৭ কোপে মৃত্যু নিশ্চিত, হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় চারজন!

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

 

ঢাকা-বরিশাল রুটের যাত্রীবাহী ‘সুন্দরবন-১১’ লঞ্চের ছাদে মঙ্গলবার শামীম নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় এখনো কোনো কুল কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। তবে দুটি বিষয়কে ধারণা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সবগুলো ইউনিট এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে।

পুলিশ বলছে, প্রথমত ছিনতাইয়ের শিকার হতে পারেন নিহত শামীম। দ্বিতীয়ত প্রেমের সর্ম্পক নিয়েও এমন ঘটনা ঘটতে পারে। তবে যে কারনেই ঘটুক, হত্যাকাণ্ডে কমপক্ষে চারজন খুনি ছিলেন বলে প্রাথমিক আলামতে প্রমাণ মিলেছে। এরমধ্যে ছিনতাইয়ের কারণটিকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে দেখছে পুলিশ।

বরিশাল সদর নৌ-থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, হত্যাকাণ্ডে আঘাতের ধরণ দেখে মনে হয়েছে ধারালো চাকু দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার সময়ে সম্ভবত দুই-তিনজনে শামীমকে শক্ত করে ধরে রেখেছে। একজনে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেছে এবং হত্যাকারীরা শামীমের মৃত্যু নিশ্চিত করেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছে।

তিনি বলেন, নিহত যুবকের শরীরে ৭টি আঘাতের গভীর ক্ষত রয়েছে। পেটে, হাতের কনুঁইতে, বুকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করেছে খুনিরা। এ ঘটনায় লঞ্চস্টাফদেরও নজরদারীতে রাখা হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

এছাড়া, লঞ্চে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা দায়িত্ব অবহেলা করে কী করছিল সেগুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও সুন্দরবন লঞ্চ কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে কোন বক্তব্য প্রদান করেনি। দায়সারাভাবে লঞ্চের সুপারভাইজার সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ছাদে ওঠা যাত্রীদের নিষেধ। ছাদও আটকানো ছিল। কিন্তু নিহত ব্যক্তি কীভাবে ছাদে গেল তা জানা নেই।

তবে একাধিক যাত্রী জানিয়েছেন, সুন্দরবন লঞ্চের ছাদের দরজা প্রায় সবসময়েই খোলা থাকে। গতকালও ছাদের স্টাফ কেবিনগুলো ভাড়া দিয়েছে লঞ্চ স্টাফরা।

নৌ-পুলিশ জানিয়েছে, নিহত শামীম ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার কুশঙ্গল ইউনিয়নের কুকিলা নামক গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতা আব্দুল খালেক হাওলাদার ওই উপজেলার কলানিধি গ্রামের বাসিন্দা হলেও কুপিলা গ্রামে ছোট মামা নয়নের বাড়িতে থাকতেন শামীম। শামীমের জন্মের পর তার মাকে তালাক দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করেছিল আব্দুল খালেক। আর কয়েক বছর আগে শামীমের মা বিয়ে করে চলে যান দ্বিতীয় শ্বশুর বাড়ি। ফলে ছোট মামার ঘরে থেকেই বড় হন শামীম।

সদ্য প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষায় পাস করার পর শামীম ঢাকায় পাড়ি জমান। মাস দুয়েক আগে নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লায় একটি বেল্ট তৈরীর কারখানায় কাজ নেন তিনি। সোমবার (১৬ নভেম্বর) তিনদিনের ছুটি নিয়ে মায়ের সাথে দেখা করার জন্য সুন্দরবন-১১ লঞ্চে করে বাড়ি ফিরছিলেন। কিন্তু মায়ের কাছে আর ফিরতে পারেনি শামীম, ঘাতকের অস্ত্রের আঘাতে পরপারে যেতে হলো তাকে।

বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক ও বরিশাল নৌ-বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, আনসার নিয়োগে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হয় এমন অজুহাত দেখিয়ে অনেকেই নিয়োগ দেন না। তবে আমরা চেষ্টা করছি সকল লঞ্চ মালিকদের নিয়ে বসে লঞ্চে নিরাপত্তা বাহিনী বাধ্যতামূলক নিয়োগ নিশ্চিত করতে।

 

সূত্র: কালেরকন্ঠ