রান করে। ২৯১ রানের জবাবে ৫ উইকেট হারিয়ে ও ১৫ বল বাকি থাকতে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় জিম্বাবুয়ে।বাংলাদেশের দেওয়া ২৯১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় জিম্বাবুয়ে।

ওভারের তৃতীয় বলে ওপেনার তাকুদজওয়ানাশে কাইতানোকে শূন্য রানে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানান হাসান মাহমুদ। নিজের পরের ওভারে ফের উইকেট নেন হাসান। এবার এই পেসার আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ইনোসেন্ট কাইয়াকে ব্যক্তিগত ৭ রানে মুশফিকের ক্যাচে ফেরান।

দলীয় অষ্টম ওভারে উইকেটে ভাগ বসান মেহেদী হাসান মিরাজ। এই স্পিনার ওয়েসলি মাধেভেরেকে ২ রানে এলবির ফাঁদে ফেলেন। নিজের প্রথম ওভারে এসেই উইকেটের দেখা পান তাইজুল ইসলাম। এই বাঁহাতি স্পিনার ওপেনার তাদিওয়ানাশে মারুমানিকে ২৫ রানে ফেরান।

তবে পঞ্চম উইকেট জুটিতে বাংলাদেশকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয় জিম্বাবুয়ে। এসময় সিকান্দার রাজা ও রেগিস চাকাভা ১৬৯ বলে ২০১ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করে বিদায় নেন জিম্বাবুয়ে দলনেতা চাকাভা। আক্রমণাত্মক খেলা এই ব্যাটার ৭৫ বলে ১০টি চার ও ২টি ছক্কায় ১০২ রান করে মিরাজের শিকার হন।

তবে টানা দুই সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে পাত্তাই দেননি রাজা। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকা এই ডানহাতি ১২৭ বলে ১১৭ করেন। তিনি ৮টি চার ও ৪টি ছক্কা হাঁকান। ওডিআই ক্যারিয়ারে এটি তার পঞ্চম সেঞ্চুরি।বাংলাদেশ বোলার হাসান মাহমুদ ও মিরাজ দুটি করে উইকেট পান।টস জিতে এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ইনিংসের শুরুটা হয় দুর্দান্ত। উদ্বোধনী জুটিতে আক্রমণাত্মক খেলে তামিম ইকবাল ও এনামুল হক ১১ ওভারে ৭১ রান তোলেন।

ঝড়ো ব্যাটিং করেন তামিম। দলনেতা শেষ পর্যন্ত ৪৫ বলে ১০টি চার ও একটি ছক্কায় ঠিক ৫০ করে বিদায় নেন তানাকা শিভাঙ্গার বলে। তামিমের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি ৫৫তম হাফসেঞ্চুরি।

তামিমের বিদায়ের পর বেশক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার এনামুল হকও। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউটের শিকার হন তিনি। ২৫ বলে ৩টি চারে ২০ রান করেন তিনি। দলীয় শতকের পর আউট হন মুশফিকুর রহিম। ৩১ বলে একটি চারে ২৫ রান করার পর ওয়েসলি মাধেভেরের শিকার হন মুশফিক।

মাধেভেরের দ্বিতীয় শিকার হয়ে মাঠ ছেড়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এই বাঁহাতি ৫৫ বলে ৫টি৬ চারে ৩৮ রান করেছেন। এরপর দলীয় দেড়শ রানে পৌঁছায় বাংলাদেশ।

পঞ্চম উইকেট জুটিতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন ৮২ বলে ৮১ রানের জুটি গড়েন। অবশেষে ৪১ বলে ৪১ করে বিদায় নেন আফিফ। সিকান্দার রাজার বলে আউট হওয়া এই বাঁহাতি ৪টি চার হাঁকিয়েছেন। রাজার দ্বিতীয় শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১২ বলে ১৫ করে এলবির শিকার হন তিনি।

শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে অপরাজিত থেকে যান মাহমুদউল্লাহ। তিনি ৮৪ বলে ৩টি চার ও সমান ছক্কায় ৮০ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন। শেষদিকে দ্রুত কিছু উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

জিম্বাবুয়ে বোলারদের মধ্যে ৩টি উইকেট পান সিকান্দার রাজা। ২টি উইকেট দখল করেন মাধেভেরে।টানা দুই সেঞ্চুরিয়ান সিকান্দার রাজার হাতেই ম্যাচ সেরার পুরস্কার ওঠে।

আগামী ১০ আগস্ট একই ভেন্যুতে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে।

সূত্র : আমাদের সময়